ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিক্ষোভে টালমাটাল ইরাক ও লেবানন

প্রকাশিত: ০৮:৩৭, ৪ নভেম্বর ২০১৯

 বিক্ষোভে টালমাটাল ইরাক ও লেবানন

ইরাক ও লেবাননের রাজধানীতে শুক্রবার পর্যন্ত জনসমাবেশস্থল এবং প্রধান সড়কগুলো অবরোধ করে রাখতে দেখা যায়। দীর্ঘ দ্বন্দ্বের জের ধরে দেশ দুটিতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে কয়েক হাজার মানুষ সমবেত হয়েছিল, যাদের মধ্যে বেশিরভাগ তরুণ ও বেকার যুবক জনসভা এবং শহরের প্রধান সড়কগুলো অবরুদ্ধ করে রেখেছে। এপি। ইরাকে চলমান সহিংসতায় বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ সরাসরি গুলি ও টিয়ার শেল গ্যাস চালিয়ে এবং অনেককে পিটিয়ে মারতে দেখা গেছে। দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি মাসে অস্থিরতার এক মুহূর্তে ৩০ জন মারা গিয়েছিল। বিক্ষোভগুলোতে এই মাসে এখন পর্যন্ত ১৭৯ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। অপরদিকে লেবাননে প্রতিবাদ শিবিরে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোন্দল শুরু হয়েছিল এবং নবম দিনে এসে বিক্ষোভগুলো এখন দেশটিকে নাগরিক অবাধ্যতা অভিযানকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। যুদ্ধোত্তর পরবর্তী রাজনৈতিক ব্যবস্থা এবং এক শ্রেণীর অভিজাত নেতারা এই বিক্ষোভগুলো থামানোর চেষ্টা করেছিলেন যা উভয় দেশকে গৃহযুদ্ধের সংঘর্ষ থেকে বিরত রেখেছিল। ইরাক ও লেবাননের বিক্ষোভকারীদের সবচেয়ে প্রচলিত স্লোগানগুলোর মধ্যে যেটা বেশি শোনা গিয়েছিল তা হলো ‘চোর! চোর!’। কারণ এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কয়েক দশক ধরে জনসাধারণের অর্থ চুরি এবং সম্পদ আহরণের অভিযোগ রয়েছে। নেতৃত্ববিহীন বিদ্রোহগুলো তাদের নিজ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষেত্রে নজিরবিহীন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে তারা যে বৈপ্লবিক পরিবর্তনটির জন্য আহ্বান জানাচ্ছে তা ক্ষমতা-ভাগকারী সরকারগুলোকে ভেঙ্গে দেবে যা মূলত সাম্প্রদায়িক বৈরিতা ধারণ করে এবং ইরান ও তার সশস্ত্র স্থানীয় ঘনিষ্ট মিত্র নেতাদের বহিষ্কার করবে। তবে তাদের অভিযোগ নতুন নয়। লেবাননের গৃহযুদ্ধের অবসানের তিন দশক পরে এবং মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক বাহিনীর ইরাক আগ্রাসনের ১৬ বছর পরে, দেশ দুটির রাজধানীগুলোর রাস্তায় প্রতিবাদগুলো এখনও গর্জনের সঙ্গে প্রতিধ্বনিত হয়। প্রতি কয়েক বছর পর সেখানে নির্বাচন হয় এবং প্রতিবারের মতো মনে হয় একই দলের লোকেরা জিতেছে। লেবাননে ১৯৭৫-১৯৯০ গৃহযুদ্ধের অবসানের পর সা¤প্রদায়িক শক্তি ভাগ করে নেয়ার ব্যবস্থাগুলো খ্রীস্টান, শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে শক্তি ও অনেক সাহস যুগিয়েছিল। এটি বেশিরভাগই শান্তি বজায় রেখেছে। কিন্তু সাবেক যুদ্ধবাজদের স্থায়ী রাজনৈতিক শ্রেণীতে পরিণত করেছে। আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে হোয়াটসএ্যাপে পরিকল্পিত ছিল দেশটিতে প্রতিবাদের শেষ উৎস। ইরাকে শিয়া, সংখ্যালঘু সুন্নি ও কুর্দীদের মধ্যে একই ব্যবস্থা দুর্নীতিবাজদের দিকে পরিচালিত করেছে। পক্ষগুলো মন্ত্রীদের ওপর ঝাঁকুনি দিচ্ছে যাতে তারা তাদের সমর্থকদের চাকরি ও সহায়তা দিতে পারে। ইসলামিক স্টেট গ্রুপের বিরুদ্ধে বিধ্বংসী যুদ্ধ তেল সমৃদ্ধ দেশটির কয়েক দশক পুরনো অর্থনৈতিক সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছিল।
×