ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষকের ৬৫ পদ শূন্য, অধ্যাপক পদ সৃষ্টি হয়নি ১৭ বিভাগে

বগুড়া শজিমেকে শিক্ষক স্বল্পতা,পাঠদানে বিঘ্ন

প্রকাশিত: ০৮:৫৬, ১২ নভেম্বর ২০১৯

বগুড়া শজিমেকে শিক্ষক স্বল্পতা,পাঠদানে বিঘ্ন

সমুদ্র হক, বগুড়া অফিস ॥ শিক্ষক স্বল্পতায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজে (শজিমেক) পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। কলেজে এমবিবিএস কোর্স ছাড়াও ডক্টর অব মেডিসিন (এমডি), মেডিসিন বিষয়ে এমফিল ও কয়েকটি বিষয়ে ডিপ্লোমা কোর্স কার্যক্রম রয়েছে। এমবিবিএস কোর্সে প্রতি বছর ১৬০টি আসনে দেশী-বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। মোট শিক্ষার্থী ১ হাজারেরও বেশি। বর্তমানে ৩৭টি বিভাগে শিক্ষকের পদ ১৫১। যার ৬৫ পদে কোন শিক্ষক নেই। নয়টি বিভাগ চলছে একজন করে শিক্ষক দিয়ে। অধ্যাপকের ২৩টি পদের মধ্যে শূন্য হয়ে আছে ১৬টি। ১৭টি বিভাগে অধ্যাপকের পদ সৃষ্টি করা হয়নি। কখনও অন্য কলেজের শিক্ষককে অতিথি শিক্ষক মর্যাদায় এনে ক্লাস নেয়া হয। সত্তর দশকের শেষের দিকে বগুড়া মেডিক্যাল কলেজের ভিত্তিফলক উন্মোচিত হয়ে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের ধারে একটি টিনশেড ঘরে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৮২ সালে। ওই বছর এমবিবিএস কোর্সে মাত্র তিনজন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। দুই মাস পর বগুড়া মেডিক্যাল কলেজের কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ করে ভর্তি তিন শিক্ষার্থীকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে একত্রিত করা হয়। ওই তিন শিক্ষার্থীর একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম রসুল বর্তমানে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজের পরিচালক। কলেজের উপাধ্যক্ষ ডাঃ রেজাউল আলম জুয়েল জানালেন প্রতি মাসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরে বগুড়া মেডিক্যাল কলেজে শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ ও গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিভাগে অধ্যাপকের পদ সৃষ্টি চেয়ে চিঠি পাঠানো হচ্ছে। কোন সাড়া মিলছে না। শিক্ষক স্বল্পতায় এমবিবিএস কোর্সে পাঠদানে বিঘœ ঘটছে। পেডিয়েট্রিক সার্জারি ও পেডিয়েট্রিক নেফরোলজি বিভাগে সহযোগী ও সহকারী অধ্যাপকের দুটি করে পদ শূন্য। একজন করে শিক্ষক দিয়ে চলছে ফরেনসিক মেডিসিন, ট্রান্সফিউশন মেডিসিন, রেডিও থেরাপি, রেসেপেরেটির মেডিসিন, হেপাটোলজি, হেমাটোলজি, এন্ডোক্রাইনোলজি, স্পোর্টস মেডিসিন এ্যান্ড অর্থোস্কোপি ও দন্ত বিভাগ। এনাটমি বিভাগে অধ্যাপকের পদ শূন্য। ফিজিওলজি বিভাগে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপকের দুটি, সহকারী অধ্যাপকের একটি ও প্রভাষকের একটি পদ শূন্য। কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপকের তিনটি পদই শূন্য। বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের প্রভাষকের একটি পদ শূন্য। অতি গুরুত্বপূর্ণ ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ চলছে একজন প্রভাষক দিয়ে। ২০১৭ সালের ৬ আগস্ট থেকে অধ্যাপকের পদ শূন্য হয়ে আছে। সহযোগী অধ্যাপকের পদ শূন্য রয়েছে ২০১৫ সালের একই সময় থেকে। সহকারী অধ্যাপকের পদ শূন্য ২০১৬ সালের ২২ অক্টোবর থেকে। প্রভাষকের দুটি পদ শূন্য চলতি বছরের (২০১৯) জুলাই থেকে। ফরেনসিক মেডিসিনের এই বেহাল অবস্থায় ধর্ষণ ও নির্যাতিতা নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং খুন, অস্বাভাবিক মৃত্যু, সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত ব্যক্তির পোস্ট মর্টেমে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ফার্মোকোলজি বিভাগে অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপকের পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপকের একটি পদ ও প্যাথোলজিস্টের দুটি পদ শূন্য। মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপকের দুটি পদ, মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপকের একটি করে পদ শূন্য। শিশু বিভাগের অধ্যাপকের পদ শূন্য। ডার্মোটোলজি বিভাগের অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপকের দুটি পদ শূন্য। সাইকিয়াট্রি বিভাগের সহকারী অধ্যাপকের দুটি পদ শূন্য। কার্ডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপকের একটি পদ, সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক সহযোগী অধ্যাপক, চক্ষু বিভাগের অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপকের দুটি ও সহকারী অধ্যাপকের দুটি পদ শূন্য। ইএনটি বিভাগের অধ্যাপকের পদ শূন্য। অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপকের পদ, সহকারী অধ্যাপকের দুটি পদ শূন্য। অবস ও গাইনি (স্ত্রী রোগ ও প্রসূতি) বিভাগের অধ্যাপকের পদ ও সহকারী অধ্যাপকের দুটি পদ শূন্য। ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগে অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপকের পদ শূন্য। রেডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপকের একটি পদ শূন্য। এ্যানেসথোলজি বিভাগের অধ্যাপকের পদ শূন্য। ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগে সহযোগী অধ্যাপকের একটি পদ শূন্য। নিউরো সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপকের পদ শূন্য। হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপকের পদ শূন্য। বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপকের পদ শূন্য। দন্ত বিভাগের সহকারী অধ্যাপকের পদ শূন্য।
×