ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দিবারাত্রির টেস্টের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ইমরুল

প্রকাশিত: ১১:৪৭, ৬ নভেম্বর ২০১৯

দিবারাত্রির টেস্টের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ইমরুল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এই মুহূর্তে ভারত সফরে বাংলাদেশ দল খেলছে ৩ ম্যাচের টি২০ সিরিজ। প্রথম ম্যাচ জিতে ইতোমধ্যে ১-০ ব্যবধানে এগিয়েও গেছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। শুধু টেস্ট দলের কয়েকজন সদস্য পরে যোগ দেবেন দলের সঙ্গে। ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে এবার ঐতিহাসিক এক মাইলফলক স্পর্শ করবে বাংলাদেশ দল। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে দিবারাত্রির টেস্ট খেলবে প্রথমবারের মতো। ভারতের জন্যও তা হবে নতুন অভিজ্ঞতা। দিবারাত্রির টেস্ট মানেই গোলাপি বলে খেলা। উভয় দলের ক্রিকেটারদের জন্যই তা একেবারে নতুন। তাই দীর্ঘদিন পর টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়ার পরই তা কাজে লাগাতে এখন থেকেই প্রস্তুত হচ্ছেন টপঅর্ডার ইমরুল কায়েস। দেশের মাটিতেই গোলাপি বলে অনুশীলন শুরু করেছেন। টেস্ট দলের বাকি সদস্যদের আগামী ৮ নবেম্বর দেশ ছাড়ার কথা রয়েছে। তবে আগেভাগেই যাওয়া হতে পারে ইমরুলের। কারণ টি২০ দলের সদস্য মোহাম্মদ মিঠুন অনুশীলন করতে গিয়ে থুতনিতে আঘাত পেয়েছেন। তিনি পুরোপুরি সুস্থ না হলে শেষ টি২০ ম্যাচের আগেই ভারতে যেতে পারেন ইমরুল। তবে এ বিষয়ে এখনও কিছু জানায়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। গত বছর দেশের মাটিতে জাতীয় দলের জার্সিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ দেখা গেছে ইমরুলকে। নবেম্বরে টেস্ট খেলেছিলেন। এরপর দল থেকে ছিটকে যান তিনি। খেলা হয়নি আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজ, বিশ্বকাপ ও পরে শ্রীলঙ্কা সফরে ওয়ানডে সিরিজ। অবশেষে এবার তিনি ডাক পেয়েছেন ভারত সফরের টেস্ট দলে। মূলত জাতীয় ক্রিকেট লীগে (এনসিএল) এবার রংপুর বিভাগের বিপক্ষে অপরাজিত ২০২ এবং পরে রাজশাহী বিভাগের বিপক্ষে ৯৩ রানের ইনিংস খেলে পুনরায় নির্বাচকদের নজর কাড়েন। অবশ্য এবার ফিরতি রাউন্ডে রংপুরের বিপক্ষে দুই ইনিংসেই ব্যর্থ হয়েছেন, করেছেন ৬ ও ৩ রান। চতুর্থ রাউন্ডে রংপুরের বিপক্ষে খুলনা বিভাগের হয়ে খেলেছেন তিনি। মঙ্গলবার সেই ম্যাচটি শেষ হয়েছে দুপুরের আগেই। আগেরদিনই আউট হয়ে যাওয়ার কারণে সকাল থেকেই বিশ্রামে ছিলেন ইমরুল। ম্যাচ শেষ হয়ে যাওয়ার পর আর সময় নষ্ট করেননি তিনি। নেমে গেছেন অনুশীলনে। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামেই দীর্ঘক্ষণ ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন লাল ও গোলাপি বলে। মূলত ভারত সফরের জন্যই এখন তার এই প্রস্তুতি। কারণ ইন্দোরে প্রথম টেস্ট হবে চিরাচরিত সময়েই এবং খেলা হবে নিয়মিত ব্যবহার করা লাল বলে। আর কলকাতার ইডেনে হবে দিবারাত্রির টেস্ট। দিবারাত্রির টেস্টে সবময়ই ব্যবহার হয়ে থাকে গোলাপি রংয়ের বল। কৃত্রিম আলোয় দেখার সুবিধার ক্ষেত্রে এই রংয়ের বল ব্যবহার হয়ে আসছে। তাই গোলাপি বলে প্রায় দেড় ঘণ্টা ব্যাটিং করেছেন ইমরুল। বোলিং থ্রোয়ারে এ ব্যাটিং অনুশীলন করেন তিনি। ভারতের কিছু ক্রিকেটার নিজেদের প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে কিছুদিন দিবারাত্রির ম্যাচ খেলেছেন। গোলাপি বলের সঙ্গে পরিচিতিও আছে বেশ কয়েকজনের। কিন্তু বাংলাদেশের সব ক্রিকেটারই এ বিষয়ে অনভিজ্ঞ। এমনকি অনুশীলনও করা হয়নি আগে। তবে এবার ইডেন টেস্ট খেলার জন্য গোলাপি বলে অনুশীলন করতেই হচ্ছে। এ বিষয়ে ইমরুল বলেন, ‘খেললে তো অবশ্যই ভাল হতো। কারণ আমরা তো অভ্যস্ত না, ওখানেই প্রথমবার। ভারত কখনও খেলে নাই, আমরাও খেলি নাই। দুইটা দলের জন্যই অভিজ্ঞতা হবে বলা যায়। দুই দলই রোমাঞ্চিত।’ গোলাপি বল তৈরির ব্যবস্থাপনা কিছুটা ভিন্ন। তাছাড়া এই বলের স্থায়িত্ব বাড়াতে উইকেটে কিছুটা ঘাসও রাখতে হয়। সবমিলিয়ে তাই এই বলটি থেকে অনেক বেশি সুইং পাওয়া যায়। অনুশীলন করার পর ইমরুল নিজেও তেমনটাই জানালেন। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হল গোলাপি বল সুইং একটু বেশি করে। যেহেতু আমি প্রথমবার অনুশীলন করলাম হয়তোবা পরবর্তীতে আরেকটু ভাল করে বুঝতে পারব আসলে কি হয়। মিরপুরের উইকেট একটু কঠিন ছিল কিন্তু আমার কাছে মনে হয় গোলাপি বলে সুইংটা বেশি করে।’ লাল বলের সঙ্গে পার্থক্যটা নিয়ে ইমরুল তার পর্যবেক্ষণ থেকে বলেন, ‘সিম তো একই রকম হয়। তবে বলের যে পিচ আপটা হয় লাল বলের ক্ষেত্রে উজ্জলতাটা নষ্ট হতে একটু সময় লাগে। কিন্তু গোলাপি বলে আমি যতটুকু খেললাম আমার কাছে মনে হয় যে উজ্জলতা দ্রুত কমে যাচ্ছে। তবে বলের নতুনত্ব যতক্ষণ থাকবে সুইংটা একটু বেশি করবে।’ ১৪ নবেম্বর বাংলাদেশ-ভারত প্রথম টেস্ট শুরু হবে ইন্দোরে। এরপর ২২ নবেম্বর কলকাতায় দিবারাত্রির টেস্ট। সফরের শুরুতেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ দল। এটি দলের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে নিঃসন্দেহে। ইমরুল বলেন, ‘ভারতের মাটিতে গিয়ে আমরা একটা ম্যাচ জিতেছি। এটা অবশ্যই দলকে অনেক আত্মবিশ্বাসী করবে, অনেক অনুপ্রাণিত করবে।’
×