ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইরাকে জনতার শক্তি দেখাল প্রতিবাদকারীরা

প্রকাশিত: ০৯:০৪, ৬ নভেম্বর ২০১৯

ইরাকে জনতার শক্তি দেখাল প্রতিবাদকারীরা

বাগদাদে এক অস্থায়ী তল্লাশি চৌকিতে দায়িত্ব পালনরত ইরাকী এক ব্যক্তিকে বললেন, আমি দুঃখিত আপনাকে যেতে দিতে পারি না। এ ইরাকী রাজধানী বাগদাদে বিভ্রান্ত পুলিশদের প্রতি এক আত্মতৃপ্ত হাসি ছুড়ে দিয়ে যানবাহন চলাচলে সিগনাল দিচ্ছিলেন। -এএফপি। বিক্ষোভ প্রদর্শনে সরকারের সান্ধ্য আইন ও সড়ক অবরোধে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়ার এক মাস পর ইরাকীরা রুল বুক ছুড়ে ফেলেছে। সম্প্রতি এক বিকেলে পুলিশ কর্মকর্তরা একই স্ট্রিটে কংক্রিট দেয়ালের সারি নির্মাণ করে তাহরির স্কয়ারে প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। রাজধানীতে বিক্ষোভ প্রদর্শনের জন্য এ স্কয়ার হচ্ছে একটি গ্রাউন্ড জিরো। পুলিশ মোটরচালিত তুকতুক নামে একটি লাল রঙের রিক্সাকে প্রবেশে বাধা দিলে রিক্সাটি ক্যাচক্যাচ শব্দে একটি ট্রাকের সামনে থেমে যায়। বিক্ষোভকারীরা এ্যাকশনে নামে। ইরাকী যুবকরা তাহরির স্কয়ারের প্রবেশ পথ খুলে দেয়ার জন্য পুলিশের ওপর চাপ প্রয়োগ করে। অভাবনীয়রূপে পুলিশ সদয় হয়। থেমে থাকা ট্রাকটিতে প্রতিবন্ধকগুলো তুলে নেয়ার পর বিজয়ী টুকটুক সামনে অগ্রসর হয়। বিক্ষোভকারীরা কাছে একটি লেখা ঝুলিয়ে রেখেছে। তাতে লেখা রয়েছে, জনগণের নির্দেশে স্কয়ার খুলে দেয়া হয়েছে। অবাধ দুর্নীতি ও বেকারত্বের অসন্তোষে বিক্ষোভ শুরু হয় ১ অক্টোবর। বিক্ষোভে সহিংসতায় নিহত হয়েছে কয়েক ডজন লোক। বিক্ষোভকারীরা গত মাসের শেষের দিক থেকে তাদের আন্দোলন অহিংস প্রতিরোধে রূপান্তর করে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ইরাকীরা স্কুল, মহাসড়ক, প্রধান সেতু ও সরকারী ভবনগুলোর কাছে অবস্থান ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছে। বিক্ষোভকারীদের নতুন স্লোগান হচ্ছে ‘দেশ নেই? ক্লাশ নেই।’ ইরাকে বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুলগুলোর হাজার হাজার ছাত্র ও শিশু এ নতুন স্লোগান ত্যাগ করে সংস্কারের দাবি পূরণ ছাড়া তারা কি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যাবেন? শিক্ষকদের সিন্ডিকেটের ধর্মঘটের সম্প্রসারণ ঘটিয়েছে যদিও কর্মকর্তাদের কাছ থেকে হুমকি এসেছে, বিক্ষোভরত ছাত্ররা ও স্টাফ আইনগত পদক্ষেপের শিকার হবেন। বড় বড় শহরগুলোতে সরকারী প্রশাসন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তারা বিশাল ব্যানারে নতুন কর্তৃপক্ষের ঘোষণা দিচ্ছেন। সরকারের প্রাদেশিক রাজধানী বাগদাদ থেকে ২শ’ কিলোমিটার দক্ষিণে দাইওয়ানিয়া সত্যিকারভাবে এক আবর্জনাপূর্ণ স্থানে পরিণত হয়েছে। গত মাসে বিক্ষোভকারীদের হামলার পর ভবনগুলো বন্ধ রয়েছে। সম্প্রতি এক বিক্ষোভে প্রাণকেন্দ্র ব্রিটিশ ম্যান্ডেটের বিরুদ্ধে ১৯২০ সালের ইরাকী বিপ্লবের জন্য পরিচিত রুমাইথা শহরে এক বিক্ষোভকারী একটি মেগাফোনে বলেন, আমরা সকল সরকারী কর্মচারী ও যানবাহনের ওপর সান্ধ্য আইন ঘোষণা করছি এবং সকল দলের প্রধান দফতর বন্ধের ঘোষণা দিচ্ছি। তার ঘোষণায় তার চারপাশের বিক্ষোভকারীরা উল্লাসে মেতে ওঠে। কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণের জন্য দক্ষিণাঞ্চলে শহরগুলোতে সান্ধ্য আইন জারি করলেও আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে এবং বাসিন্দারা কড়াকড়ি মেনে চলছে না। সামরিক বাহিনী গত সপ্তাহে বাগদাদে মধ্যরাত থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত নৈশকারফিউ ঘোষণা করে। ওইদিনই বিকেলে তাহরিরে বৃহত্তম বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়।
×