কোর্ট রিপোর্টার ॥ রেসিডেন-সিয়াাল মডেল স্কুল ও কলেজের ছাত্র নাইমুল আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নাইমুলের পিতা মজিবুর রহমান চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেছেন। এর আগে নাইমুলের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আমিনুল হকের আদালত এ আদেশ দেয়। নাইমুলের বাবার করা অপমৃত্যুর মামলা ও অবহেলায় মৃত্যুর মামলা একত্র করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তদন্ত শেষ করে ১ ডিসেম্বরের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে মোহাম্মদপুর থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আদালতে জবানবন্দী দেয়ার সময় নাইমুলের পিতা মজিবুর রহমান সন্তানের মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার দাবি করেন।
এদিকে কলেজের সামনে আবরারের কলেজ পরিবারের ব্যানারে একটি মানববন্ধন করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকরাও যোগ দেন। অনুষ্ঠান বন্ধ না করে কনসার্ট চালিয়ে যাওয়া এবং কাছের হাসপাতালে না নেয়ার সমালোচনা করেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া শিক্ষার্থীরা ঘটনার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ দেখানোর দাবি করছেন।
গত ১ নবেম্বর ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ মাঠে আয়োজিত কিশোর আলোর বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান দেখতে এসেছিল আবরার। অনুষ্ঠান চলাকালে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হয় সে। তাকে মহাখালীর বেসরকারী ইউনিভার্সেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবরারকে মৃত ঘোষণা করেন।
আবরারের বাবার মামলায় উল্লেখ করা হয়, বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে যে কেউ মারা যেতে পারে জেনেও আসামিরা বিদ্যুত সংযোগের ক্ষেত্রে যেরূপ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা ছিল আসামিরা তা গ্রহণ করেননি। এছাড়া নাইমুল বিদ্যুতস্পৃষ্ট হওয়ার পর তাকে নিকটবর্তী সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে না নিয়ে দূরবর্তী মহাখালী ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নেয়া হয়। এতে অনেক সময় অপচয় হয়।
মামলায় বলা হয়, নাইমুলের মৃত্যুর পরও আসামিরা অনুষ্ঠান বন্ধ না করে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চালিয়ে যান। এছাড়া ঘটনাটি নাইমুলের বাবা-মা তথা তার পরিবারের কাউকে জানানো হয়নি। সহপাঠীর মাধ্যমে তারা নাইমুলের বিদ্যুতস্পৃষ্ট হওয়ার সংবাদ পান।
ঢাকা রেসিডেনসিয়াল স্কুল এ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী নাইমুল আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় দোষীদের শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
গতকালের মানববন্ধনে তোলা শিক্ষার্থীদের চার দাবির মধ্যে রয়েছে, ঘটনার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ দেখাতে হবে, অনুষ্ঠান আয়োজকদের মৃত্যুর দায় স্বীকার করে আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লিখিত বক্তব্য দিতে হবে, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে এবং শুধু দুর্ঘটনা নয়, আয়োজকদের গাফিলতি ও উদাসীনতা স্বীকার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
