ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্নেহ ও সহানুভূতি

সমাজ ভাবনা - বিষয় ॥ শিশুশ্রম

প্রকাশিত: ০৯:২৯, ৭ নভেম্বর ২০১৯

সমাজ ভাবনা - বিষয় ॥ শিশুশ্রম

কামরুজ্জামান ॥ শিশুরা নানা ধরনের কাজ করে। তবে জীবিকার জন্য মজুরির বিনিময়ে কাজ করলে তাকে শিশুশ্রম হিসেবে ধরা হয়। বাংলাদেশ সরকার ৩৮ ধরনের কাজকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সেসব কাজে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করেছে। শিশুর মাধ্যমে সাময়িক লাভ উপেক্ষা করে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। জাতীয় উন্নয়নের ক্ষেত্রে মানবসম্পদ উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই। মানবসম্পদ উন্নয়নে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ায় একদিকে শিশুর স্বাস্থ্য ভেঙে যাচ্ছে এবং অন্যদিকে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শ্রমদক্ষতা গড়ে না উঠে এভাবে চলতে থাকলে বাংলাদেশ সস্তা শ্রমের দেশ হিসেবে বিবেচিত হবে, যা আমাদের কাম্য নয়। সংবিধানের ৮টি অধ্যায়ে শিশুদের অধিকার নিয়ে কথা বলা হয়েছে। সংবিধান মেনে আইনের মাধ্যমে শিশুদের অধিকার সংরক্ষণ ও বাস্তবায়ন করা উচিত। সচেতনতা ছাড়াও সক্ষমতার দিকে নজর দিতে হবে। শিশুর প্রতি সমাজের সহানুভূতি থাকা প্রয়োজন। শিশুদের ঝুঁকির হাত থেকে বাঁচাতে হলে এই খাতে সরকারকে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নিতে হবে। বড় বড় পোশাকশিল্পে শিশু শ্রমিক নেই। কিন্তু ছোট পোশাক কারখানাগুলোতে শিশু শ্রমিকের উপস্থিতি লক্ষণীয়। সাভারের কয়েকটি পোশাকশিল্প পরিদর্শনে দেখা যায়, ৫০ শতাংশ শ্রমিক ১৫ থেকে ১৬ বছরের মেয়েশিশু। এ ধরনের কারখানাগুলোতে শিশুশ্রম নিরসনে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। আমাদের দেশে নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যানের অভাব রয়েছে। এ জন্য বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা সম্ভব হয় না। সঠিক পরিসংখ্যান জোগানের ক্ষেত্রে সরকারকে জোর দিতে হবে। পরিবহনে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে। যথাযথ গবেষণার মাধ্যমে এর কারণ অনুসন্ধান করতে হবে। শিশুশ্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার পেছনে যেসব কারণ থাকে, তা খুঁজে বের করে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে। তাহলে ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে শিশুশ্রমমুক্ত করা সম্ভব হবে। শিশুশ্রম নিরসনে সরকারের উদ্যোগকে সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য সমাজের সব শ্রেণী-পেশার মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। গণমাধ্যমকে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। বিভিন্নভাবে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে শিশুশ্রমের কুফল সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। আমরা জানি শিশুশ্রম নিরসনের জন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। সরকারের ২২টি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি রয়েছে। বিভিন্ন এনজিও সম্পৃক্ত রয়েছে। তাই ইতিবাচক কিছুর প্রত্যাশা করা যায়। রাজশাহী থেকে
×