ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

মেসির গোলে ব্রাজিলকে হারাল আর্জেন্টিনা

প্রকাশিত: ১২:১৭, ১৭ নভেম্বর ২০১৯

মেসির গোলে ব্রাজিলকে হারাল আর্জেন্টিনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার লড়াই মানেই বাড়তি উত্তেজনা। দুই দলের সমর্থকদের মধ্যেও দেখা যায় অন্যরকম রোমাঞ্চ। শুক্রবার সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত ফুটবলের এই দুই পরাশক্তির লড়াইয়েও দেখা গেল তা। তবে শেষের হাসিটা আর্জেন্টিনাই হেসেছে। আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে লিওনেল মেসির পেনাল্টির সৌজন্যে আর্জেন্টিনা এদিন ১-০ গোলে পরাজিত করেছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে। অথচ দীর্ঘ তিন মাস জাতীয় দল থেকে নির্বাসিত ছিলেন বার্সিলোনার আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে জাতীয় দলে ফিরেই নিজেকে মেলে ধরলেন দারুণভাবে। তবে দুর্ভাগ্য ব্রাজিলের। সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি ব্রাজিল। প্রথমার্ধের ১০ মিনিটেই জেসুস পেনাল্টি মিস করে বসে। তার কিছুক্ষণ পরই পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। ব্রাজিলের অভিজ্ঞ গোলরক্ষক এ্যালিসন বেকার অবশ্য ঠেকিয়ে দেন মেসির শট। কিন্তু পরবর্তীতে মেসির ছোঁয়াতে আবারও বল জালে জড়ায়। ১৩ মিনিটেই প্রথম এগিয়ে যায় লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। প্রথমার্ধের পরের সময়টাতে আর কোন গোলের দেখা পায়নি কেউ। যে কারণে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় সেলেসাওরা। দ্বিতীয়ার্ধেও নিজেদের সেরাটা দিয়ে খেলতে থাকে আর্জেন্টিনা। কিন্তু তাদের সামনে দেয়াল হয়ে দাঁড়ান লিভারপুলের অভিজ্ঞ গোলরক্ষক এ্যালিসন। মূলত ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষকের কল্যাণেই বেশ কয়েকবার নিশ্চিত গোল থেকে রক্ষা পায় সেলেসাওরা। ম্যাচের ৬৬ মিনিটে ডি বক্সের সামান্য বাইরে থেকে ফ্রি কিক নেন মেসি। রক্ষণ দেয়ালের ওপর দিয়ে হাওয়ায় ভাসানো তার সেই ট্রেডমার্ক কিক বাঁক নিয়ে গোলবার ঘেঁষে জালে জড়ানোর আগ মুহূর্তে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন এ্যালিসন। ৭৬ মিনিটে হার্মেনের এক দুর্দান্ত শটও রুখে দেন তিনি। ৮৫ মিনিটে ভাল সুযোগ পান মার্টিনেজ। কিন্তু দারুণ সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি এই আর্জেন্টাইন। ম্যাচের শেষ পর্যন্ত গোল ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টা করেছে মেসি-গঞ্জালেসরা। অন্যদিকে সমতায় ফেরার সবরকমের চেষ্টা করেছে সিলভা-ফিরমিনোরাও। কিন্তু আক্রমণের ধার ততটা শক্তিশালী ছিল না তিতের শিষ্যদের। যে কারণে পরাজয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হলো ব্রাজিলকে। বার্সিলোনার হয়েও দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন লিওনেল মেসি। সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে স্প্যানিশ লা লিগার শেষ ম্যাচেও হ্যাটট্রিক করেছিলেন তিনি। ঐ ম্যাচে দুই গোল এসেছিল তার ফ্রি-কিক থেকে। শুক্রবার দ্বিতীয়ার্ধে সেট পিস থেকে দুইবার মেসি ঝুঁকিতে পড়েছিলেন লিভারপুলের গোলরক্ষক এলিসন। গত মাসে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে গ্যালাতাসারের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে হ্যাটট্রিক করেছিলেন রড্রিগো। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে এদিন অভিষেক ঘটে ১৮ বছর বয়সী এই তরুণের। ৭১ মিনিটে উইলিয়ানের পরিবর্তে ব্রাজিলের জার্সি গায়ে মাঠে নামেন তিনি। গত বছরের অক্টোবরে জেদ্দায় ব্রাজিল ১-০ গোলে হারিয়েছিল আর্জেন্টিনাকে। এক বছর পার হতে না হতে আবারও সৌদি আরবে দক্ষিণ আমেরিকান দুই জায়ান্ট একে অপরের মুখোমুখি হলো। তবে এবার সেই হারের প্রতিশোধটা দারুণভাবে নিয়ে নিল আর্জেন্টিনা। তবে এরপর কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালেও ঘরের মাঠে আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলে পরাজিত করেছিল ব্রাজিল। সেই কোপা আমেরিকায় তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে চিলির বিপক্ষে লালকার্ড দেখেছিলেন লিওনেল মেসি। এরপর দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা কনমেবলকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি। তারই শাস্তি হিসেবে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞায় পড়েন এলএম টেন। তবে নিষেধাজ্ঞা থেকে ফেরাটাকে স্মরণীয় করে রাখলেন পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে গোল করে। ব্রাজিলকে হারানোর ফলে একটা ট্রফিও পেয়েছেন মেসি-মার্টিনেজরা। ম্যাচ শেষে তাই দারুণ খুশি লিওনেল মেসি। জাতীয় দলের জার্সিতে কোন ট্রফি জয় বলে কথা। নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এই জয়টা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তাছাড়া ব্রাজিলকে পরাজিত করা সবসময়ই আনন্দের। তাদের বিপক্ষে জয়ের রেশটা অনেকদিন থাকে।’ আগামী ১৯ নবেম্বর পরবর্তী প্রীতি ম্যাচে আবুধাবিতে আবারও মাঠে নামবে ব্রাজিল। সেই ম্যাচে সেলেসাওদের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়া। মার্চে ২০২২ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আমেরিকান বাছাইপর্বের আগে এটাই ব্রাজিলের শেষ প্রীতি ম্যাচ। তবে আজই মাঠে নামার কথা আর্জেন্টিনার। তেল আবিবে তাদের প্রতিপক্ষ ল্যাতিন আমেরিকার আরেক জায়ান্ট উরুগুয়ে। এই ম্যাচকে ঘিরে অবশ্য শঙ্কা রয়েছে।
×