ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জাবিতে ভিসি অপসারণ দাবিতে দিনব্যাপী কর্মসূচী ও সংহতি সমাবেশ

প্রকাশিত: ০৮:৩৫, ১২ নভেম্বর ২০১৯

জাবিতে ভিসি অপসারণ দাবিতে দিনব্যাপী কর্মসূচী ও সংহতি সমাবেশ

জাবি সংবাদদাতা ॥ বৈরী আবহাওয়ার কারণে দুই দিন আন্দোলন স্থগিত থাকার পর গতকাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে দিনব্যাপী কর্মসূচী পালন করেছে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে ব্যঙ্গাত্মক পটচিত্র প্রর্দশনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়। পটচিত্রে উপাচার্যের ‘দুর্নীতি’ ও আন্দোলনকারীদের উপর ‘হামলা’র বিষয়টি তুলে ধরা হয়। বিকাল চারটায় তারা একটি সংহতি সমাবেশ আয়োজন করেন। গত ৫ নবেম্বর উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থানকালে আন্দোলনকারীদের উপর হামলার প্রতিবাদে সংহতি সমাবেশের শুরুতে ১ মিনিট নীরবতা পারন করা হয়। আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ কমউিনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম বলেন, “আপনারা যে দাবি তুলেছেন সেটি ন্যায্য দাবি। আপনাদের দাবির প্রতি আমাদের সবার সমর্তন থাকবে। ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ সাল বাংলাদেশের ছাত্র সমাজের ঐতিহ্য হিমালয় তুল্য। এখন সেই ঐতিহ্য ভূলুন্ঠিত হচ্ছে। শুধু জাহাঙ্গরিনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নয় সারা দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সকল স্থানে দখলদারিত্ব চলছে।” তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ তার বক্তব্যে বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় একটি দুঃখজনক পরিস্থিতির মধ্যে আছে। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ, হল বন্ধ, ক্লাস বন্ধ, অনেকগুলো পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিলো সেগুলো হচ্ছেনা। এমন একটা পরিস্থিতি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে সৃষ্টি হলো এর জন্য কে দায়ী? এর জন্য প্রথমত দায়ী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যিনি উপাচার্য তিনি। দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হবার পরে তদন্ত কমিটির একটি দাবি উঠেছিলো, সেই তদন্ত কমিটি যদি তখন গঠিত হতো তবে এতদূর পর্যন্ত আন্দোলন আসতে হতো না। প্রকল্পের কাজ তাড়াহুড়ো করে শুরু করার যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, সেটা যে এই দুর্নীতিকে চাপা দেওয়ার জন্য সেটি এখন স্পষ্ট।” ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর সংহতি সমাবেশে বলেন, “আমাদের পিঠ যখন দেয়ালে ঠেকে যায়, তখনও আপনারা সেখানে ষড়যন্ত্রের গন্ধ খুজে পান। গোপালগঞ্জের ভিসিও আন্দোলন ঠেকানোর জন্য স্বৈরাচারী কায়দায় ক্যাম্পাস বন্ধ করে দিয়েছিলো। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আন্দোলন শুধু ভিসির বিরুদ্ধে আন্দোলন নয়, এটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন, এটি দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন।” সংহতি সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি তার বক্তব্যে বলেন, “উপাচার্য ফারজানা ইসলাম আপনি অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। আপনি এখন পদত্যাগ করলে অন্তত অধ্যাপকের সম্মানটুকু পাবেন। আপনি একজন অধ্যাপকের মর্যাদা রক্ষা করুন। আপনি একজন অধ্যাপক হিসেবে বর্তমানে যেসব কর্মকান্ড করছেন, তো সমাগ্রিকভাবে বাংলাদেশের যত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং এখানকার যে অধ্যাপকেরা আছেন তাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করছেন। বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দরের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, “একটা অন্যয়ি সংগঠিত হওয়ার পর কেউ যখন সেটাকে সমর্থন দেয় ও যারা নীরব থাকে তারা সমান অপরাধী। ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় আপনারা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।” এছাড়াও উপাচার্য অপসারণ দাবিতে চলমান আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় বর্ধিত ফোরামের সদস্য আ. ক. ম. জহিুরুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য মোহাব্বত হোসেন খান সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন প্রিন্স, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী প্রমূখ। এছাড়াও আন্দোলনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠকরাও বক্তব্য রাখেন।
×