ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষকের বিকল্প কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম?

প্রকাশিত: ০৯:২৩, ৯ নভেম্বর ২০১৯

  শিক্ষকের বিকল্প কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম?

তৃতীয় শিল্পবিপ্লবের শেষ প্রান্তে এসে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। শুধু তরুণরাই নয় বিভিন্ন বয়সীদের কাছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে এই মাধ্যমটির। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের দ্বারা পৃথিবীর যেকোন স্থানে ঘটে যাওয়া ঘটনা আমরা সঙ্গে সঙ্গে সরাসরি দেখতে পাচ্ছি। বর্তমানে এটি তথ্য আদান প্রদানের অন্য যে কোন মাধ্যমের তুলনায় অধিক শক্তিশালী ভূমিকা পালন করছে। এই মাধ্যম ব্যবহার করে মানুষ নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ, জ্ঞানের ভাগাভাগি এবং একটি স্বগোক্তিকে কথোপকথনে রূপান্তর করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হচ্ছে ইন্টারনেটভিত্তিক এ্যাপ্লিকেশনগুলোর একটি গ্রুপ। এটি ওয়েব ২.০ এর আদর্শিক ও প্রযুক্তিগত মূলের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। যাতে ব্যবহারকারীর তৈরি কোন বিষয়বস্তুকে আদান-প্রদান এবং নতুন কিছু তৈরি করার অনুমতি দেয়। ২০১৭ সালে হানসেনসহ আরও কয়েকজন তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের একটি আধুনিক সংজ্ঞা দিয়েছেন। সেখানে তারা বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হচ্ছে একগুচ্ছ অনলাইন এপস্ ও টুলসের সমষ্টি। এটি চূড়ান্তভাবে একটি স্বগোক্তিকে কথোপকথনে রূপান্তর এবং জ্ঞান বিনিময়ের ক্ষেত্র তৈরি ও সহজ করার মাধ্যমে ডিজিটাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের মধ্যে সামাজিক মিথস্ক্রিয়া ও পারস্পরিক যোগাযোগের পথ বাতলে দেয়। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হচ্ছে ইন্টারনেটভিত্তিক এপস্ ও টুলসের সমন্বয়। এটি ওয়েব ২.০ এর আদর্শ ও প্রযুক্তিগত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। যোগাযোগ ও মিথস্ক্রিয়মূলক কাঠামো তৈরিতে সহায়তাই এর কাজ। এখানে ব্যবহারকারীরা তাদের তৈরি করা কনটেন্ট বিনিময় করে থাকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো কি কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে আমরা বৃহৎ শ্রেণীকরণের মাধ্যমে ভাগ করতে পারি। অনেক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ব্লগ, (যেখানে একজন ব্যবহারকারী গল্প কাহিনী, নিজের জীবন কাহিনী কিংবা যে কোন ঘটনা লিখতে পারে।) উইকিস, (উইকিপিডিয়া) সামাজিক নেটওয়ার্ক সাইট, (ফেসবুক, লিংকডইন ইত্যাদি।) স্ট্যাটাস আপডেট সাইট, (টুইটার) সোস্যাল বুকমার্কিং, (রেডডিট, স্টাম্বলআপন, ডিগ ইত্যাদি।), ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, লিঙ্কডইন, রিসার্চগেট ইত্যাদি। বর্তমানে পৃথিবীতে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় প্রায় ১.