ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাফুফের বহুল আলোচিত এজিএম অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত: ১২:১৮, ১৭ নভেম্বর ২০১৯

বাফুফের বহুল আলোচিত এজিএম অনুষ্ঠিত

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অবশেষে শনিবার গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে অবস্থিত এক রিসোর্ট সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছে বহুর আলোচিত বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)। এজিএমে ১৩৮ কাউন্সিলরের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ১৩৫ জন। শোক প্রস্তাবসহ পাস হয় সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন। চূড়ান্ত করা হয় আগামী অর্থবছরের অডিটর নিয়োগও। ২০১৬-২০১৮ এই তিন বছরের বাজেট পাস হয়েছে এজিএমে। উত্থাপন করা হয়েছে আগামী অর্থবছরের ৪১ কোটি টাকার বাজেট। গত তিন বছরের বাজেটে ১৭ কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন বাফুফের দুই সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মহি ও বাদল রায়। এর ব্যাখ্যা এজিএমে দেয়া হয়েছে। ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘কংগ্রেস ডেলিগেট হিসেবে যারা এসেছিলেন তাদের যে বক্তব্য গঠনমূলক এবং আমাদের যে বাস্তবতা তা শুনেই তারা আমাদের বাজেটের অনুমোদন দিয়েছেন। আমরা মিজান এ্যান্ড কোম্পানিকে দিয়েছি ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা আগামী যে এজিএম হবে এই অডিট করার জন্য।’ নিজেদের চাওয়া-পাওয়া নিয়ে কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন তৃণমূলের সংগঠকরা। তাদের অনেকেই অভিযোগ করেছেনÑ নিজেরাই অডিট রিপোর্ট তৈরি করে, নিজেরাই পাস করে- এই হলো বাফুফের কাজ। অডিট রিপোর্ট নিয়ে কাউন্সিলরদের অভিযোগকে আমলেই নেন না বাফুফের কর্তারা। নামকাওয়াস্তে এজিএম ডাকা হয় অডিট পাসের জন্য। শনিবারের এজিএম হচ্ছে তেমনই এক এজিএম। যা স্রেফ অডিট রিপোর্ট পাস করিয়ে নেয়ার জন্য অনুষ্ঠিত হয়েছে আর কি। এক সঙ্গে তিন বছরের অডিট, তাও আবার করা হয়েছে বিভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে। আর এতেই সন্দিহান হয়ে পড়েন কাউন্সিলররা। ২০১৬ সালের বাজেট রিপোর্ট অডিট করা হয়েছিল এমআর খান কোম্পানির মাধ্যমে। পরের বছর আতিক এ্যান্ড কোং, আর ২০১৮ সালের অডিট রিপোর্ট তৈরি করা হয় মিজান ইসলাম এ্যান্ড কোং-এর মাধ্যমে। এখানেই বাফুফের বড় কারসাজি বলে মনে করেন কাউন্সিলররা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কাউন্সিলর বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট খরচের খাত না থাকায় এক কোম্পানিকে দিয়ে অডিট করায়নি বাফুফে। এতে তাদের দুর্নীতি প্রকাশ হয়ে পড়ত। তাই তিন বছরের অডিট করান হয়েছে তিন আলাদা কোম্পানিকে দিয়ে। তাছাড়া সাদা কাগজে বিল ভাউচার করা হয়েছে। যা কোন অডিট কোম্পানিই মানবে না।’ এদিকে ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের খরচ দেখানো হয়েছে ৬ কোটি ৬১ লাখ ১৫ হাজার টকা। অথচ আয়ের কোন খাতই দেখানো হয়নি। চ্যানেল নাইনের সঙ্গে চুক্তি থাকলেও তা বাজেটে উল্লেখ নেই। এর সমালোচনা করেন উপস্থিত কাউন্সিলররা। বাফুফের সহ-সভাপতি ও সাবেক তারকা ফুটবলার বাদল রায় সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে আগেই সোচ্চার হয়েছিলেন নানা অভিযোগ নিয়ে। তাই মঞ্চে ডাকলেও মাইকে কথা বলতে দেয়া হয়নি তাকে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাদল। সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘ভবিষ্যতে অডিটের সামালোচনার বিষয়গুলো আমরা গুরুত্ব দেব। এছাড়া প্রতি বছরই এজিএম করার চেষ্টা করব।’ এক সময় ফুটবলের টাকা দিয়ে চলতো অন্য খেলা। এখন সরকারী টাকার ওপর নির্ভর করতে হয় বাফুফেকে। তাছাড়া সরকারের দেয়া বরাদ্দের টাকা থেকে অগ্রিম তারিখে চেকের মাধ্যমে জেলার কর্মকর্তাদের অর্থ দিয়ে সন্তুষ্ট করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
×