ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তথ্যমন্ত্রীর মন্তব্য

জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতির কারণে বিএনপি থেকে গণহারে পদত্যাগ

প্রকাশিত: ১০:৩৭, ৯ নভেম্বর ২০১৯

 জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতির কারণে বিএনপি থেকে গণহারে পদত্যাগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জ্বালাও-পোড়াও, নেতিবাচক আর দূর থেকে স্কাইপি দিয়ে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই বিএনপি থেকে নেতারা গণহারে পদত্যাগ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। একইসঙ্গে দেশ গড়তে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই, তাই দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়ানোর চেয়ে কারিগরি শিক্ষার দিকে মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন তিনি। শুক্রবার রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠানটির ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও গণপ্রকৌশল দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। দিবসটি পালন উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশে পাঁচ লক্ষাধিক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিয়ে আড়ম্বরপূর্ণ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইডিইবির সাধারণ সম্পাদক মোঃ শামসুর রহমান ও সভাপতির বক্তব্য রাখেন আইডিইবির সভাপতি একেএমএ হামিদ। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা চাই, আমাদের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের সমালোচনা করুক। বিএনপি একটি শক্তিশালী বিরোধীদল হিসেবে সংসদে এবং সংসদের বাইরে থাক। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, পৃথিবীর কোন দেশের সরকার অতীতেও শতভাগ নির্ভুল কাজ করতে পারেনি এবং ভবিষ্যতেও পারবে না। তাই ভুল হলে অবশ্যই সমালোচনা হবে। কিন্তু যেসব ভাল কাজ হচ্ছে সেগুলোরও প্রশংসা হওয়া প্রয়োজন। সেটি না হলে দেশ এগিয়ে যাবে না। মন্ত্রী বলেন, আমরা সমালোচনাকে সমাদৃত করতে চাই, সমালোচনাকে সমাদৃত করার চর্চাকে লালন করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সমালোচনাকে সমাদৃত করার চর্চাকে লালন করেন। কিন্তু যেভাবে তাদের নেতারা দল ত্যাগ করছেন, এতে মনে হচ্ছে আমরা চাইলেও তারা শক্তি ধরে রাখতে পারছেন না। ক্রমাগত শক্তি ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা শুনেছেন বিএনপি থেকে সবাই চলে যাচ্ছে। মোর্শেদ খান ও মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান পদত্যাগ করেছেন। আরও অনেকে পদত্যাগ করবেন বলে নাম শোনা যাচ্ছে। এর কারণ নেতিবাচক এবং জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি। আর দূর থেকে স্কাইপির মাধ্যমে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করার ফল হচ্ছে গণহারে দল ত্যাগ। মোর্শেদ খান যিনি বিএনপির দু’বারের মন্ত্রী তিনি নিজেই বলেছেন বিএনপি এখন জাতীয়তাবাদী স্কাইপি দলে রূপান্তরিত হয়েছে। এটা আমার বক্তব্য নয়। তাদের নেতিবাচক রাজনীতির কারণেই তাদের নেতারা দল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, কেউ কেউ মনে করেন, দেশ বর্তমানে আরও দশ হাত দেবে গেছে। চিন্তার দৈন্যের কারণেই এসব ভাবনা আসে। বাংলাদেশের উন্নতিতে ভারত আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নানা বিষয়ে এখন শিক্ষা গ্রহণ করতে আসে যে কিভাবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তাই আজেবাজে চিন্তা বাদ দিতে হবে। প্রকৌশলীদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের মূল কাজ করেন ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা। মাঠ পর্যায়ের প্রায় ৮০ ভাগের বেশি কাজই করেন ডিপ্লোমা প্রকৌশলীগণ। কারণ দেশ গড়তে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই। বর্তমানের সাধারণ শিক্ষা কতটুকু কাজে আসছে তা এখন ভাববার সময় এসেছে। কারিগরি বিষয়ে দেশে দক্ষ লোক নেই। শুধু কারিগরি শিক্ষা জানা থাকায় বিদেশীরা এদেশ থেকে অর্থ নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তা হওয়ার কথা ছিল না। মন্ত্রী বলেন, দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার ইন্টার্ন হিসেবে কারিগরি শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা দরকার। এছাড়া শুধু বস্তুগত উন্নয়ন নয় জাতি গঠনে উন্নয়ন করতে হবে। তাই মেধার সঙ্গে দেশপ্রেম মমত্ববোধ তথা দেশাত্মবোধ নিয়ে কাজ করতে সকল ডিপ্লোমা প্রকৌশলীর প্রতি বিশেষ আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, আইডিইবি কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ প্রকৌশলী তৈরিতে কাজ করে। মূলত ডিপ্লোমা প্রকৌশল উন্নত বিশ্বে সর্বোচ্চ শিক্ষা। তাই এটিকে আমাদের সেই পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, কারিগরি শিক্ষার মূল কারিগর ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা যেন কোন প্রকার বৈষম্যের শিকার না হন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ইচ্ছে পূরণে দক্ষতা ও জ্ঞান নির্ভর মানব সম্পদ তৈরি করতে হবে। কারিগরি শিক্ষার মান আরও উন্নত করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী দক্ষতাভিত্তিক মানব সম্পদ তৈরিতে মনোযোগ দিতে হবে। তবেই কেবল দেশ এগিয়ে যাবে। অনুষ্ঠান শেষে কয়েক হাজার প্রকৌশলীকে নিয়ে আয়োজিত এক বিশাল র‌্যালি আইডিইবি ভবনের সামনে থেকে শুরু করে জাতীয় প্রেসক্লাব হয়ে আইডিইবি ভবনে এসে শেষ হয়।
×