৬ বিলিয়ন, ইউটিউব ব্যবহারকারীর সংখ্যা বিলিয়নেরও বেশি, হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৯৫০ মিলিয়ন, গুগল প্লাস ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৪৪০ মিলিয়ন, ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৪৩০ মিলিয়ন, লিঙ্কডইন ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৪২০ মিলিয়ন, টুইটার ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ২৩০ মিলিয়ন এবং রিসার্চগেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৯ মিলিয়ন। সুতরাং আমরা বুঝতে পারছি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যাপকতা কতটুকু এবং সমাজে এর যে ব্যাপক প্রভাব তা নিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনা হচ্ছে। শিখন শিক্ষণ কি শিখন-শিক্ষণ হচ্ছে একটি সামাজিক প্রক্রিয়া। এটি কঠিন এবং সমাজ বাস্তবতার সঙ্গে জড়িত। শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে এটি সবচেয়ে ভাল কাজ করে। এখানে শিক্ষার্থীদের উচিত শিক্ষকদের সম্মান করা এবং তাদের প্রতি দায়বদ্ধতা অনুভব করা। শিক্ষকদের উচিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষার্থীদের সহায়তা করা, অনুপ্রাণিত করা এবং তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা। কিন্তু আমরা যদি ইতিহাস দেখি তাহলে দেখতে পাই উনবিংশ শতাব্দী থেকে শিক্ষকের বিকল্প খোঁজার চেষ্টা করা হচ্ছে। অথবা কোন ভাল কনটেন্ট তৈরি করে সহজ মাধ্যম হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহারের চেষ্টা করা হচ্ছে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে শিক্ষার ব্যয় কমানো। এখনও অনেকে শুধু শিক্ষার্থীদের রেখে কিভাবে শিখন শিক্ষণ পরিচালনা করা যায় সেই চেষ্টা করছে। তাদের ধারণা ভাল ভাল শিক্ষকের লেকচার ভিডিও করে বা অনলাইনে দিয়ে দিলেই শিখন-শিক্ষণ হবে। অথবা ভাল কনটেন্ট দিয়ে দিতে পারলে শিখন-শিক্ষণ হবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সরাসরি শিক্ষকের উপস্থিতি না থাকলে শিখন-শিক্ষণ সেভাবে হবে না। সেই কারণেই আমরা অনেক সময় বলতে চাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কি আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় ব্যবহৃত হবে? নাকি আনুষ্ঠানিক শিক্ষার সহায়ক হিসেবে ব্যবহৃত হবে? কিন্তু আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করা হলে শিখন-শিক্ষণটা সেভাবে হবে না। কারণ শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা পরিচালিত হলে সেখানে শিক্ষকের উপস্থিতি থাকে না আর শিক্ষকের উপস্থিতি না থাকলে শিখন-শিক্ষণ সেভাবে হয় না। লেকচার ভিডিও করে বা অনলাইনে দিয়ে দিলে হয়ত একজন শিক্ষার্থী সেখান থেকে শিখতে পারবে কিন্তু ভালভাবে শিখন-শিক্ষণটা হবে না। কেননা ভিডিও বা শিক্ষা যেহেতু একটি সামাজিক বিষয় সেহেতু এখানে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর মিথস্ক্রিয়া, শিক্ষার্থীর সঙ্গে শিক্ষার্থীর মিথস্ক্রিয়া, শিক্ষার্থী এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের মিথস্ক্রিয়ার প্রয়োজন। আর যদি তা করা সম্ভব না হয় তাহলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রদান করা সহজ হবে না। তবে অবশ্যই আমরা এই মাধ্যমটিকে দক্ষতা উন্নয়নে ব্যবহার করতে পারি। আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় একদিক থেকে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে এবং অন্যদিক থেকে শিক্ষার্থী ও দৈনন্দিন জীবনের ইভেন্টগুলোর মধ্যে প্রতিদিনের সামাজিক মিথস্ক্রিয়া প্রয়োজন। যখন শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর মধ্যে একটা সামাজিক বন্ধন থাকবে তখনই সত্যিকারের শিখন-শিক্ষণ হবে। আমাদের ক্লাসরুম এবং বাস্তব বিশ্বের মধ্যে যে ফারাক রয়েছে তার সেতুবন্ধন তৈরি