স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’-এর প্রভাবে সৃষ্ট বৈরী আবহাওয়ার কারণে সুন্দরবনের দুবলার চরের আয়োজিত ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব মেলা এবার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা শেষে এই তথ্য জানানো হয়েছে। সুন্দরবনের গভীরের দুবলার চরের আলোরকোলে শত বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রতি বছর কার্তিক পূর্ণিমা তিথিতে এই উৎসব পালন করা হয়। তিথি অনুযায়ী আগামী ১০ থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত এই উৎসব আয়োজনের কথা ছিল। পুণ্যস্নান ও উৎসব উপলক্ষ্যে প্রতিবছর ৪০ থেকে ৫০ হাজার তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থী সেখানে যেত।
দুবলার চর রাস উৎসব জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে জনমালের নিরাপত্তার বিবেচনায় পুর্ণার্থী, পুজারী ও দর্শনার্থীদের এবার দুবলার রাস উৎসবে যাত্রা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে বড় ধরণের দুর্যোগের আশঙ্কায় এবারের রাস উৎসব বন্ধ ঘোষনা কর হয়েছে। তবে উৎসব না হলেও সংক্ষিপ্ত পরিসরে মন্দিরে পূজা ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালিত হবে। রাস উৎসব অনুষ্ঠিত হয় দুবলার চরের আলোরকোলে সাগর তীরের। এই এলাকাটি সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্চের অন্তরগত এবং সংরক্ষিত বনাঞ্চল।
উৎসবে যেতে তাই বন বিভাগের অনুমতিরলাগে। দুর্যোগময় আবহাওয়ার কারণে বন বিভাগও উৎসবে যেতে পাশ (অনুমতি) বন্ধ করেছে। পাশাপাশি সুন্দরবন ও উপকূলে জেলেদেরও ফিরে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দুবলার চর রাশ উৎসব জাতীয় কমিটি সহ-সহভাপতি বাবুল সরদার ও সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বসু সন্তু বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে, ঝড়ো হাওয়ার সাথে বৃষ্টি বাড়ছে। সুন্দরবনের দুবলার চরের আলোরকোলে ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসবের এবারের আয়োজন অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে ‘অনুমতি না মেলায়’ বন্ধ ঘোষণা করা হচ্ছে। তবে পূজাসহ ধর্মীয় আচার যথানিয়মে চলবে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরী সভা অনুষ্টিত হয়েছে। সভায় পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায়, জেলার নয়টি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, ফায়ার সার্ভিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড, রেড ক্রিসেন্ট, সিপিপি-সহ বিভিন্ন দপ্তর, বিভাগ ও শ্রেণীপেশার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, সুন্দরবনের দুবলার চরের রাস উৎসব ছাড়াও দুবলার বিভিন্ন চরে শুটকি মৌসুমকে ঘিরে কয়েক হাজার জেলে অবস্থান করছেন। সেখানে জেলেদের জন্য ৩টি সাইক্লোন শেল্টার আছে। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আগেই দুবলার চরের শুকটি পল্লীর জেলেদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া চেষ্টা চলছে। এজন্য কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সহযোগীতা নেওয়া হবে। পাশাপশি সতর্ক সংকেত বাড়লে উপকূলীয় লোকজনকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে তৃণমূলে সব ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনিক ছুটি বাতিল ও কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে, ইউনিয়ন পর্যায়েও মাইকিং করা হচ্ছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: