ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপিতে এখন আওয়ামী লীগের চেয়ে বেশি মুক্তিযোদ্ধা ॥ মওদুদ

প্রকাশিত: ১২:৪৫, ১৩ নভেম্বর ২০১৯

বিএনপিতে এখন আওয়ামী লীগের চেয়ে বেশি মুক্তিযোদ্ধা ॥ মওদুদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি আন্দোলন করবে জানিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, আন্দোলন অনেক রকমের হতে পারে। তবে আন্দোলন যে একেবারে রাজপথে গিয়ে করতে হবে এমন কোন কথা নেই। তিনি বলেন, বিএনপিতে এখন আওয়ামী লীগের চেয়ে বেশি মুক্তিযোদ্ধা আছে। মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মওদুদ বলেন, এটা মনে রাখবেন যে খালেদা জিয়াকে আইনী প্রক্রিয়ায় মুক্ত করা সম্ভব নয়। কারণ সরকারের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তার জামিনে মুক্ত হওয়া খুব কঠিন হয়ে যাবে। খালেদা জিয়ার মুক্তির একমাত্র পথ আন্দোলন আর এর মাধ্যমেই তিনি মুক্ত হবেন। মওদুদ বলেন, আমরা এখন মাঠে নেই। আমাদের কোথাও সভা-সমাবেশ করতে দেয়া হয় না। তারপরও সরকারের মধ্যে আমরা এক রকম অস্বস্তি দেখতে পাচ্ছি। এর কারণটা কি? এর কারণ হলো তাদের দুঃশাসন, অপশাসন, দুর্নীতি, অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন এমন একটি পর্যায়ে চলে গেছে যে আজকে নিজেদের অপকর্মের ভারেই তাদের পতন ঘটবে। মওদুদ বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেরাই এখন বলছে তাদের দল এখন অনুপ্রবেশকারী দিয়ে ভরে গেছে। তাহলে এখন কি ধরে নিতে হবে আওয়ামী লীগ এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিনিধিত্ব করে না। তিনি বলেন, দেশে এখন একদলীয় শাসন চলছে। এ ছাড়া বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, আইনের শাসন ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই। এর জন্য কি আমরা ২৪ বছর আন্দোলন-সংগ্রাম ও যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে মওদুদ বলেন, তিনি বলেছেন, আন্দোলন করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ করে দেয়া হবে। এই উন্নয়ন প্রকল্প এর অর্থ কি কোন ব্যক্তিগত অর্থ? এই প্রকল্প তো বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য, হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর মঙ্গলের জন্য। এই প্রকল্পের অর্থ বন্ধ করে দেয়ার এই যে মানসিকতা তিনি প্রকাশ করেছেন এতেই প্রমাণ হয় সরকারের মধ্যে ভীতি কাজ করছে। ১১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে উল্লেখ করে মওদুদ বলেন, এসব ভিসিদের তো শিক্ষার্থীদের সম্মান করার কথা ছিল। কিন্তু তারা সম্মান রক্ষা করতে পারেননি, তাই শিক্ষার্থীরা তাদের সম্মান করেননি। ভিসিরা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলছেন তারা দুর্নীতির প্রমাণ করতে না পারলে শাস্তি দেবেন। কিন্তু যার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তিনি যদি স্বপদে বহাল থাকেন তবে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কিভাবে নিরপেক্ষ হবে। মওদুদ বলেন, দেশে কোন রাজনীতি নেই, বিরোধী দলও নেই। সরকারের মধ্যে একটা বিরাট অস্বস্তি দেখতে পাচ্ছি। আমরা মাঠে নেই, আমাদের সভা করতে দেয়া হয় না। তারপরও সরকারের এত অস্থিরতা কেন? তিনি বলেন, দেশের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় নেমে যাবে। তখন তাদের প্রতিরোধ করা সরকারের পক্ষে সম্ভব হবে না। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, দলের নেতা শিরিন সুলতানা, শামীমুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান প্রমুখ।
×