করতে হবে। শিখন-শিক্ষণের একটি তাৎপর্য আছে এটি বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি বাস্তব বিশ্বের সিস্টেমে তৈরি করা হয়েছে। আপনি যখন মানুষের সঙ্গে কোন কিছুর বিনিময় করতে যাবেন তখন তার প্রতি আপনার আস্থা এবং বিশ্বাস থাকতে হবে। সে যে তথ্যটা আপনাকে দিচ্ছে আপনি ধরে নিচ্ছেন সে তথ্যটা সত্য। কিন্তু অনলাইনে তা ঘটার সম্ভাবনা কম। অনলাইনে একজন মানুষ যখন আপনাকে কোন তথ্য দিল তখন আপনি জানেন না তথ্যটি সত্য কি না। কারণ যখন কোন ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোন তথ্য দিচ্ছে এটা তার নিজের তৈরি করা কনটেন্ট। যেহতেু এই মাধ্যমটিতে তথ্য যাচাই-বাছাই-এর সুযোগ নেই তাই এই তথ্যটি সত্য কিনা বাকিরা তা জানতে পারছে না। সে কারণে তথ্য দাতার প্রতি ব্যবহারকারীদের আস্থা থাকে না, কারণ তারা তাকে চিনে না। আমরা যদি দেড়শ’ বছরের পুরনো ক্লাসরুমগুলো দেখি তাহলে দেখব শিক্ষক ক্লাসে আছে এবং শিক্ষার্থীরা তার সামনে বসে আছে। আজকের ক্লাসরুমগুলোও মোটা দাগে একই অবস্থা। শিক্ষক সামনে আছে শিক্ষার্থী বসে আছে হয়তো ভিন্নভাবে। হ্যাঁ আমরা এখানে প্রযুক্তির পার্থক্য দেখতে পাচ্ছি। ক্লাসরুমে স্মার্ট বোর্ড সংযুক্ত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে ল্যাপটপ পৌঁছে গেছে। এছাড়া আর কোন পার্থক্য হয়নি। ব্লেন্ডেড লার্নিং-এ কিছুটা পরিবর্তন হলেও অন্যান্য ক্ষেত্রে পরিবর্তন নাও হতে পারে। তবে প্রথম যখন রেডিও আবিষ্কার হয় তখন বলা হয়েছিল শিক্ষকের বিকল্প আমরা পেয়ে গেছি। এখন আমাদের আর এত শিক্ষক লাগবে না। আমরা লেকচার তৈরি করে রেডিওতে দিয়ে দিব। সেখান থেকেই শিখন শিক্ষণ হবে। এই চেষ্টা করা হয়েছে অনেক দিন। এর পর এলো সম্প্রচার মাধ্যম। এটি আরেকটি সামাজিক মাধ্যম। এখন সম্প্রচার মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু শুনতে পাচ্ছি কিন্তু রেডিও বা সম্প্রচার মাধ্যম শিক্ষকদের বিকল্প হতে পারেনি। আফ্রিকাতে রেডিও দিয়ে শিক্ষকতা করার চেষ্টা করা হয়েছে। তারা রেডিওর সামনে লিসেনিং ও বাউডাউন পদ্ধতির মাধ্যমে চেষ্টা করেছে। কিন্তু দেখা গেছে মানুষ সেভাবে শিখছে না। এরপর ১৯৫০ সালে টেলিভিশন দিয়ে চেষ্টা করা হয়েছে। এই পদ্ধতি বাংলাদেশে আমরাও অনুসরণ করছি। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে টেলিভিশনের মাধ্যমে শিক্ষা দিচ্ছে। কিছু বিষয় আমরা এখান থেকে শিখতে পারব কিন্তু সব বিষয় আমরা এখান থেকে শিখতে পারব না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নেতিবাচক দিক যেহেতু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সবার জন্য উন্মুক্ত এখানে কোন ধরনের যাচাই-বাছাই নেই সেহেতু এই মাধ্যমে অনুপযুক্ত ছবি, সংবাদ এবং ঘটনা সরবরাহ করতে পারে। তাই এই মাধ্যমে হতাশা, গুজব, ব্ল্যাক মেইলিং, ভুয়া পরিচয়, আসক্তি ব্যাধির মতো ঝুঁকিসহ অন্যান্য ঝুঁকি রয়েছে। এই ঝুঁকির কারণ শিক্ষার্থীদের যারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে তাদের অধিকাংশের পক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছাড়া বসবাস করা সম্ভব না। তারা কিছু সময়ের জন্যও তাদের ফোন বন্ধ রাখতে পারে না। এ কারণে তাদের স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। কারণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উদ্বেগ, চাপ, হতাশায় ভোগা, ব্রেন ওয়াশিং, বিবাহ বিচ্ছেদ, ট্রলিং, সাইবার-বুলিং, গোপনীয়তা লঙ্ঘন, অনলাইন উইচ হান্টের মতো উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি করে। এ কারণে তারা মানসিক এবং শারীরিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে এবং খারাপ ফলাফলসহ খিটখিটে আচরণ করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইতিবাচক দিক তবে এই মাধ্যমটির রয়েছে বেশকিছু ইতিবাচক দিক। এই মাধ্যমের ব্যবহারকারীদের আনেকেই মনে করে থাকেন তার অর্জিত জ্ঞান সে অন্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করবে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন শিক্ষার্থী শিখবে তবে সে যদি আরেকটু অতিরিক্ত শিখতে বা জানতে চায় তাও সম্ভব কারণ সে যে কোন বিষয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাগাভাগি করলে তার ফলাবর্তন পাবে। সেখানে সহপাঠী এবং বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে পারবে, শিক্ষক এবং সহপাঠীদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া গ্রহণের ক্ষমতা এবং আদান-প্রদান হওয়া বার্তাগুলোর প্রতিফলনের সুযোগ থাকে। চিন্তাভাবনা বহিঃপ্রকাশ, আলোচনা করা এবং অন্যের আইডিয়াকে চ্যালেঞ্জ করা এবং প্রদত্ত সমস্যার একটি গ্রুপ সমাধানের জন্য একসঙ্গে কাজ যায়। সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনার দক্ষতা বিকাশ করার পাশাপাশি নিজের প্রতিফলিত, জ্ঞান ও অর্থের সহনির্মাণ করার দক্ষতা অর্জন করা যায়। শিক্ষা হঠাৎ করে হয় না। শিক্ষা হচ্ছে একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এখানে কিছু আগে পড়তে হয় কিছু পরে পড়তে হয়। এই ধারাবাহিকতটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেভাবে পাওয়া যায় না। আমরা যদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে শুধু আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় ব্যবহার করে শিক্ষককে বাদ দেয়ার চেষ্টা করি তাহলে শিখন-শিক্ষণটা সেভাবে হবে না। শিক্ষা যেহেতু সামাজিকতার সঙ্গে জড়িত তাই শিক্ষকের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ থাকতে হবে। তা না হলে শিক্ষার্থী সমাজের সঙ্গে চলতে পারবে না। কারণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম শুধু জ্ঞান দিতে পারবে, কিন্তু শিক্ষার্থীদের মানবিক ও সামজিক করে তুলতে পারবে না। হঠাৎ যদি কারও নতুন স্কিল প্রয়োজন হয় তাহলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তা দিতে পারবে। বর্তমান বাস্তবতায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য একটি অংশ। এখন এই মাধ্যমটিকে আর শিক্ষা থেকে বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব না। বর্তমানে আমাদের প্রধান কাজ হওয়া উচিত শিক্ষায় একে আমরা কতভাবে কাজে লাগাতে পারি তার নতুন পথের সন্ধান করা। কারণ আমাদের তরুণপ্রজন্ম এই মাধ্যমে এতটাই আসক্ত যে, তারা এর বাইরে চিন্তাও করতে পারছে না। এই মাধ্যমটিকে বাদ দিয়ে অন্য কিছু চিন্তা করাও আমাদের উচিত হবে না। কিন্তু ভুল হবে যদি আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে আনুষ্ঠানিক শিক্ষার বিকল্প হিসেবে ভাবতে থাকি। আমরা যদি ভাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম শিক্ষক, বাস্তব বন্ধুত্ব এবং বাস্তব যোগাযোগের বিকল্প তাহলে বিরাট ভুলই হবে না, জাতি হিসেবে আমাদের সর্বনাশের পথ রচনার জন্য যথেষ্ট মূল্য দিতে হবে। লেখক : উপাচার্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ
×