ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফুটবল ক্লাব সংগঠন থেকে বাদ ‘ক্যাসিনো’ সাঈদ

প্রকাশিত: ১২:৪৩, ১৫ নভেম্বর ২০১৯

ফুটবল ক্লাব সংগঠন থেকে বাদ ‘ক্যাসিনো’ সাঈদ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এ বছরের জানুয়ারিতে দেশের ৫৭ ক্লাব মহাসমারোহে ঢাকায় পুনরায় গঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাবস এ্যাসোসিয়েশন (বিএফসিএ)। সভাপতি হয়েছিলেন বিশিষ্ট ফুটবল সংগঠক ও সাইফ পাওয়ারটেকের কর্ণধার তরফদার মোঃ রুহুল আমিন। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ব্যর্থতায় ও দেশের মৃতপ্রায় ফুটবল বাঁচিয়ে তোলাই হচ্ছে সংগঠনটির মূল উদ্দেশ্য। এ জন্য তারা বেশকিছু পদক্ষেপও গ্রহণ করে। জেলা ফুটবল কার্যক্রম জোরদার করা, দেশব্যাপী বিভিন্ন বয়সভিত্তিক ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করে ট্যালেন্ট হান্টের মাধ্যমে ফুটবলার সংগ্রহ করা ইত্যাদি। এদিকে বাফুফের নতুন কমিটি গঠনের তিন বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়নি তাদের বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএম। সেই সঙ্গে ১৭ কোটি টাকার অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ এনে বর্তমান কমিটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন সহসভাপতি বাদল রায় ও মহিউদ্দিন মহি। বাফুফের প্রতি তাদের দু’জনের এই মনোভাবকে কাজে লাগাতে সচেষ্ট হয়েছে বিএফসিএ। এই পরিস্থিতিতে বাদল-মহিকে নিজেদের তাঁবুতে ভিড়িয়েও ফেলেছে তারা। এর মাধ্যমে তাদের কমিটির পুনর্বিন্যাসও করেছে। তাছাড়া আগামী শনিবার গাজীপুরে বাফুফের বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বিএফসিএ’র প্রতিনিধিরা তাদের মতামত-বক্তব্য কিভাবে দেবেন তার একটি মহড়ারও দরকার। সবকিছু মিলিয়েই বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি পাঁচতারা হোটেলে বিএফসিএ এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে তারা কমিটিতে নতুন ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তির ঘোষণা দেয়। নতুন সিনিয়র সহ-সভাপতি হচ্ছেন সাবেক জাতীয় ফুটবলার বাদল রায় (বর্তমানে বাফুফের সহ-সভাপতি)। নতুন সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মহি (বর্তমানে বাফুফের সহ-সভাপতি)। একেএম মমিনুল হক সাঈদের পরিবর্তে নতুন সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশ ফুটবল ক্লাবের উর্ধতন কর্মকর্তা শেখ মোঃ মারুফ হাসান। বিএফসিএ’র সভাপতি তরফদার মোঃ রুহুল আমিন তার বক্তব্যে বলেন, ‘গত দুই বছরে আমরা ব্যাপকভাবে প্রতিটি জেলায় লীগ আয়োজনে সহায়তা করেছি। অথচ গত ১০ বছরে পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখা যাবে একমাত্র ২০১৮ সালে সর্বোচ্চ ৪৮ জেলায় লীগ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে ৪, ৫ বা ৬ জেলায় লীগ হয়েছে। ২০১৮ সালের পর এবারই দেখা গেছে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগে ফুটবলার যোগান দেয়ার হার অনেক বেড়েছে, এটা সম্ভব হয়েছে জেলা ফুটবলের বদৌলতে। যেটা আগে ছিল অনেক কম। ফুটবলটা হতে হবে তৃণমূল পর্যায় থেকে। তারপর উপজেলা, জেলা, বিভাগ এবং সবশেষে প্রিমিয়ার লীগ পর্যায়ে। এটাই হচ্ছে প্রক্রিয়া। অথচ বাফুফে বহু বছর ধরেই এই প্রক্রিয়াটা বন্ধ করে রেখেছিল। ফলে পাইপলাইনে প্লেয়ার তৈরি হচ্ছিল না। এরই প্রভাব পড়েছিল জাতীয় দলে। বাংলাদেশ ক্লাব ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন এই প্রক্রিয়াটাই আবার চালু করেছে। করার চেষ্টা করেছে। ১২ বছর আগে যখন বর্তমান বাফুফে সভাপতি দায়িত্ব নেন তখন বিশ্ব ফুটবলে বাংলাদেশের র‌্যাঙ্কিং ছিল ১৪৩। আর সেটা এখন দাঁড়িয়েছে ১৮৪তে। জাতীয় ফুটবল দল ও বয়সভিত্তিক দলগুলো এখন একটু ভাল খেলছে ঠিকই। কিন্তু বাস্তবতা হলোÑ এদের খেলায় কোন ধারাবাহিকতা নেই। এই হঠাৎই দু’একটা ম্যাচে জিতে যাচ্ছে, পরক্ষণেই আবার হেরে যাচ্ছে। এইতো এএফসি অনুর্ধ-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইয়ে ভুটানের কাছে বাংলাদেশ হেরেছে ২-১ গোলে, যারা ছিল আমাদের চেয়ে দুর্বল দল। অথচ এক ম্যাচ আগেই শক্তিশালী জর্দানকে তারা ঠিকই রুখে দিয়েছিল ১-১ গোলে ড্র করে। এই হলো ধারাবাহিকতার নমুনা। এর মূল কারণ হচ্ছে পাইপলাইন তৈরির প্রক্রিয়াটা যথাযথ নয়। ভিত্তি মজবুত না করে কোন সুউচ্চ দালান তৈরি করা যায় ঠিকই। কিন্তু কোন এক সময় সেটা ভেঙ্গে পড়বেই। অথচ ভিত্তিটা মজবুত হলে কিন্তু এমনটা হবে না। বাংলাদেশের ফুটবলের ভিত্তিটা মজবুত করার কাজটাই করে যাচ্ছি আমরা।
×