ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সৌদি থেকে ফিরলেন আরও ৭৫ জন

প্রকাশিত: ১০:৩৭, ৩ নভেম্বর ২০১৯

 সৌদি থেকে ফিরলেন আরও ৭৫ জন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সৌদি আরব থেকে শ্রমিক ফেরত পাঠানো থামছেই না। প্রতিদিন প্রতি সপ্তাহেই আসছে। এ মাসের প্রথমদিনেই সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন আরও ৭৫ বাংলাদেশী। শুক্রবার রাত সাড়ে বারোটায় সৌদি এয়ারলাইন্স এসভি ৮০৪ ফ্লাইটে দেশে ফেরেন তারা। এ নিয়ে গত তিনদিনে মোট ৩৩২ বাংলাদেশীকে ফিরতে হলো। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক সূত্রে জানা গেছে- পরিস্থিতি ভাল নয়। এভাবে অতীতে কখনও শ্রমিকদের ফেরত আসতে দেখা যায়নি। রাতে বিমানবন্দরেই অনেককে কান্নায় ভেঙ্গে পড়তে দেখা যায়। তাদেরই একজন নরসিংদীর সজিব হোসেন জানান, তিনি ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ করে আলফালা কোম্পানিতে গিয়ে ছিলেন মশা নিধন কর্মী হিসেবে কাজ করতে। কিন্তু গিয়ে কাজ পান একটি সাপাই কোম্পানিতে। তবে এক বছরেও কোন বেতন পাননি। উপায়ন্তর না দেখে বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে শূন্য হাতে দেশে ফিরলেন। ফরিদপুরের মামুন মিয়া জানান, সাড়ে চার বছর ধরে সৌদি আরবে ছিলেন। আকামা নবায়নের জন্য কফিলকে (নিয়োগকর্তা) টাকাও দিয়েছিলেন। কিন্তু কফিল আকামা নবায়ন করেননি। অভিযানে গ্রেফতার হলে কফিল তার দায়িত্বও নেয়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাসুম মিয়ার অভিযোগ, আট মাসের আকামার মেয়াদ থাকলেও রাস্তা থেকে ধরে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে পাঠানো হয়েছে তাকে। তিনি বলেন, সৌদি আরবে নয় বছর বৈধ আকামা নিয়ে কাজ করতেন। কেন তাকে পাঠানো হলো জানেন না। মৌলভীবাজারের জুয়েল জানান, মাত্র এক মাস আগে গিয়েছিলেন। কিন্তু ধরপাকড়ের অভিযানে তাকেও শূন্য হাতে দেশে ফিরতে হলো। একইভাবে ফেনীর মিজবাহ আড়াই মাস, গাইবান্ধার মাহাবুব পাঁচ মাস, সাদিরুল সাত মাস, কুমিল্লার জুয়েল আট মাস আগে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। কিন্তু ধরপাকড়ে তাদের খালি হাতে দেশে ফিরতে হয়। বরাবরের মতো গতকালও ফেরত আসা কর্মীদের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় বেসরকারী সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য জরুরী সহায়তা প্রদান করা হয়। ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচীর প্রধান শরিফুল হাসান জানান, চলতি বছর এখন পর্যন্ত প্রায় ২১ হাজার বাংলাদেশীকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সেপ্টেম্বর থেকে ধরপাকড়ের পরিমাণ বেড়েছে। শুক্রবার যারা ফেরত এসেছেন তাদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছেন যারা কয়েকমাসে আগে সেখানে গিয়েছিলেন। অনেকে জানিয়েছেন, তাদের যে কাজ দেয়ার কথা ছিল সেই কাজ পাননি। দীর্ঘদিন ধরে থাকা কয়েকজন বলছেন কেন তাদের পাঠানো হলো জানেন না। কয়েকজন বলছেন আকামা নবায়নের জন্য তারা টাকা দিয়েছিলেন কিন্তু নিয়োগকর্তা সেটি নবায়ন করেনি। এখন পুলিশ ধরলেও তারা দায়িত্ব নিচ্ছেন না। এই ধরনের প্রতিটা ঘটনায় দায়ীদের জবাবদিহিতা জরুরী।
×