ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বগুড়ার গ্রামে নবান্ন ও মাছের মেলা, নাইওর এসেছে মেয়ে-জামাই

প্রকাশিত: ০৯:২৭, ২০ নভেম্বর ২০১৯

বগুড়ার গ্রামে নবান্ন ও মাছের মেলা, নাইওর এসেছে মেয়ে-জামাই

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ বদলে যাওয়া বর্ষপঞ্জি ও সনাতন পঞ্জিকা মতে, দিনক্ষণের পার্থক্যে অগ্রহায়ণের প্রথম দিন ছিল যথাক্রমে শনিবার (বদলে যওয়া) ও সোমবার (সনাতন)। বগুড়ার শিবগঞ্জ ও নন্দীগ্রাম এবং জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার নবান্ন পিয়াসীরা মাছের মেলা বসিয়েছিল সনাতন পঞ্জিকা অনুযায়ী। এটা ওই এলাকার শতবর্ষের ধারাবাহিকতা। তারা নবান্ন উদযাপন করে সনাতন পঞ্জিকা ধরে। নবান্নের এই রেশ মঙ্গলবার কাটেনি। পহেলা অগ্রহায়ণের মাছের মেলা পরদিনও থেকে যায় বাড়তি হয়ে। তারপরও একেক স্থানে একেক দিন। যেমন শিবগঞ্জের উথুলির আগের দিনের মেলা পরদিন বসেছিল করতোয়া নদীর অপর প্রান্তে। নন্দীগ্রামে বসেছিল রনবাঘায়। তাই বলে নেমন্তন্নের (নিমন্ত্রণ) পালা মেলার আগে ও পরের ক’দিনে দিনা দশেক রয়েই যায়। লোকজনের কথা ‘আরে বাপু মেয়েজামাই নাইওর আচ্চে। বড় মাছের তরকারি, নবান্নের নয়া চালের ভাত, ফিরনি পায়েস, পিঠা, চিড়া-মুড়ির মোয়া মিষ্টি মিঠাই না খায়াই যাবি! মেলা না হয় দুই এক দিন থাকবি মেয়ে জামাই কি তাই থাকবি নাকি (মেয়ে জামাই নাইওর এসেছে। বড় মাছের তরকারি নতুন চালের ভাত ফিরনি পায়েস পিঠা চিড়া মুড়ির মোয়া মিষ্টি মিঠাই না খেয়ে কি যাবে। মেলা না হয় একদিন তাই বলে মেয়ে জামাই তাই থাকবে)। এই সময়টায় বগুড়ার শিবগঞ্জ মহাস্থানের দশ গাঁয়ে নবান্ন ও মেলার ধুম পড়েছে। সবচেয়ে বড় আকর্ষণ মাছের মেলা। আগের দিন যারা মাছ কিনতে পারেনি পরের দিন তারা কিছুটা কম দামে মাছ কিনতে পেরেছেন। উথুলির পাশের গ্রাম নারায়ণপুর, রথবাড়ি, ধোন্দাকোলা, দেবীপুর, গুজিয়া, পাইকপাড়া গ্রামের লোকজন বললেন- রুই, কাতল, চিতল, আইড়, বোয়াল, শোল, বাঘাইড়সহ নানা জাতের মাছ এসেছিল। এই মাছগুলো বগুড়ার যমুনা নদী ও বিভিন্ন বিল, নাটোরের সিংড়া থেকে এসেছিল। নদীর মাছের স্বাদ বেশি হওয়ায় মাছ কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে লোকজন। শোরগোলে মাছের দামের উচ্চস্বর চাপা পড়েনি। মাছ বিক্রেতা জাকিরুল ও মাজহারুল বললেন, আগের দিন অনেক মাছ বিক্রি হয়েছে। কাতল বিক্রি হয়েছে এক হাজার টাকা প্রতি কেজি। ৩০ কেজি ওজনের এক বাঘাইড়ের দাম ৫০ হাজার টাকা হাঁকা হয়। অবশ্য পরে তা কেটে কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। রথবাড়ি গ্রামের আশরাফ আলী বললেন, বাড়িতে জামাই এসেছে বড় মাছ তো কিনতেই হবে। নাতি নাতনিরা মাছ দেখেই আনন্দ পায়। নবান্ন ও মাছ উৎসবের রেশ থাকবে আরও কয়েকদিন।
×