ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ইরানে বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ০৯:২৯, ১৭ নভেম্বর ২০১৯

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ইরানে বিক্ষোভ

তেহরানের একটি পেট্রোল পাম্পে শুক্রবার গাড়িতে জ্বালানি ভর্তি করার পর থেকে দেশটির সরকার হঠাৎ করে জ্বালানির ওপরে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণে আংশিকভাবে দেশটির বাজেটের ঘাটতি পূরণ করার লক্ষ্যে জরুরীভিত্তিতে তেলের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। জ্বানির দাম বাড়ার পর থেকেই ইরানজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। আলজাজিরা। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে নতুন জ্বালানি নীতির তেল রফতানি দ্রুত হ্রাস করেছে, যার ফলে আরও খারাপ অর্থনৈতিক সঙ্কট পরিচালনা করার জন্য মুখোমুখি হচ্ছে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান। প্রেসিডেন্ট রুহানি একদিন আগে এক বক্তব্যে বলেছিলেন যে ইরান তার বার্ষিক ৪৫ বিলিয়ন ডলারের বাজেটের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ঘাটতির মুখোমুখি হয়েছে। শুক্রবার রাতে শিরাজ, মাশহাদ, আহওয়াজ এবং বান্দার আব্বাসসহ বড় বড় শহরগুলোর পাশাপাশি ছোট ছোট শ্রমজীবী শহরেও বিশাল জনসমাবেশ ঘটেছিল। কিছু জায়গায় বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যায় দাঙ্গা পুলিশ আধিকারিকরা একটি সংঘর্ষে টিয়ার শেল গ্যাস নিক্ষেপ করে এবং অন্যদিকে যানবাহনের উইন্ডশিল্ডগুলো ভেঙ্গে দেয়। লেবানন ও ইরাকে তাদের সহযোগীদের মতো শুক্রবার ইরানে বিক্ষোভগুলো অর্থনৈতিক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার ফলে সরকারবিরোধী সেøাগানও শোনা গিয়েছিল। কট্টরপন্থী ও সংস্কারবাদী উভয় রাজনৈতিক দল ইরানজুড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন যে, দাম বৃদ্ধির ফলে কেবল লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং আর্থিক দুর্নীতির আরও রাস্তার সৃষ্টি করবে। ইরান তার তিনটি প্রধান শাখা সরকার, সংসদ ও বিচার বিভাগের প্রধানদের নিয়ে জ্বানি তেলের দাম বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়ার জন্য এক বিবৃতিতে এই নীতিমালা ঘোষণা করেছে। ইরান সরকারের ঘনিষ্ঠ দুই জ্বানি বিশ্লেষক বলেছেন যে, রুহানি এই নীতিটির বিরোধিতা করেছিলেন। কারণ, এই দাম বৃদ্ধির কারণে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে তার দলের বড় ক্ষতি হতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন রণতরী ও ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন নিয়ে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনার ফলে তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগে মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম মিডলইস্ট মনিটরের খবরে বলা হয়েছিল, অপরিশোধিত ব্রেন্ট তেলের প্রতি ব্যারেলের দাম ১ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৭১.৭৫ ডলার। আর মার্কিন অপরিশোধিত তেলের দাম ২ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৬২.৪৮ ডলার। তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে ইরান-মার্কিন উত্তেজনার পাশাপাশি বিশ্বের সবচেয়ে বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী কোম্পানি সৌদি আরামকোর ট্যাঙ্কার ও তেলে উত্তোলন কেন্দ্রে হুতি বিদ্রোহীদের হামলার ভূমিকা রয়েছে। সৌদি স্থাপনায় হামলার আগে থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। মধ্যপ্রাচ্যে ও ভূমধ্যসাগরে যুক্তরাষ্ট্র জঙ্গীবিমানবাহী রণতরী ও অত্যাধুনিক প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের পর থেকে এই উত্তেজনার শুরু। এর আগে আমিরাতের উপকূলে চারটি ট্যাঙ্কারে বিস্ফোরণের পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়।
×