ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

হারের শঙ্কায় রংপুর, বরিশাল, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ১০:০৩, ৪ নভেম্বর ২০১৯

 হারের শঙ্কায় রংপুর, বরিশাল, চট্টগ্রাম

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জাতীয় ক্রিকেট লীগের (এনসিএল) চতুর্থ রাউন্ডের দুইদিন শেষ হয়েছে। এরমধ্যেই হারের বিপদে পড়ে গেছে রংপুর, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগ। দ্বিতীয়দিনে খুলনা বিভাগের মেহেদী হাসান শুধু সেঞ্চুরি করতে পারেন। রংপুরের রবিউল হক নেন ৫ উইকেট। প্রথম স্তর ॥ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে খুলনার আব্দুর রাজ্জাকের (৭/৬৯) অসাধারণ বোলিংয়ে রংপুর প্রথম ইনিংসে ২২৪ রানেই গুটিয়ে যায়। এরপর রবিউল হকের (৫/৪১) গতিময় বোলিংয়ের সামনে পড়ে খুলনার অবস্থাও কাহিল হয়। প্রথম ইনিংসে ২৩৩ রানেই অলআউট হয় খুলনা। মাত্র ৯ রানে এগিয়ে থাকে খুলনা। মেহেদী হাসান (১১৯ রান) যদি সেঞ্চুরি না করতেন তাহলে আরও আগেই গুটিয়ে যেত খুলনা। আর কোন ব্যাটসম্যানই যে ৪০ রানের ঘরেই যেতে পারেননি। ২ উইকেটে ২৪ রান করে প্রথমদিন শেষ করে খুলনা। দ্বিতীয়দিন আর ২০৯ রান করতেই ৮ উইকেট হারায়। শেষ সেশনে গিয়ে খুলনা অলআউট হয়। এরপর রংপুর মহাবিপদে পড়ে যায়। দ্বিতীয়দিন শেষ হওয়ার আগেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে। এবারও রাজ্জাকের (৩/১২) দ্যুতিময় বোলিংয়ের সামনে পড়ে বিপদগ্রস্ত হয় রংপুর। খুলনা থেকে ৫৮ রানে এগিয়ে গেলেও দ্বিতীয় ইনিংসে হাতে ৬ উইকেট আছে। বাকি থাকা উইকেটগুলোতে যদি বিশাল স্কোর না গড়া যায় তাহলে রংপুরের হার নিয়তি হতে পারে। খুলনা জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারে। কক্সবাজারে প্রথমদিন রাজশাহীর (২৩০/১০) ইনিংস শেষ হতেই দিনও শেষ হয়। দ্বিতীয়দিন ঢাকা বিভাগ ব্যাটিংয়ে নামে। তাইবুর রহমানের অপরাজিত ৯৩ ও শুভাগত হোমের অপরাজিত ৯২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৮৪ রান করে ঢাকা। ১০৪ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর তাইবুর ও শুভাগত মিলে পঞ্চম উইকেটে ১৮০ রানের জুটি গড়েন। তাতে ঢাকার স্কোর বড় হচ্ছে। আজ তৃতীয়দিনে এই দুইজনই সেঞ্চুরি পূরণ করার চেষ্টা করবেন। দলের স্কোর আরও বড় করবেন। এখন ঢাকা ৫৪ রানে এগিয়ে রয়েছে। দ্বিতীয় ইনিংসে রাজশাহী যদি ভাল ব্যাটিং করে তাহলে ম্যাচ ড্র হয়ে যেতে পারে। নাহলে যে কোন কিছু ঘটতে পারে। হার যে কোন দলের কপালে জুটতে পারে। দ্বিতীয় স্তর ॥ কক্সবাজারে প্রতিশোধ নেয়ার মুখে আছে সিলেট। প্রথম রাউন্ডে বরিশালের কাছে বাজেভাবে হার হয়েছে সিলেটের। এবার উল্টো ফল মিলতে পারে বরিশালের। প্রথমদিনেই বরিশালকে ১৬২ রানে গুটিয়ে দেয় সিলেট। এবাদত হোসেনের (৫/৩৬) গতির কাছে হার মেনে প্রথম ইনিংসে অল্পতেই অলআউট হয় বরিশাল। এরপর সিলেট প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শানাজ আহমেদের (৭৩), জাকির হাসানের (৫৩) দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ৩২২ রানের বড় স্কোর গড়ে। প্রথম ইনিংসেই ১৬০ রানে এগিয়ে যায় সিলেট। