ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

লেখক সৃষ্টির কাগজ

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ৮ নভেম্বর ২০১৯

 লেখক সৃষ্টির কাগজ

শিল্প,সাহিত্য এবং মননশীল ভাবনার ধারক হচ্ছে লিটল ম্যাগাজিন। প্রায়শই সাহিত্য সৃষ্টির প্রয়াসে ঢাউস সাইজের সাময়িক পত্র প্রকাশ হতে দেখা যায়। সমৃদ্ধ লিটল ম্যাগাজিন বলতে উহ্যই থেকে যায়। সম্প্রতি হাতে এলো কবি- কথাসাহিত্যিক মাহমুদ নোমান সম্পাদিত ‘শিল্প ও সাহিত্য উপজীব্য ‘দেয়াঙ’ কাগজটি। সাহিত্য সমৃদ্ধ নগর চট্টগ্রাম থেকে কবি ওমর কায়সার সম্পাদিত ‘মধ্যাহ্ন’; কবি বেণীলাল দাশগুপ্ত বেণু সম্পাদিত ‘মৃত্তিকা’; কবি অরুণ সেন সম্পাদিত কবিতার কাগজ ‘ঋতপত্র’ সাহিত্য সমৃদ্ধ সৃষ্টির শিখা চিরন্তন। তো, এ ধারাহিকতার পথকে আরও শিল্পচিন্তন রূপময় করতে ইছামতি, চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত হয়েছে কবি-সম্পাদক মাহমুদ নোমান সম্পাদিত শিল্প ও সাহিত্যের কাগজ ‘দেয়াঙ’ কাগজটির বর্তমান সংখ্যাটি সূচী বিন্যাসে আছে পাঠের রুচি বোধও। শুরুতেই সূচীবদ্ধ হয়েছে কবি শিবলী মোকতাদির ও শোয়েরা সারওয়ারের গুচ্ছ কবিতা বিন্যাস। সম্পাদক মাহমুদ নোমান উল্লিখিত কবিদের কবিতার পাঠ প্রতিক্রিয়ায় সমৃদ্ধ সাহিত্য প্রয়াসের নান্দনিক বোধে পাঠ আকর্ষণে উন্মোচন করেছেন নতুন দিগন্ত! রয়েছে গল্পকার নীলা হারুনের ‘অবেলার গল্প’ গল্প। কবিতার পৃষ্ঠাকে সুবর্ণ প্রভায় প্রদীপ্ত কবিতা অলঙ্কৃৃত কবিরা হচ্ছেন শ্যামলকান্তি দাশ, হেনরী স্বপন, শংকর চক্রবর্তী, সৌমেন চট্টোপাধ্যায়, গৌতম হাজরা, আবু তাহের মুহাম্মদ, দীলতাজ রহমান, গাফফার মাহমুদ, ইসমত শিল্পী, আদিত্য নজরুল, অমিত গোস্বামী, দীপক মান্না, তন্ময় মন্ডল, সোমনাথ বেনিয়া, রুদ্রাক্ষ রায়হান, জোবায়ের মিলন, তাপসী লাহা, সাইয়্যিদ মঞ্জু, এমরান হাসান, নাসিমা হক মুক্তা, অয়ন্ত ইমরুল, মামুন অপু, নিগার শামীমা, শহিদুল আলীম, বঙ্কিম কুমার বর্মণ, মীম মিজান, সুদীপ মুখার্জী, ক্যামেলিয়া রওনক, মিলি রহমান, শোয়াইব শাহরিয়ার, আইরিন কাকলী, কানিজ রুমা ইরা প্রমুখ। দুটি গল্প : ‘সঙ্গ-নিঃসঙ্গ’ এবং ‘মৃণালের প্রেম’ লিখেছেন যথাক্রমে গৌতম বিশ্বাস ও শর্মি