ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পাইলট সমিতির সম্মেলন

আকাশপথের যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে

প্রকাশিত: ১১:৪০, ৫ নভেম্বর ২০১৯

আকাশপথের যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আকাশপথের যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি পাইলটদের ফ্লাইট সেফটিতে গুরুত্ব দিতে হবে। ফ্লাইট অপারেশন করার ক্ষেত্রে প্রতিটি জায়গায় দক্ষ জনবল নিয়োগের বিষয়টি নিরাপত্তার খাতিরেই নিশ্চিত করতে হবে। সোমবার (৪ নবেম্বর) সকালে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব এয়ারলাইন পাইলটস এ্যাসোেিয়শনের (ইফাআলফা) এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিমান পরিচালনার ক্ষেত্রে সব অংশীজনকে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের আহ্বান জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিমান পরিচালনা একটি পেশাগত দক্ষতার বিষয়। ফ্লাইট অপারেশন করার ক্ষেত্রে প্রতিটি জায়গায় দক্ষ জনবল নিয়োগের বিষয়টি নিরাপত্তার খাতিরেই নিশ্চিত করতে হবে। বিমান পরিচালনার ক্ষেত্রে যাত্রীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টি মাথায় রাখলে বিমান দুর্ঘটনা সংক্রান্ত যেকোন বিষয় প্রতিরোধ করা সম্ভব। বাংলাদেশী পাইলটের দক্ষতার প্রশংসা করে মাহবুব আলী বলেন, ‘আমি যখনই বাংলাদেশী কোন বিমানে ভ্রমণ করি, তখন এই ভেবে নিশ্চিন্ত হই যে, আমি বাংলাদেশী দক্ষ পাইলটের তত্ত্বাবধানে রয়েছি। যেমন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময়ই বলে থাকেন ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলটরা বিশ্বের অন্যতম সেরা পাইলট।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক আমরা আমাদের সব বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ আধুনিকায়নের কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ কর্মসূচীর আওতায় অচিরেই তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এছাড়াও সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কক্সবাজার বিমানবন্দর, চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও যশোর বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণসহ নতুন টার্মিনাল ভবনের নির্মাণ কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশের উদীয়মান এভিয়েশন খাত বিকাশে আমাদের প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত আন্তরিক। এভিয়েশন খাতের বিকাশে নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে বর্তমান সরকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন- বাংলাদেশের আকাশে নিরাপদ চলাচলে সদা সচেষ্ট সিভিল এভিয়েশন। ফ্লাইট সেফটিই সিভিল এভিয়েশনের মূল কাজ। এক্ষেত্রে বিন্দুুমাত্র ছাড় দেয়া হয় না। বাংলাদেশের এয়ারক্রাফট এক্সিডেন্ট ইনভিস্টিগেশন গ্রুপের (এএআইজি) প্রধান ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন এম রহমতউলাহ বলেন, আধুনিক যুগে এবং পূর্বেও যতগুলো দুর্ঘটনা ঘটেছে তার কারণ, পাইলটদের অনিরাপদ অবতরণের চেষ্টার কারণে। কিন্তু পাইলট যদি অবতরণ না করে গো এ্যারাউন্ড করে আবার চেষ্টা করতেন, তাহলে হয়তো দুর্ঘটনা ঘটত না। গত ২০ বছরে অবতরণের সময় ৯৫ শতাংশ দুর্ঘটনার কারণ গো এ্যারাউন্ড না করার কারণে। ইফাআলফা’র সম্মেলন প্রসঙ্গে বাংলাদেশ এয়ারলাইন পাইলটস এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান বলেন- ‘মূলত এশিয়ার প্যাসেফিক মিটিং করা হচ্ছে, এই অঞ্চলে যে এয়ারলাইন্সগুলোর আকাশপথে চলাচলে সেফটির মানকে আরও বাড়ানো। এটিই হলো মূল উদ্দেশ্য। এই আঞ্চলিক মিটিং সারাবিশ্বেই বিভিন্ন জায়গায় আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশে এ্যাভিয়েশন সেক্টরটা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা চাচ্ছি, এই সেক্টরে চলাচলকে আরও কতটুকু বৃদ্ধি করা যায়। সবাই মিলে কিভাবে আকাশপথটাকে নিরাপদ করতে পারি, এটি উত্তরোত্তর আরও নিরাপদ হয় এটি বৃদ্ধি করাই মূল উদ্দেশ্য। এবার বিশ্বের ৩৫ দেশের ৪৫ জনের বেশি প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন। আরও তিন দিন সেফটি ও সিকিউরিটির বিষয়ে আলোচনা হবে। ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান বলেন- বাংলাদেশের পাইলটরা বিশ্বমানের। পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এই ধরনের সেমিনার মিটিং অনেক বেশি প্রয়োজন। ফ্লাইট সেফটির বিষয়ে আলোচনা হবে। আমাদের সমন্বয় আরও বাড়লে নিরাপদ বিমান চলচলের মান আরও বাড়বে। আমরা চাচ্ছি, বাংলার আকাশ পুরোটাই যাত্রীদের জন্য নিরাপদ হোক।
×