ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর পাখি

প্রকাশিত: ০৯:২৬, ২২ নভেম্বর ২০১৯

বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর পাখি

প্রতিটি পাখিই তার নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্যর জন্য সুন্দর হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু এর মাঝেও এমন কিছু পাখি রয়েছে, যাদের দৈহিক গঠন, জমকালো রং এবং অসাধারণ কিছু গুণের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরতম পাখি হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এমনই কিছু পাখি নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন। -মুনতাসির সিয়াম বার্ড অফ প্যারাডাইস পাপুয়া নিউগিনি, পূর্ব অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় দেখা মেলে এক অদ্ভুত সৌন্দর্যে আবৃত পাখি বার্ড অফ প্যারাডাইসের। পাখিটির পালকগুলো যেমন জমকালো রঙিন, তেমনই তার মোহনীয় দেহের গঠন। পাখিটি দেখতে এতটাই সুন্দর যে স্থানীয় লোকজন বলে থাকেন, স্বর্গের বাগান থেকে এই পাখিকে ঈশ্বর পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই তাই এর নাম হয়েছে স্বর্গের পাখি বা বার্ড অফ প্যারাডাইস। সৌন্দর্যের পাশাপাশি সুরেলা কণ্ঠের জন্যও এটি বেশ প্রশংসিত। পৃথিবী জুড়ে মোট ৪২ প্রজাতির বার্ড অফ প্যারাডাইস পাখির সন্ধান পাওয়া গেছে। সোনালি মথুরা পশ্চিম চীনের স্থানীয় পাখি সোনালি মথুরা। উজ্জ্বল রঙিন পাখনা ও নকশা খচিত দেহের জন্য বিখ্যাত এই পাখিটি। এর দেহের নিচের অংশ লাল রঙের হলেও, পিঠের অংশে সবুজ রঙেরও একটা ছাপ দেখা যায়। ঘাড়ের দিকটা কমলা ও লেজের দিকটা গাঢ় বাদামি রঙের মধ্যে ছোপ ছোপ কালো দাগ বিশিষ্ট হয় সোনালি মথুরার। সোনালি রঙের ঝুটি নেমে আসে কমলা রঙের পালকে আবৃত ঘাড় পর্যন্ত। সাধারণত স্ত্রী সোনালি মথুরার তুলনায় পুরুষ সোনালি মথুরা তুলনামূলকভাবে বেশি জমকালো হয়ে থাকে। ব্লু জে পূর্ব ও মধ্য উত্তর আমেরিকার বনাঞ্চলের পাখি ব্লু জে। দৈহিক ভাবে এরা নীল, সাদা ও কালো রঙের সমাহারে সাজানো, যা এদের সৌন্দর্যের মাত্রা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। সাধারণত বাচাল ধরনের স্বভাব হওয়ায় এবং শরীরে নীল রঙের প্রভাব বেশি থাকায় এদের নামকরণ হয়েছে ব্লু জে হিসেবে। শোরগোলের সময়ও এরা জে জে বলেই ডাকাডাকি করে। মোহনীয় চেহারা ছাড়াও এই পাখিটির নিজের বুদ্ধিমত্তার জন্যও বিশেষ সুনাম রয়েছে। অন্য পাখিদের ডাক অনুকরণের এক অনন্য ক্ষমতা এদের মাঝে লক্ষ্য করা যায়। স্কারলেট ম্যাকাও মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার চিরস্থায়ী আদ্র বনাঞ্চলের বাসিন্দা স্কারলেট ম্যাকাও। এরা ম্যাকাও প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে বৃহত্তম ও সুন্দরতম সদস্য হিসেবে স্বীকৃত। উজ্জ্বল লাল, নীল ও হলুদ রঙের সমাহারে স্কারলেট ম্যাকাওয়ের মোহনীয় রূপে সকলেই মোহিত হতে বাধ্য। পাশাপাশি এর উপরের দিকের হলুদ ডানার শেষাংশে সবুজ রঙেরও বেশ সুন্দর একটা প্রলেপ রয়েছে। শক্তিশালী বাঁকা ঠোঁট, দীর্ঘতম সময় উড়তে পারার বৈশিষ্ট্যও উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও স্কারলেট ম্যাকাওয়ের আয়ুষ্কাল প্রায় ৪০-৪৫ বছরের মতো হওয়ায়, এরা দীর্ঘ আয়ুর পাখি হিসেবেও বিবেচিত হয়। ভিক্টোরিয়া ক্রাউনড কবুতর মূলত রাজকীয় সাজসজ্জায় আবৃত থাকার কারণে, ইংল্যান্ডের রানীর নামের সঙ্গে একীভূত করে কবুতর শ্রেণীর এই পাখিটির নাম দেয়া হয়েছে ভিক্টোরিয়া ক্রাউনড কবুতর। সারা শরীরেই যেন এর নীল রঙের পরশ বুলানো রয়েছে। টকটকে লাল রঙের দুটি চোখ ছাড়াও, ঘাড়ের নিচের পালকগুলোতে কিছুটা লাল ও স্তনের দিকটায় গাঢ় তামাটে রং হয় এদের। তবে সৌন্দর্যের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করে এরা এদের ছড়িয়ে থাকা ফিতার মতো নীল ঝুটির মাধ্যমে। যা দেখতে অনেকটা মুকুটের রূপ ধারণ করে থাকে। বোহেমিয়ান ওয়াক্সউইং ইউরেশিয়া ও উত্তর আমেরিকার উত্তরাঞ্চলের বনগুলোতে মূলত দেখতে পাওয়া যায় ছন্নছাড়া স্বভাবের এই পাখির। যার জন্যই এর নাম হয়েছে বোহেমিয়ান ওয়াক্সউইং। যদিও দৈহিক ও মনগত দিক থেকে অত্যন্ত কোমল ধরনের হয়ে থাকে এরা। সামগ্রিকভাবে এরা ধূসর বাদামি রঙের হলেও, এদের ডানার শেষ দিকে কিছুটা সাদা ও হলুদের আভা মেশানো থাকে। কিছু পালকে লাল মোমের ছাপ থাকায়, এদেরকে মোম পাখিও বলা হয়। সৌন্দর্যের পাশাপাশি বোহেমিয়ান ওয়াক্সউইং মিষ্টি কণ্ঠের জন্য গায়ক পাখি হিসেবেও সমাদৃত। তথ্যসূত্র : বার্ড সায়েন্স
×