ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ত্রিপুরার প্রতিনিধি দলকে সংবর্ধনায় জিএম কাদের

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে

প্রকাশিত: ১১:৩৯, ৫ নভেম্বর ২০১৯

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ভাল থাকলেও জনগণের মধ্যে এখনও দূরত্ব রয়ে গেছে। ফেনী নদীর পানি, তিস্তা চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মনে বিরূপ মনোভাব রয়েছে। এই দূরত্ব কমিয়ে আনা দরকার। দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’ সোমবার রাজধানীর শান্তিনগরের হোটেল হোয়াউট হাউসে সার্ক কালচারাল সোসাইটি আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের স্পীকার রেবতি মোহন দাসসহ ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলকে সংগঠনের পক্ষ থেকে এ সংবর্ধনা দেয়া হয়। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যে সমস্যা ছিল তা মিটে গেছে দাবি করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নির্মূল করা হয়েছে। এখন দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি ভারত ফেনী নদীর পানি নেয়ায় এদেশের মানুষের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। যদিও পানির পরিমাণ খুবই কম। ভারত আমাদের তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা দিচ্ছে না। এটা নিয়েও জনমনে ক্ষোভ রয়েছে। আবার এনআরসি নিয়েও বাংলাদেশে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে। তবে এখনও এনআরসি আমাদের জন্য কোনও সমস্যা তৈরি করবে না বলে আশ^াস দেয়া হয়েছে। এক দেশ আরেক দেশের সহায়তায় এগিয়ে আসতে হবে। সম্পর্কের বন্ধন আরও দৃঢ় করতে হবে। অনুষ্ঠানে ত্রিপুরার স্পীকার রেবতি মোহন দাস বলেন, ‘ত্রিপুরার ৮০ ভাগ সীমান্ত বাংলাদেশের সঙ্গে। এজন্য মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের অনেক মানুষ ত্রিপুরায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। এবার বাংলাদেশে এসে আমরাও দলমত নির্বিশেষে আতিথেয়তা পেয়েছি। বাংলাদেশ আমাদের বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী। আমাদের বন্ধন আত্মীয়তার। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার অনুপ চেটিয়াসহ বিচ্ছন্নতাবাদীদের নির্মূল করেছে উল্লেখ করে রেবতি মোহন বলেন, ‘এতে আমাদের সমস্যা দূর হয়েছে। এখন ফেনী নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণ করায় দুই দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণ ঘটেছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার হয়েছে। ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক যোগাযোগের জন্য বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বাড়বে। এ সম্পর্ক আরও বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, আগামীতেও যে কোন প্রয়োজনে আমরা একে অপরের সহায়তায় হাত বাড়িয়ে দেব। দুদেশের চাওয়া পাওয়া সম্পর্ক উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সার্ক কালচারাল সোসাইটির সভাপতি ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাধারণ সম্পাদক সুজন দে, ত্রিপুরার বিজেপির বিধায়ক আশীষ কুমার সাহা, আগরতলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক প্রণব সরকার, অসমের সাংস্কৃতিক সংগঠক ড. সৌমিন ভরাদিয়া, সুনীল শুভ রায় প্রমুখ। কাদের বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অত্যন্ত শক্তিশালী। এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকলে বাংলাদেশ অনেক বেশি লাভবান হবে। তিনি বলেন, ভারতের অনেক রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের ঐতিহ্যগতভাবেই সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত মিল রয়েছে। অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তার বন্ধন রয়েছে বন্ধুপ্রতিম দুটি দেশের মানুষের মধ্যে। বাংলাদেশ সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সীমান্তবর্তী সন্ত্রাস নির্মূল হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অসমের ন্যাশনাল রেজিস্ট্রি অব সিটিজেন্স এনআরসি বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশকে আশ^স্ত করেছে এর কোন বিরূপ প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে না। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও বারবার বলেছেন এনআরসির প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে না। সভাপতির বক্তৃব্যে বাবলা বলেন, দুদেশের সম্পর্ক অনেক গভীর। ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অনেক সহায়তা করেছে। আমরাও ভারতকে অনেক কিছু দিয়েছি। আমরা একে অপরের পরিপূরক।
×