ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জুনিয়রকে মারধর, ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞায় শাহাদাত

প্রকাশিত: ১১:০০, ২০ নভেম্বর ২০১৯

জুনিয়রকে মারধর, ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞায় শাহাদাত

মোঃ মামুন রশীদ ॥ খেলা চলাকালীন সময়ে নিজ দলের ক্রিকেটার মোহাম্মাদ আরাফাত সানি জুনিয়রকে মাঠে মারধর করার অপরাধে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক পেসার শাহাদাত হোসেন রাজিবকে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এর মধ্যে ২ বছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, অর্থাৎ একই অপরাধে না জড়ালে ৩ বছর পরই মাঠে ফিরতে পারবেন তিনি। ৩ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে তাকে। তবে বিসিবির টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান মিনহাজুল আবেদিন নান্নু জানিয়েছেন, ২৬ নবেম্বরের মধ্যে শাস্তির বিরুদ্ধে আপীল করতে পারবেন শাহাদাত। ৩৩ বছর বয়সী এ পেসার জানিয়েছেন তিনি আপীল করবেন। এই কর্মকা-ের সূত্রপাত আরেক পেসার মোহাম্মদ শহীদের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। তাই তার ম্যাচ ফি’র ৫০ ভাগ কর্তন করা হয়েছে, তিনিও বড় শাস্তি পেতে পারেন বলে জানা গেছে। ঘটনাটি জাতীয় ক্রিকেট লীগের (এনসিএল) খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে খুলনা বিভাগ ও ঢাকা বিভাগের মধ্যে চলা ম্যাচের। ২০১৫ সালে গৃহকর্মীকে নির্যাতন করার কারণে ২ মাসের জন্য কারাভোগ করেছিলেন পেসার শাহাদাত। সে সময়ও তাকে বিসিবি ক্রিকেট থেকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং বিসিবির কাছে ধরনা দিয়ে ক্রিকেটে ফিরে আসেন তিনি। এরপর থেকে খুব বেশি নিয়মিত হতে পারেননি ঘরোয়া ক্রিকেটে। এর মধ্যেই সোমবার চলমান জাতীয় ক্রিকেট লীগের (এনসিএল) ষষ্ঠ রাউন্ডে খুলনা বিভাগ ও ঢাকা বিভাগের ম্যাচে এই কা- ঘটালেন তিনি। ঢাকার হয়ে খেলছিলেন শাহাদাত, তারই সতীর্থ আরাফাতকে বলের ঔজ্জ্বল্য ফেরাতে ঘষে দিতে বলেন তিনি। কিন্তু আরাফাত এতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে ধাক্কা দিয়ে মারধর শুরু করেন শাহাদাত। এরপর বাকিরা তাকে নিবৃত করেন। কিন্তু বিষয়টি ম্যাচ রেফারি আখতার আহমেদ দেখার পরই তা রিপোর্ট করেন বিসিবির টেকনিক্যাল কমিটির কাছে। মঙ্গলবার টেকনিক্যাল কমিটি আলোচনা করে তার বিরুদ্ধে আইসিসির লেভেল ৪ আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ আনে। এছাড়া অতীত ঘটনার বিষয়টিও এখানে এসেছে। নান্নু তাই বলেন, ‘আমরা রিপোর্ট পেয়ে দেখেছি শাহাদাত লেভেল ৪ বিধি ভঙ্গ করেছে। সবাই তার এই শাস্তির জন্য একমত হয়েছে। অতীতেও তার বাজে কৃতকর্ম ছিল বলেই শাস্তি এমন হয়েছে। তবে সে আপীল করতে পারবে ২৬ নবেম্বরের মধ্যে।’ শাহাদাতের আরেক সতীর্থ শহীদই মূলত এই ঘটনার শুরু করেছিলেন আরাফাতের সঙ্গে। তিনিই প্রথম ধাক্কা দিয়েছিলেন আরাফাতকে এবং তা আম্পায়াররা ম্যাচ রেফারিকে জানিয়েছিলেন। টেকনিক্যাল কমিটির কাছে সেই রিপোর্টও আসে এবং লেভেল ২ ভঙ্গের অপরাধে শহীদের ম্যাচ ফি ৫০ ভাগ কাটা হয়েছে। ইনজুরির কারণে এবং ফিটনেস না থাকায় পুরো এনসিএলে এই শেষ রাউন্ডেই খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন শহীদ। তিনিও অতীতে নিজের স্ত্রীকে নির্যাতনের জন্য অভিযুক্ত। বিসিবির কাছে তার স্ত্রী এসে অভিযোগ করেছিলেন। তাই সবমিলিয়ে তার বিরুদ্ধেও বড় শাস্তির জন্য অপেক্ষা করছে বিসিবি। শাহাদাত অবশ্য অপরাধ স্বীকার করে জানিয়েছেন তিনি আপীল করবেন শাস্তি কমাতে। তিনি বলেন, ‘আমি ভুল করেছি, সেটি বুঝতেও পেরেছি। সানিকে মাঠে ধাক্কা দেয়া ঠিক হয়নি, ওর সঙ্গে পরে মিটমাটও হয়ে গেছে। ভাবতেও পারিনি এত বড় শাস্তি পাব। আমি দারুণ হতাশ। আপীল অবশ্যই করব। আমার ব্যাপারটি বুঝিয়ে বললে আশাকরি শাস্তি কমবে। কারণ মাঠে আমার খারাপ কিছুর রেকর্ড নেই। ক্রিকেটের বাইরে হয়তো আছে। ক্রিকেট ছাড়া কিছুই পারি না এবং এটা খেলেই জীবন চালাতে হবে। আশাকরি ব্যাপারটা বোর্ড ভেবে দেখবে।’
×