ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শতাধিক আহত ;###;পাঁচ তদন্ত কমিটি গঠন;###;তূর্ণা নিশীথার চালকসহ সাসপেন্ড ৩

নিহত ১৬ জন ॥ কসবায় দুই ট্রেনের সংঘর্ষে ভয়াবহ দুর্ঘটনা

প্রকাশিত: ১১:১৭, ১৩ নভেম্বর ২০১৯

নিহত ১৬ জন ॥ কসবায় দুই ট্রেনের সংঘর্ষে ভয়াবহ দুর্ঘটনা

গাফফার খান চৌধুরী/ রিয়াজউদ্দিন জামি ॥ ব্রাক্ষণবাড়িয়ার কসবায় দুই ট্রেনের ভয়াবহ সংঘর্ষে ষোলো জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে শতাধিক। এদের অর্ধেকই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহত ষোলো জনের মধ্যে ঘটনাস্থলেই দশ জন নিহত হয়েছে। আহত অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। সাম্প্রতিক এত বড় ট্রেন দুর্ঘটনা আর ঘটেনি। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবার ও আহতদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের চালকের সিগন্যাল নজরে না আসায় উদয়ন এক্সপ্রেস নামের ট্রেনটির সঙ্গে সংঘর্ষে দুর্ঘটনাটি ঘটে। দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তূর্ণা নিশীথার চালকসহ তিন জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে গঠন করা হয়েছে পাঁচটি তদন্ত কমিটি। নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে আপাতত সোয়া লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে। আহতদের আপাতত চিকিৎসা সুবিধা দেয়া হচ্ছে। দুর্ঘটনার কারণে প্রায় আট ঘণ্টা ঢাকা-চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। আট ঘণ্টা পর ওই দুই রুটে ট্রেন যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়। যেভাবে দুর্ঘটনা ঘটে সোমবার রাত তিনটার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ব্রাক্ষণবাড়িয়ার মন্দবাগ রেল ক্রসিংয়ে উদয়ন এক্সপ্রেস ও আন্তঃনগর তূর্ণা নিশীথার মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে বলে আখাউড়া রেলওয়ে পুলিশের ওসি শ্যামল কান্তি দাশ জানান। তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থলেই ১০ জনের মৃত্যু হয়। আর হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যায় আরও ছয় জন। আহত হয় অন্তত অর্ধশতাধিক। তাদের কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। মন্দবাগ রেলস্টেশনের মাস্টার জাকির হোসেন জানান, দুর্ঘটনার সময় তূর্ণা নিশীথার গতি ছিল ঘণ্টায় কমপক্ষে ৮০ কিলোমিটার। রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মিয়া জাহান জানান, প্রাথমিক তদন্তে তূর্ণা নিশীথার চালক সিগন্যাল না মানায় দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে প্রমাণ মিলেছে। ঘটনার সময় সিলেট থেকে ছেড়ে আসে উদয়ন এক্সপ্রেস। সেটি যাচ্ছিল চট্টগ্রামে। আর তূর্ণা নিশীথা চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসছিল ঢাকায়। মন্দবাগে দুই ট্রেনের ক্রসিংয়ের সময় সিগন্যাল পেয়ে উদয়ন এক্সপ্রেস মেইন লাইন থেকে লুপ লাইনে অর্থাৎ সাইট দেয়ার জন্য পাশে থাকা আরেকটি রেল লাইনে প্রবেশ করছিল। ট্রেনের নয়টি বগি লুপ লাইনে চলে গিয়েছিল। দশম বগিটিও পাশের লাইনে যাচ্ছিল। এ সময় লাইনের দায়িত্বে থাকারা যথারীতি সিগন্যাল দেয়। নিয়মানুযায়ী সিগন্যাল দিলে লালবাতি জ্বলে। অর্থাৎ সামনে ট্রেন বা বিপদ আছে। নিয়মানুযায়ী এ সময় যেদিকে সিগন্যাল দেয় সেদিকের ট্রেন দাঁড়ায় বা গতি কমিয়ে দেয়। গতি কি পরিমাণ কমাতে হবে, তাও নির্ধারিত আছে। কিন্তু তূর্ণা নিশীথার চালক সেই সিগন্যাল হয়ত দেখেননি। বা খেয়াল করেননি। বা আমলে নেননি। বা ঘুমের ভাব থাকায় সেটি ভাল করে খেয়াল না করেই তূর্ণা নিশীথার চালক সিগন্যাল না মেনে ট্রেন চালিয়ে দেয়। এতে তূর্ণা নিশীথা ট্রেনটি উদয়ন ট্রেনের পেছনের দিকে থাকা দশ নম্বর বগিটিকে মারাত্মকভাবে ধাক্কা দেয়। স্বাভাবিক কারণেই ধাক্কা সামলাতে না পেরে দুই ট্রেনের বগিগুলো লাইনচ্যুত হয়ে যায়। আর তখনই হতাহতের ঘটনাটি ঘটে। আর প্রচ- গতি থাকার কারণে তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের একাধিক বগি উদয়ন এক্সপ্রেসের বগির উপরে উঠে যায়। ইস্পাতের চাকাগুলো ট্রেনের বগির লোহার মোটা শক্ত পাত কেটে উপরে উঠে যায়। এ সময় ট্রেনের ভেতরে থাকা যাত্রীরা ট্রেনের চাকায় কাটা পড়ে। দুইটি ট্রেনের অনেক বগি রীতিমতো দুমড়েমুচড়ে যায়। একটি বগি ও ট্রেনের চাকা আরেকটি ট্রেনের বগির ভেতরে কেটে ঢুকে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস এ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স, পুলিশ, রেল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা উদ্ধার কাজ শুরু করে। উঁচু করে ইট রাখার কারণে সিগন্যাল দেখা যায়নি ঢাকা অভিমুখী তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেসের গার্ড