ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মোদির সামনে কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুললেন মেরকেল

প্রকাশিত: ০৯:০০, ৩ নভেম্বর ২০১৯

 মোদির সামনে কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুললেন  মেরকেল

দুদিনের ভারত সফরে চলমান কাশ্মীর সঙ্কট নিয়ে মুখ খুলেছেন জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মেরকেল। এতে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে ক্ষমতাসীন মোদি সরকার। মার্কেলের এ সফরে এখন পর্যন্ত দুদেশের মধ্যে ১১টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আরও পাঁচটি চুক্তিপত্রের যৌথ ঘোষণা হয়েছে। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যদের কাশ্মীরে নিয়ে গিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বার্তা দেয়ার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই কাশ্মীর ইস্যুতে ইউরোপের অন্যতম ক্ষমতাশীল এই নেতার মন্তব্যে উভয়ের সম্পর্কে অস্বস্তির ভাঁজ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। শনিবার জার্মান চ্যান্সেলর আঞ্জেলা মার্কেলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দীর্ঘ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর এক বিশদ যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে দুই দেশ। সংবাদ সম্মেলনে দুই রাষ্ট্রনেতা বাণিজ্যিক ও কৌশলগত, দুটি ক্ষেত্রেই সমন্বয় গভীর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান। মোদির সঙ্গে বেঠকে মার্কেল পাকিস্তানের নাম উচ্চারণ না করে আন্তসীমান্ত সন্ত্রাসের নিন্দা জানান। ওইদিন রাতেই তার সঙ্গে আসা বিদেশী সাংবাদিকদের মার্কেল কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে কথা বলেন। যদিও তা ভারতীয় সরকারের চাওয়া ছিল না। এ সময় মার্কেল কাশ্মীরে শান্তি আনয়নে ভারতের মোদি কী পদক্ষেপ নিয়েছেন তা জানতে চেয়ে বলেন, ‘কাশ্মীরের পরিস্থিতি অত্যন্ত নড়বড়ে। সেখানকার উন্নতি প্রয়োজন। কাশ্মীর ইস্যু ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও, আমি প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাই।’ জার্মান চ্যান্সেলরের এমন মন্তব্যে তাৎক্ষণিকভাবে এর জবাব দেননি মোদি। তার এমন মন্তব্যে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। এমন সময়ে মার্কেল দিল্লী সফরে আসলেন, যখন রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা খুইয়ে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ। আগস্টে মোদি সরকার কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পরই জার্মানি একে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলেছির। বিষয়টি নিয়ে তৃতীয় পক্ষের মাথা গলানো উচিত নয়। বিবৃতিটি দেয়া হয়েছিল জার্মান ভাষায়। ফলে এই নিয়ে তখন বিশেষ প্রচার হয়নি। সম্প্রতি দেশটির পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, কাশ্মীর থেকে অবিলম্বে বিধি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে জনজীবনে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনা উচিত। তিন দিন আগে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের জার্মান প্রতিনিধি নিকোলাউস ফেস্টও কাশ্মীর সফর করে বলেছিলেন, সেখানকার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। কিন্তু নিকোলাউস অতি দক্ষিণপন্থী ও জার্মানির ঘরোয়া রাজনীতিতে মার্কেলের দল থেকে তার দলের অবস্থান অনেকটাই আলাদা হওয়ায় মোদি ভেবেছিলেন তার এ মন্তব্য মার্কেলের ওপর প্রভাব পড়বে না। কিন্তু তা হয়নি। মার্কেল সেখানকার পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানান। তবে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মোদি মার্কেলকে জানান, কাশ্মীর পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ৩৭০ অনুচ্ছেদ সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণগুলোও তুলে ধরেন তিনি। কিন্তু তার পরেও দেখা গেল, মার্কেলের মন্তব্যে নিকোলাউসের সেই মন্তব্যেরই অনুরণই রয়ে গিয়েছে। -এনডিটিভি
×