স্টাফ রিপোর্টার ॥ বর্ণাঢ্য আয়োজনে গ্রাম থিয়েটার সম্মেলন ও সেলিম আল দীন উৎসব শুক্রবার সকালে উদ্বোধন করা হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী নাট্য সংগঠন বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার আয়োজিত তিন দিনব্যাপী এ উৎসবের স্লোগান ‘হাতের মুঠোয় হাজার বছর আমরা চলেছি সামনে’। রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার উন্মুক্ত চত্বরে সারাদেশ থেকে আসা শত শত কর্মীদের নিয়ে বেলুন উড়িয়ে বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার অষ্টম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এ সময় শিমুল ইউসুফের নেতৃত্বে জাতীয় সঙ্গীত ও দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পীরা। জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা ও গ্রাম থিয়েটারের পতাকা উত্তোলন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ও গ্রাম থিয়েটারের সভাপতি নাসিরউদ্দিন ইউসুফ।
উদ্বোধনের পরে আলোচনা পর্ব ও সেলিম আল দীন পদক প্রদান করা হয়। আলোচনা পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। গ্রাম থিয়েটারের সভাপতি নাসিরউদ্দিন ইউসুফের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন গ্রাম থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক তৌফিক হাসান ময়না, গ্রাম থিয়েটারের সভাপতিম-লীর সদস্য অধ্যাপক আফসার আহমেদ ও কাজী সাইদ হোসেন দুলাল, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ও সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামাল বায়েজীদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের স্বপ্নদ্রষ্টা সেলিম আল দীনকে স্মরণ করেন বক্তারা।
কে এম খালিদ বলেন, সংস্কৃতির শক্তি দিয়ে মৌলবাদকে প্রতিহত করা সম্ভব। মৌলবাদকে ঠেকাতে গ্রামে যেতে হবে। গ্রামের মানুষের মাঝে সংস্কৃতির আলো জ্বালাতে হবে।
নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বলেন, মৌলবাদ ও মানবতাবিরোধী শক্তির অপতৎপরতায় মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি হুমকির সম্মুখীন। একই সঙ্গে সামাজিক অনাচার ও দুর্নীতির সংস্কৃতি আমাদের তরুণ সমাজকে বিপথগামী করছে। একমাত্র মানবিক সংস্কৃতিই পারে আত্মঘাতী মানবজাতি তথা বাংলাদেশকে ভয়াবহ পরিণতি থেকে রক্ষা করতে।
অনুষ্ঠানে সেলিম আল দীন পদক প্রদান করা হয় বাংলাদেশ মহিলা সমিতিকে। বাংলাদেশের নাগরিক নাট্যচর্চায় এ মহিলা সমিতির মঞ্চ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। এ মঞ্চে অভিনয় করেই অনেক নাট্যকর্মী সৃষ্টি হযেছে। সুস্থ সংস্কৃতি চর্চায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবেই মহিলা সমিতিকে এ পদক প্রদান করা হয়। সমিতির পক্ষে পদক গ্রহণ করেন সিতারা আহসানুল্লাহ তানিয়া বখ্্ত। তানিয়া বখ্্ত বলেন, মহিলা সমিতিকে বাংলাদেশের মঞ্চ নাটকের সূতিকাকার বলা হয়। দীর্ঘ চার দশক পর মহিলা সমিতিকে বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার প্রদত্ত এই পদক, এই স্মৃতি সম্মান আমরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করলাম। আমার মনে হচ্ছে উপযুক্ত সন্তানেরা তার মাকে তার শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করল। এই সম্মান আমি মহিলা সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. নীলিমা ইব্রাহীম ও প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদিকা বেগম আইভী রহমান ও তদানীন্তন সাংস্কৃতিক সম্পাদক বেগম খালেদা সারোয়ারকে উৎসর্গ করলাম।
অনুষ্ঠানে একইসঙ্গে ‘মীর মকসুদ-উস-সালেহীন-বজলুল করিম সম্মাননা’ ও ‘ফওজিয়া ইয়াসমিন শিবলী পদক’ প্রদান করা হয়। ‘মীর মকসুদ-উস-সালেহীন-বজলুল করিম সম্মাননা’ প্রদান করা হয় আহমেদ ইকবাল হায়দারকে। ফওজিয়া ইয়াসমিন শিবলী পদক প্রদান করা হয় নাট্যকর্মী রুমা মোদককে।
সম্মেলনের পাশাপাশি প্রতিদিন সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালায় নাটক মঞ্চস্থ হবে।
বেঙ্গলে ‘নগরনামা’ প্রদর্শনী শুরু ॥ বেঙ্গল ইনস্টিটিউটের ‘নগরনামা’ শিরোনামে প্রদর্শনী শুরু হয়েছে ধানমণ্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভী ও স্থপতি শিক্ষাবিদ অধ্যাপক শামসুল ওয়ারেস। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন বেঙ্গল ইনস্টিটিউটের পরিচালক কাজী খালেদ আশরাফ। এছাড়া বক্তব্য রাখেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের ও বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি জালাল আহমেদ।
বেঙ্গল ইনস্টিটিউট দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল ও শহর নিয়ে গবেষণা করেছে এবং গবেষণালব্ধ, সুচিন্তিত বসবাসের প্রস্তাবনা ও উদাহরণ তৈরি করেছে। বিগত বছরগুলোতে বিভাগীয় শহরসহ কয়েকটি ছোট শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানের পরিকল্পনা ও নকশা তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া দেশ ও বিদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের পরিচালনায় উচ্চমানের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়েছে।
প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত এবং চলবে ৩০ নবেম্বর পর্যন্ত বেঙ্গল শিল্পালয়ের কামরুল হাসান প্রদর্শনশালায়।