ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নির্মাণ হচ্ছে আধুনিক বিপণিবিতান

দর্শক শূন্যতায় বন্ধ গাইবান্ধার সিনেমা হল

প্রকাশিত: ০৮:০৭, ২ নভেম্বর ২০১৯

 দর্শক শূন্যতায়  বন্ধ গাইবান্ধার  সিনেমা হল

আবু জাফর সাবু, গাইবান্ধা ॥ গাইবান্ধার জেলা ও উপজেলা এমনকি বড় বড় হাট-বাজারে আগে ছিল জমজমাট সব সিনেমা হল। আর তখন বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম হওয়ায় সিনেমা হলগুলোতে দর্শক সংখ্যাও ছিল অনেক বেশি। প্রতিটি হলে সকালে, দুপুরে, সন্ধ্যায় ও রাতে আগে চারটি প্রদর্শনী চললেও প্রতিটি প্রদর্শনীতে নারী-পুরুষ দর্শকে পরিপূর্ণ থাকত। কিন্তু এখন সে অবস্থা আর নেই। সেজন্য দর্শক শূন্যতায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে গাইবান্ধার সিনেমা হলগুলো। বন্ধ সিনেমা হলগুলো ভেঙ্গে ফেলে সেখানে তৈরি করা হচ্ছে আধুনিক সব বিপণিবিতান। এতে সিনেমা হলে কর্মরত বিপুলসংখ্যক শ্রমিক কর্মচারী বেকার হয়ে এখন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। জেলার সাতটি উপজেলায় সিনেমা হল ছিল ৩২টি। এর মধ্যে জেলা শহরে ছিল তিনটি। আর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদরে ছিল তিনটি এবং মহিমাগঞ্জে তিনটি, পলাশবাড়ি সদরে দুটি এবং এ উপজেলার কোমরপুরে দুটি ও ঢোলভাঙ্গায় দুটি, সাদুল্যাপুর সদরে একটি, ধাপেরহাটে দুটি ও নলডাঙ্গায় দুটি, সুন্দরগঞ্জ সদরে দুটি, বামনডাঙ্গায় দুটি, সাঘাটা সদরে দুটি ও বোনারপাড়ায় দুটি, ফুলছড়ি সদরে দুটি, কালিরবাজারে একটি ও জুমারবাড়িতে একটি। এছাড়া গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাদিয়াখালীতে একটি ও দারিয়াপুরে ইতিপূর্বে ছিল দুটি সিনেমা হল। কিন্তু দর্শক শূন্যতায় এখন এই জেলায় নিয়মিত সিনেমা হল চালু রয়েছে মাত্র দুটি। এর মধ্যে একটি হচ্ছে জেলা শহরে তাজ সিনেমা হল আর অপরটি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদরের হিরক সিনেমা হল। এছাড়া মাঝে মধ্যে অনিয়মিতভাবে চলে আরও তিনটি হল। এগুলো হলো- পলাশবাড়ির কোমরপুর, সুন্দরগঞ্জে এবং সাঘাটার জুমারবাড়িতে একটি সিনেমা হল। জেলার দুটি প্রাচীন সিনেমা হল মায়া ও চৌধুরী সিনেমা হল ভেঙ্গে এখন সেখানে মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। সেই বন্ধ হয়ে যাওয়া চৌধুরী সিনেমা হলের মালিক আব্দুল মান্নান চৌধুরী জানালেন, সিনেমা হল বন্ধের অন্যতম কারণ হলো হলে এখন দর্শক চাহিদা পূরণ করার মতো ভাল মানের সিনেমা তৈরি হচ্ছে না। তদুপরি দেশী-বিদেশী টিভি চ্যানেলগুলোতে প্রতিদিন, একাধিক উন্নতমানের নতুন পুরাতন ছবি ঘরে বসেই দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়া এখন ইউটিউব, ইন্টারনেট থেকে সহজেই পছন্দ মতো সিনেমা নিজের মোবাইলে ডাউনলোডে দেখা যায়। এসব কারণেই সিনেমা হলে দর্শক আসে না। আর দর্শক চাহিদা না থাকায় অর্থ ব্যয় করে ভাল সিনেমাও বানাচ্ছে না পরিচালকরা। এ কারণেই সিনেমা ব্যবসা ছেড়ে অন্য ব্যবসায় ঝুঁকে পড়তে বাধ্য হচ্ছে সিনেমা হল মালিকরা।
×