ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চাপের মুখে বলিভিয়া ছাড়লেন মোরালেস

নয়া প্রেসিডেন্ট আনেজ

প্রকাশিত: ০৯:০৯, ১৪ নভেম্বর ২০১৯

নয়া প্রেসিডেন্ট আনেজ

বলিভিয়া ইভো মোরালেসের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব ছাড়ার পর নিজেকে অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা দিলেন সিনেটের ডেপুটি প্রধান জিনাইন আনেজ। মোরালেসের সমর্থিত এমপিরা সিনেটের ওই সেশন বয়কট করেন। বিবিসি। ইভো মোরালেস ইতোমধ্যেই মেক্সিকো পৌঁছেছেন । জিনাইন আনেজের ঘোষণাকে তিনি ডানপন্থীদের অভ্যুত্থান হিসেবে উল্লেখ করেন। মোরালেস বলেন, সেনাবাহিনী তাকে প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়তে বাধ্য করেছে। জীবনের ঝুঁকি থাকায় মেক্সিকোতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিলেও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। ২০০৬ সালে প্রথম আদিবাসী হিসেবে বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন মোরালেস। অক্টোবরে জয়ী হয়ে আবারও ক্ষমতায় আসলেও বিরোধীরা কারচুপির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ শুরু করে। এ অবস্থায় আবারও নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দেন মোরালেস। আনেজের দাবি, প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট সরে যাওয়ায় পদাধিকার বলে তার ওপরই হাল ধরার দায়িত্ব বর্তায়। ২০ অক্টোবরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে, এমন দাবিতে বিক্ষোভ করছিলেন বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভের একপর্যায়ে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন ১৪ বছর ধরে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা আদিবাসী ও বামপন্থী নেতা ইভো মোরালেস। ভাইস প্রেসিডেন্ট আলভারো গার্সিয়া লিনেরা ও সিনেট প্রেসিডেন্ট আদ্রিয়ানা সালভাতিয়েরা আগেই সরে দাঁড়ান। গত রবিবার নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা অর্গানাইজেশন অব আমেরিকান স্টেটস জানায়, ২০ অক্টোবরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কারচুপির স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে। সংস্থাটি ওই নির্বাচনের ফল বাতিলের আহ্বান জানায়। মোরালেস এতে সম্মতি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে ঢেলে সাজিয়ে নতুন নির্বাচন দেয়ার কথা বললেও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো, সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রধানরা তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানান। ২০০৬ সাল থেকে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে থাকা দেশটির প্রথম আদিবাসী নেতা মোরালেস গত অক্টোবরে চতুর্থবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হন। মোরালেস বলেন, তাকে ক্ষমতা ছাড়ার জন্য চাপ দেয়া হয়েছিল, তবে তিনি স্বেচ্ছায়ই পদত্যাগ করেছেন। ‘আর যেন রক্ত না ঝরে, তা নিশ্চিত করতেই’ ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছেন বলে দাবি করেন মোরালেস। মোরালেস এ সময় দাবি করেন, তাকে ‘উৎখাতের ষড়যন্ত্রকারী’রা হত্যার জন্য তার মাথার দাম ঘোষণা করেছিল ৫০ হাজার ডলার (বাংলাদেশী মুদ্রায় ৪২ লাখ ৪০ হাজার ১৭৩ টাকা)। এ সময় বলিভিয়া সরকার ও নিজের পক্ষ থেকে জীবন বাঁচানোর জন্য মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওবরাডরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এই বাম নেতা। মোরালেস বলেন, ‘আমার দেহে যতক্ষণ প্রাণ আছে, আমি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকব, লড়াই জারি থাকবে।’ ইদানীং বামপন্থীদের দুর্গে রূপ নিয়েছে মেক্সিকো। দেশটির সরকার কূটনৈতিকভাবে লাতিন আমেরিকার অন্য দেশের বামপন্থী নেতাদের পাশে দাঁড়িয়ে আসছে। ক্ষমতাসীন জোটের কয়েকটি দল সরে দাঁড়ালে এবং সেনাবাহিনী প্রেসিডেন্টকে পদত্যাগের আহ্বান জানালে গত রবিবার মোরালেস সরকারের পতন হয়। ভাইস প্রেসিডেন্ট আলভারো গার্সিয়া লিনেরা ও সিনেট প্রেসিডেন্ট আদ্রিয়ানা সালভাতিয়েরা আগেই সরে দাঁড়ান। জিনাইন আনেজ ১৯৬৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ল ও লিগ্যাল সায়েন্সে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। বেনির সিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আনেজ ডেমোক্র্যাট সোশ্যাল মুভমেন্ট পার্টির প্রভাবশালী নেতা। ২০১০ সালে তিনি সিনেটর হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি মোরালেসের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত। তিনি আইনজীবী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তার স্বামী কলম্বিয়ান রাজনীতিক হেক্টর কারভাজাল।
×