আবদুর রহমান বলেন, স্টেশনে ঢোকার সময় একটি বাঁক আছে। ওই বাঁকের মাথায় ইট রাখার কারণে তারা সিগন্যাল লাইটটি দেখতে পাননি। বাঁক পার হওয়ার পর সিগন্যালাটি চোখে পড়লে চালক ইমার্জেন্সি ব্রেক করেন। কিন্তু এর পরও ২০ সেকেন্ডের মধ্যেই তূর্ণা নিশীথা উদয়নের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। আর উদয়ন এক্সপ্রেসের চালক সানাউল টিপু সাংবাদিকদের বলেন, আমরা রাইট ট্র্যাকেই ছিলাম। কিন্তু তূর্ণা নিশীথা সিগন্যাল না মানায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমরা আগেই স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছিলাম। সহকারী চালক (লোকোমাস্টার) আব্দুল কাইয়ুম বলেন, আমরা আগেই স্টেশনে ঢুকে গিয়েছিলাম। কিন্তু তূর্ণা নিশীথা সিগন্যাল অমান্য করে স্টেশনে ঢুকে উদয়নকে ধাক্কা দেয়। এতে আমাদের ১০, ১১, ১২ ও ১৩ নম্বর মোট চারটি বগি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১১ নম্বর বগি। যারা নিহত হয়েছেন নিহতদের স্বজন ও পরিবার ছাড়াও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই নিহতের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে নিহতদের শনাক্ত করেন। শনাক্ত মোতাবেক নিহতরা হচ্ছেন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের পশ্চিম রাজারগাঁওয়ের মুজিবুর রহমান (৫৫), চাঁদপুরের কুলসুম বেগম(৩০), চাঁদপুরের হাইমচরের মরিয়ম (৪), চাঁদপুরের উত্তর বালিয়ার ফারজানা (১৫), চাঁদপুর সদরের ফারজানা আক্তার (১৪), চাঁদপুরের হাইমচরের কাকলী (২০), হবিগঞ্জের রিপন মিয়া (২৫), হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের আল আমিন (৩০), হবিগঞ্জের আনোয়ারপুরের আলী মোহাম্মদ ইউসুফ (৩২), হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের পিয়ারা বেগম (৩২), হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের আদিবা (২), হবিগঞ্জের ভোলঞ্চার ইয়াসিন আরাফাত (১২), হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের তীরেরগাঁওয়ের সুজন আহমেদ (২৪), মৌলভীবাজারের জাহেদা খাতুন (৩০), ব্রাক্ষণবাড়িয়া সদরের সোহা মনি (৩) ও নোয়াখালীর মাইজির রবি হরিজন (২৩)। আহতরা ঢাকা, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, কুমিল্লা ও কসবার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের সরকারী খরচে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। উর্ধতন কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থল পরিদর্শন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ছাড়াও রেল সচিব মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন, ব্রাক্ষণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খান, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান ও ৬০ বিজিবি সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। জেলা প্রশাসক জানান, নিহতদের মধ্যে ১১ জনের লাশ কসবা বায়েক উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে রাখা হয়েছে। বাকি পাঁচজনের মধ্যে ৩ জনের লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে, একজনের লাশ কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে এবং আরেকজনের লাশ কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে বলে জানান। দুর্ঘটনাস্থলের কাছে বায়েক শিক্ষা সদন উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি অস্থায়ী ক্যাম্প খোলা হয়েছে। হতাহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, নিহতের পরিবারের ক্ষতি টাকা দিয়ে পূরণ করা সম্ভব নয়। তবুও রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে এক লাখ টাকা করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আর ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে প্রত্যেক পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর আহত প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা দেয়া হবে। রেলপথমন্ত্রীর বক্তব্য রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন সাংবাদিকদের জানান, রেললাইনে কোন ত্রুটি ছিল না। ওই জায়গায় ট্রেন চলে সিঙ্গেল লাইনে। তূর্ণা নিশীথা বিরতিহীন ট্রেন। সে কারণে ওই স্টেশনে তূর্ণাকে পাস দিতে গিয়ে উদয়নকে লুপ লাইনে প্রবেশ করতে সিগন্যাল দেয়া হয়েছিল। ওই ট্রেনটি লুপ লাইনে ঢোকার সময় তূর্ণা নিশীথার চালক সিগন্যাল অমান্য করে ট্রেনের গতি না কমিয়ে সরাসরি চালিয়ে দেয়। এতে উদয়ন এক্সপ্রেসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ধাক্কা দেয়ার সময়ও ট্রেনের চারটি বগি লাইনে ছিল। তূর্ণাকে পাস দিলেও চালক সিগন্যাল মানেনি। চালকের অসচেতনতার জন্যই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। সিগন্যাল না মানায় তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের লোকোমাস্টার (চালক) তাহের উদ্দিন, সহকারী লোকোমাস্টার (সহকারী চালক) অপু দে ও গার্ড আব্দুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আট ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মিয়া জাহান জানান, দুর্ঘটনার পরপরই লাকসাম ও আখাউড়া থেকে দুটি রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে। উদয়ন এক্সপ্রেস নামের ট্রেনটির সামনের দিকের নয়টি বগি অক্ষত আছে। নয়টি বগি নিয়ে বেলা ১১টার দিকে ট্রেনটি চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। আর তূর্ণা নিশীথার ইঞ্জিন সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বগিতে তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আরেকটি ইঞ্জিন লাগিয়ে বেলা এগারোটার দিকে ট্রেনটি গন্তব্যের দিকে পাঠানো হয়। এদিকে দুর্ঘটনার কারণে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা ও সিলেটের পথে বেশ কয়েকটি ট্রেনের যাত্রা বিলম্বিত হয়েছে। ঢাকাগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস সকাল সাতটায় নির্ধারিত সময়ে চট্টগ্রাম ছেড়ে গেলেও রাস্তায় আটকে থাকে দীর্ঘ সময়। চট্টগ্রাম থেকে অন্যান্য ট্রেনের সময়সূচী পিছিয়ে দেয়া হয়। রেলের পূর্ব ডিভিশনাল কমার্শিয়াল অফিসার (ডিসিও) আনসার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, আন্তঃনগর পাহাড়িকা এক্সপ্রেস সকাল ৯টায় সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা থাকলেও বেলা সাড়ে ১২টা পর্র্যন্ত ছাড়া সম্ভব হয়নি। সাড়ে ১২টায় মহানগর এক্সপ্রেসের যাত্রাও পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে ঢাকাগামী মেইল ট্রেন কর্ণফুলী এক্সপ্রেস সকাল দশটায় চট্টগ্রাম ছেড়ে গেছে। মূল লাইন মেরামত শেষে বেলা এগারোটার দিকে তূর্ণা নিশীথা ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। দুর্ঘটনার পর প্রায় আট ঘণ্টা ঢাকা-চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। দুর্ঘটনাকবলিত বগিগুলো সরিয়ে মূল লাইন মেরামত করা হয়। বেলা এগারোটা নাগাদ পুরোপুরি ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তদন্ত কমিটি দুর্ঘটনার তদন্ত করতে মোট পাঁচটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। যার মধ্যে রেলওয়ের তরফ থেকে গঠন করা হয়েছে চারটি। এরমধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের দুটি, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের একটি, সরকারী রেলপরিদর্শকের দফতরের একটি। আর ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে গঠন করা হয়েছে আরও একটি তদন্ত কমিটি। রেলওয়ের একটি কমিটির প্রধান রেলওয়ের মহাপরিচালক। বাকি দুটির মধ্যে একটির প্রধান ডিটিও এবং আরেকটির প্রধান সিইএম (পূর্ব)। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসনের কমিটির প্রধান জেলা প্রশাসক। রেলওয়ের বিভাগীয় পর্যায়ে করা তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে পূর্ব রেলের বিভাগীয় ট্রাফিক অফিসার বা ডিটিও নাসির উদ্দিনকে। এই কমিটির সদস্য পূর্ব রেলের বিভাগীয় সিগন্যাল এ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ার, বিভাগীয় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এবং বিভাগীয় প্রকৌশলী-১। বিভাগীয় প্রধান পর্যায়ে গঠিত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের সিওপিএস নাজমুল ইসলামকে। কমিটির সদস্যরা হলেন- পূর্ব রেলের প্রধান যন্ত্রপ্রকৌশলী মিজানুর রহমান, প্রধান সিগন্যাল ও টেলিকমিউনিকেশন প্রকৌশলী অসীম কুমার তালুকদার এবং প্রধান প্রকৌশলী মোঃ সুবক্তগীনকে। রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন সাংবাদিকদের জানান, রেলওয়ে ও জেলা প্রশাসনের কমিটিকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির কাজ শেষ করতে কিছুদিন দেরি হবে। মোটামুটি ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে পারবে। ব্রাক্ষণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিতু মরিয়মকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। মঙ্গলবার সকালে এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। দুর্ঘটনায় আহতদের আশু আরোগ্য কামনা করেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সার্বিক সহযোগিতা দিতে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী এক শোকবার্তায় দুর্ঘটনায় নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী দুর্ঘটনায় আহতদের আশু আরোগ্য কামনা করেছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আনিসুল হক এমপি ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন।
×