ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ইমপিচমেন্ট তদন্তে প্রকাশ্য শুনানি

ট্রাম্পের মসিলিপ্ত ইমেজ

প্রকাশিত: ১২:২৫, ১৫ নভেম্বর ২০১৯

ট্রাম্পের মসিলিপ্ত ইমেজ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের শুনানির প্রথমদিনে যথেষ্ট নেতিবাচক তথ্য উঠে এসেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কথাগুলো তার জন্য মানহানিকর। বলা হয়েছে তিনি নিজের স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ বিকিয়ে দিতে পারেন। বিবিসি ও সিএনএন। ঐতিহাসিক শুনানি অধিবেশনের উদ্বোধন করেন ডেমোক্র্যাট দলের এ্যাডাম শিফ। তিনি প্রতিনিধি পরিষদের গোয়েন্দা কমিটির চেয়ারম্যান। উদ্বোধনী বক্তব্যে শিফ বলেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্রেসিডেন্ট পুনর্নির্বাচিত হওয়ার ক্যাম্পেনে অংশ নিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের ওপর জোর খাটিয়েছেন। শিফ প্রশ্ন রাখেন, এটি যদি ইমপিচ হওয়ার মতো কাজ না হয় তবে আর কিসের জন্য একজন প্রেসিডেন্টকে ইমপিচ করতে হবে। তার মতে, ট্রাম্পের এ কাজ রিপাবলিকান পার্টির মূল্যবোধকেও সঙ্কটের মুখে ঠেলে দিতে পারে। বুধবার সকাল ১১টায় ক্যাপিটল হিলে প্রতিনিধি পরিষদের গোয়েন্দা কমিটির সামনে এ শুনানি শুরু হয়। কয়েক সপ্তাহের রুদ্ধদ্বার প্রক্রিয়া চলার পর প্রক্রিয়াটি শেষ পর্যন্ত প্রকাশ্যে আসে। ট্রাম্প আগামী বছর অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট পার্টির জো বাইডেন ও তার ছেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত করতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনোস্কিকে চাপ দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগ ভিত্তি করে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট তদন্ত শুরু করেছে ডেমোক্র্যাটরা। ট্রাম্প অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বুধবারের শুনানিতে প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা তিন মার্কিন কূটনীতিককে ডেকে পাঠান। তাদের তিনজনই এর আগে রুদ্ধদ্বার অধিবেশনে সাক্ষ্য দিতে এসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনকলের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। শুনানি কক্ষ ছিল সাংবাদিক, কংগ্রেস সদস্য ও অন্য লোকজনে পরিপূর্ণ। কোটি কোটি মানুষ টেলিভিশনে ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেন । শিফ বলেন, ‘ ইমপিচমেন্ট তদন্তে যে প্রশ্ন উঠেছে তা হচ্ছে, ট্রাম্প মিত্রদেশটির দুর্বলতাকে কাজে লাগাতে এবং আমাদের নির্বাচনে ইউক্রেনকে হস্তক্ষেপ করাতে চেয়েছিলেন কিনা।’ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কেবল প্রেসিডেন্সির ভবিষ্যত নয় বরং প্রেসিডেন্টের ভবিষ্যতেও প্রভাব ফেলবে বলে শিফ উল্লেখ করেন। শুনানিতে উপস্থিত শীর্ষ কূটনীতিক বিল টেলর (কিয়েভে মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য এ্যাফেয়ার্স) শুরুতেই বলেন, ট্রাম্পের সঙ্গে সাবেক রাজনৈতিক দাতা গর্ডন সন্ডল্যান্ডের ২৬ জুলাইয়ের একটি কথোপকথন সম্পর্কে তিনি সম্প্রতি জেনেছেন। যেটি ঘটেছিল ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের মধ্যে ফোনকলের পরদিন। টেলর বলেন, কথোপকথনটি তার স্টাফদেরই একজন সদস্য শুনে ফেলেছিলেন। সেই কথোপকথনে ট্রাম্প ওই তদন্তের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছিলেন এবং এটিকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন বলে জানান টেলর। আরেকজন কূটনীতিক জর্জ কেন্ট বলেন, ট্রাম্পের আইনজীবী রুডি জুলিয়ানি ইউক্রেনে মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করেও কাজ করতে বলেছিলেন। পররাষ্ট্র দফতরে ইউক্রেন নীতির বিষয়টি দেখভাল করেন কেন্ট। তিনি বলেন, জুলিয়ানি এবং অন্যদেরকে ইউক্রেনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে দেখে তিনি উদ্বিগ্ন হয়েছেন। বিরোধী পক্ষের বিরুদ্ধে অন্য দেশকে এভাবে কোন বিষয়ে তদন্ত করতে বলাটাই উচিত নয়, কারণ এতে আইনের শাসন ক্ষুণœ হয় বলে মত প্রকাশ করেন এ কূটনীতিক। প্রকাশ্যে এমন শুনানি এরপর হবে শুক্রবারেও। মার্কিনীরা এই প্রথম সরাসরি শুনানিতে ইউক্রেন বিষয়ক ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট লোকজনের কথা শুনছে। এর মধ্য দিয়ে পরবর্তীতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের জন্য ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনার পথ সুগম হতে পারে। তখন রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত সিনেটে ট্রাম্পকে অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত বা পদ থেকে অপসারণ করা হবে ডশ না- তা নিয়ে বিচারের ক্ষেত্র তৈরি হবে।
×