ভৌমিক। কবি মোহাম্মদ জসিম ‘হ্যালোইন’; ‘বৈবাহিক সুখ মন্ত্রণালয়’ এবং ইয়ামিন ইয়ান ‘অচেনা কষ্ট’ সমৃদ্ধ অণুগল্পের পাঠ পৈতান। কবি মিতা দাস হিন্দি সাহিত্যের কবি সুলোচনা বর্মার ‘এক ছটাক সুখের জন্য’, ‘বেদনা’, ‘যদি তুমি থাকতে ‘সুনিপুন অনুবাদ কবিতা। বইয়ের পৃথিবী বিন্যাসে কবি আদিত্য নজরুলের ‘ছুঁয়ে যাও না ছোঁয়ার ভান করে’ কবিতা বই; কথাকার তৌফিক মিথুনের ‘মহাপুরুষ’ উপন্যাস এবং কবি দীপক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘একাকী দুপুরের মিঠে রোদ্দুর ‘কবিতা গ্রন্থ নির্ধারিত বইপাঠ আলোচনাও বেশ ঋদ্ধ। সূচীবদ্ধ দেয়াঙের শেষাংশে গুচ্ছকবিতা লিখেছেন কবি রাজদীপপুরী এবং মুহম্মদ আশরাফুল ইসলাম। শিল্প, সাহিত্য উত্তরণের জানালাটা একদা খুলে দিয়েছিলেন কবি আবুহাসান শাহরিয়ার তার দক্ষ শিল্পচিন্তার বাতায়ন ‘খোলা জানালার মাধ্যমে। দু’’বাংলার লেখকদের মেলসূত্র ছিল ওই সাহিত্যপত্রের ভেতর দিয়ে। তারই পথ অনুসরণে কবি মাহমুদ নোমানের ‘দেয়াঙ আবারও দু’বাংলার সমৃদ্ধ সাহিত্যপত্র। মোট ৭৪ জন লেখক ‘দেয়াঙ’ প্রকাশনাকে আলোকিত করেছেন। তবে আলোচনা না করলেই নয় বাংলাদেশ থেকে শারদীয় দুর্গোৎসবে তেমন কোন প্রকাশনা চোখে পড়ার মতো নয়! সে পথকেও কুসুমাস্তীর্ণ করল এ কাগজটি। পাঁচ ফর্মার এ সংখ্যায় প্রচ্ছদ এঁকেছেন কলকাতার খ্যাতিমান কবি ও চিত্রশিল্পী রাজদীপ পুরী। কাগজটির শারদীয়া সংখ্যা প্রকাশে সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করেছেন, ‘দেশে শারদীয় সংখ্যা প্রকাশের কথা বলে অনেককে চমকে দিয়েছি ইতিমধ্যে, আদতে উভয়পক্ষের তথাকথিত মানুষগুলো মুখোশ পরা অসাম্প্রদায়িক। অনেকে ইনবক্সে, ফোনে কৈফিয়ত চেয়ে বসেছে। এটা জানতে পারলাম, সুযোগে অনেকে উগ্র... ‘এ যেনো সাহসী উচ্চারণও... তবে দুয়েকটি মুদ্রণপ্রমাদ এবং শব্দ চ্যুতি ছাড়া চমৎকার এ প্রকাশনাটির বিক্রয়মূল্য মাত্র সত্তুর টাকা। দেয়াঙ শিল্প ও সাহিত্যের কাগজ। প্রকাশ : আশ্বিন ১৪২৬, অক্টোবর ২০১৯ শারদীয়া সংখ্যা। সম্পাদকীয় যোগাযোগ : আনোয়ারা সদর, (ইছামতি ঘাটের পাশে) চট্টগ্রাম। লিটলম্যাগাজিন পাঠক হিসেবে বলবো শিল্প, সাহিত্য প্রয়াসে সমৃদ্ধ এ প্রকাশনাটি টিকে থাকুক আগামীর প্রত্যয়ে।
×