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে ১ উইকেট হারিয়ে বরিশাল ১২ রান করতেই দ্বিতীয়দিন শেষ হয়ে যায়। এখনও সিলেট থেকে ১৪৮ রানে পিছিয়ে রয়েছে বরিশাল। কোন ব্যাটসম্যান বিশাল কিছু না করলে বরিশালের হার নিশ্চিতই বলা চলে। নাটকীয়তার না দেখা মিললে বরিশাল হারের পথেই আছে। তা ইনিংস হার হবে না উইকেটের হার; তাই দেখার অপেক্ষা। ফজলে মাহমুদ রাব্বি (৭*) ও মোহাম্মদ আশরাফুল (২*) আজ দলকে বড় স্কোরের পথে নিয়ে যেতে ব্যাট হাতে নামবেন। চট্টগ্রামে স্বাগতিক দলের অবস্থাও কাহিল। ঢাকা মেট্রো প্রথম ইনিংসেই ৪০৩ রান করে। শাদমান প্রথমদিনেই ১৬২ রান করেছিল। দ্বিতীয়দিন আরও ১৬ রান যোগ করে ২৭৬ বলে ২৩ চার ও ২ ছক্কায় ১৭৮ রান করে আউট হয়ে যান। শাদমান দলের ৩৮০ রানে আউট হওয়ার পর দল শেষ পর্যন্ত ৪০৩ রান করতে পারে। এরপর চট্টগ্রাম ব্যাট হাতে নেমে ৯১ রানেই গুটিয়ে যায়। শরিফুল্লাহর (৪/৩০) সঙ্গে তাসকিন আহমেদের (৩/৩৪) অসাধারণ বোলিংয়ে কাত হয় চট্টগ্রামের প্রথম ইনিংস। ফলোঅনে পড়ে যায় দলটি। আবার ব্যাট হাতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে ৯৬ রান করে দ্বিতীয়দিন শেষ করে। ঢাকা মেট্রো থেকে এখনও ২১৬ রানে পিছিয়ে রয়েছে চট্টগ্রাম। প্রথম ইনিংসে যে হাল দেখা গেছে, ওপেনার সাদিকুর রহমান সর্বোচ্চ ২২ রান করতে পেরেছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে পিনাক ঘোষ (৫৫*) হাল ধরলেও আজ তৃতীয়দিনে কী তা বজায় থাকবে? ইনিংস হারের মুখেই পড়ে গেছে চট্টগ্রাম। এখন এখান থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারলেই হলো। স্কোর ॥ খুলনা-রংপুর প্রথম স্তরের ম্যাচ- মিরপুরে রংপুর প্রথম ইনিংস- ২২৪/১০; রিশাদ ৪২, নাসির ৪০; রাজ্জাক ৭/৬৯ ও দ্বিতীয় ইনিংস- ৬৭/৪; সোহরাওয়ার্দী ২৪, মেহেদী ২৩; রাজ্জাক ৩/১২। খুলনা প্রথম ইনিংস- প্রথমদিন ২৪/২ ও দ্বিতীয়দিন ২৩৩/১০; মেহেদী ১১৯, রুবেল ৩৬*; রবিউল ৫/৪১। ঢাকা-রাজশাহী প্রথম স্তরের ম্যাচ- কক্সবাজার রাজশাহী প্রথম ইনিংস- ২৩০/১০; শান্ত ৫৬, মুক্তার ৫৬*; সুমন ৩/৪৩। ঢাকা প্রথম ইনিংস- ২৮৪/৪; তাইবুর ৯৩*, শুভাগত ৯২*; সানজামুল ৩/১০৬। সিলেট-বরিশাল দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচ- কক্সবাজার বরিশাল প্রথম ইনিংস- ১৬২/১০; নুরুজ্জামান ৪০; এবাদত ৫/৩৬ ও দ্বিতীয় ইনিংস ১২/১; রাব্বি ৭*, আশরাফুল ২*। সিলেট প্রথম ইনিংস- প্রথমদিন ৮২/১; শানাজ ৩২* ও দ্বিতীয়দিন ৩২২/১০; শানাজ ৭৩, জাকির ৫৩; মনির ৩/৬৯। ঢাকা মেট্রো-চট্টগ্রাম ম্যাচ- চট্টগ্রামে ঢাকা মেট্রো প্রথম ইনিংস- প্রথমদিন ৩৫৭/৪; শাদমান ১৬২*, জাবিদ ৭* ও দ্বিতীয়দিন ৪০৩/১০; শাদমান ১৭৮; হাসাম ৩/৭২। চট্টগ্রাম প্রথম ইনিংস- ৯১/১০; সাদিকুর ২২; শরিফুল্লাহ ৪/৩০, তাসকিন ৩/৩৪ ও দ্বিতীয় ইনিংস- (ফলোঅন); ৯৬/৩; পিনাক ৫৫*, তাসামুল ১৪*।
×