ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

চোরাকারবারের নিরাপদ রুট সিলেট সীমান্ত

প্রকাশিত: ০৮:১৯, ২ নভেম্বর ২০১৯

 চোরাকারবারের নিরাপদ রুট সিলেট সীমান্ত

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ সিলেটের জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট সীমান্ত চোরাকারবারের নিরাপদ রুট। প্রতিদিন এ দুই উপজেলার সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে বিভিন্ন মালামাল আদান প্রদান হচ্ছে। জানা গেছে, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং জিরো পয়েন্ট, সংগ্রাম সীমান্ত ফাঁড়ি, সেনাটিলা, তামাবিল, নলজুরী এবং জৈন্তাপুর উপজেলার খাঁসিনদী, আলু বাগান, মোকামপুঞ্জি, শ্রীপুর, মিনাটিলা, ছাগল খাউরী নদী, কাঁঠালবাড়ী, কেন্দ্রী হাওর, কেন্দ্রীবিল, ডিবিরহাওর, ডিবিরহাওর (আসামপাড়া), ঘিলাতৈল, ফুলবাড়ী, টিপরাখলা, কমলাবাড়ী, গুয়াবাড়ী, বাইরাখেল, হর্নি, কালিঞ্জী, ময়না, জালিয়াখলা, লালাখাল, লালাখাল গ্রান্ড, জঙ্গীবিল, বাঘছড়া, তুমইর, বালিদাঁড়া, ইয়াংরাজা, সিঙ্গারীরপাড় দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন পণ্য চোরাচালান হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে মটরশুটি, মশুর ডাল, রসুন, স্বর্ণেরবার ভারতে পাচার হয়। আর ভারত থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ, ইয়াবা, ফেনসিডিল, নিম্নমানের চা-পাতা, কসমেটিক্স, সুপারি, হরলিক্স, সিগারেট, নাছির বিড়ি ও ভারতীয় গরু বাংলাদেশে আসছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, প্রতিদিন সন্ধ্যা হতে না হতেই জৈন্তাপুর বাজার থেকে বড় বড় ট্রাকযোগে নিয়ে আসা মটরশুটি, মশুর ডালসহ বিভিন্ন পণ্য উল্লেখিত সীমান্ত নিয়ে আসা হয়। এরপর এপার থেকে চলে যায় ওপারে, ওপার থেকে পণ্য আসে এপারে। এমনকি দিনে দুপুরেও চোরাচালান হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিজিবির অভিযানে মাঝেমধ্যে বিভিন্ন পণ্য জব্দ করলেও চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন টমটম চালক এবং ট্রাকচালক বলেন, ‘পেটের দায়ে আমরা চোরাইপণ্য সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে দিয়ে আসি, আবার ভারতীয় বিভিন্ন পণ্য নিয়েও আসি। এসব পণ্য সামগ্রী আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে কোন সমস্যায় পড়তে হয়নি। কারণ হিসেবে তারা বলেন, সীমান্ত প্রশাসনের লাইনম্যানের সঙ্গে পণ্যের মালিকগণ চুক্তির (লাইন ম্যানেজ) মাধ্যমে এসব পণ্য আদান প্রদান করেন। মাঝে মধ্যে কেউ লাইন ম্যানেজ না করলে সেই মাল আটকা পড়ে বলে শুনেছি। তবে আমরা কখনও আটকা পড়িনি। মাদক সামগ্রীর বিষয় জানতে চাইলে তারা বলে কার্টুনের মধ্যে কি থাকে আমরা কখনও দেখিনি, কারণ সময় খুব কম থাকে, দ্রুত নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দিতে হয়। এ বিষেয়ে জৈন্তাপুর উপজেলার অধীনস্থ দুটি ব্যাটালিয়ন ক্যাম্প ও কোম্পানি কামান্ডারদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে। আমরাও বিভিন্নভাবে মালামাল আটক করছি। লাইনম্যান সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, বিজিবির কোন লাইনম্যান বা সোর্স নাই, আমাদের নামে কেউ আর্থিক লেনদেন করলে কখনও অভিযোগ আসেনি। চোরাচালান বন্ধে বিজিবি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
×