ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের মূল্য আরেক দফা বেড়েছে

প্রকাশিত: ১০:১৬, ১ নভেম্বর ২০১৯

 খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের মূল্য আরেক দফা বেড়েছে

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ পেঁয়াজের বাজারমূল্য আরেক দফা বেড়েছে। পাইকারি বাজারে মূল্যবৃদ্ধির এ ঘটনা খুচরা পর্যায়ের বাজারকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলবে। তবে আশার কথা যে, আগামী সোমবার চীন থেকে আসছে পেঁয়াজের চালান। এর পরপরই তুরস্ক থেকে আমদানির বড় চালানটি বন্দরে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারতীয় পেঁয়াজের রফতানি বন্ধ হওয়ার পর এখন দেশজুড়ে যে পেঁয়াজ সরবরাহ হচ্ছে তা চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজার থেকে। প্রতিদিন ট্রাকে ট্রাকে বোঝাই হয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে পেঁয়াজ। মূলত মিয়ানমারের পেঁয়াজই বেশি যাচ্ছে। তবে ওপারের সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিয়েছে আগামী একসপ্তাহ পর মিয়ানমারের পেঁয়াজ রফতানি হয়ে আসার পরিমাণ কমে যাবে। কারণ সে দেশের পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের মজুদ কমে গেছে। বৃহস্পতিবার খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের প্রধান পাইকারি বাজারে মিয়ানমার ও ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজিতে ১০ টাকা হারে বেড়েছে। বুধবার যে পেঁয়াজ কেজিতে ১শ’ টাকা বিক্রি হয়েছে বৃহস্পতিবার তা ১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অনুরূপভাবে ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ১১৫ টাকায় উন্নীত হয়েছে। তবে ইতিপূর্বে আনা তুরস্কের পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৮৫ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাজার সূত্র জানিয়েছে, ব্যবসায়ীদের কেউ পেঁয়াজ মজুদ করে রাখছেন না। মূলত এ ঘটনা দুই কারণে। প্রথমত. পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য। অপরদিকে, পেঁয়াজের বাজারে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে প্রশাসনিক অভিযান চলে আসছে। সঙ্গত কারণে বন্দর থেকে খালাসের সঙ্গে সঙ্গে এবং মিয়ানমারের পেঁয়াজ টেকনাফ হয়ে চট্টগ্রামে আসার পর পরই আড়তে চলে যায় এবং সেখান থেকে ট্রাকযোগে পাইকারি বিক্রিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যাচ্ছে। সূত্র জানিয়েছে, এখনও পেঁয়াজের যে জোগান রয়েছে এবং মূল্য যে পর্যায়ে পৌঁছেছে এতে আর অবনতি না ঘটলে আগামী সপ্তাহের পর মূল্য ধীরে ধীরে কমার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশা করা হচ্ছে। বড় চালানে চীন এবং তুরস্কের পেঁয়াজ চলে আসলে দেশীয়, ভারতীয় এবং মিয়ানমারের পেঁয়াজের মূল্যের ঝাজ কমে যেতে বাধ্য। উল্লেখ করা যেতে পারে, গত একমাসের বেশি সময় ধরে পেঁয়াজের বাজারমূল্য লাফাতে লাফাতে ১শ’ টাকার ওপরে গিয়ে টালমাটাল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। পেঁয়াজের বাজারমূল্যের এ উর্ধগতির কারণে দেশের কিছু স্থানে সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ সমাবেশও করেছে। দেশে এ ঘটনা নজিরবিহীন। তুরস্ক থেকে অতীতে পেঁয়াজ আসলেও চীন থেকে সাধারণ পেঁয়াজ আসে না। আদা, রসুন আমদানি হয়ে আসার ঘটনা রয়েছে। কিন্তু এবার চীন থেকেও নিয়ে আসছে ব্যবসায়ীরা। বাজার পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, যেন পেঁয়াজ ছাড়া মানুষের একদিনও চলে না। বিষয়টি বিস্ময়কর। খোদ প্রধানমন্ত্রী মানুষকে কম করে পেঁয়াজ খাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পেঁয়াজের বাজারের এমন পরিস্থিতিতে আগ্রহী মহলে বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে। আগামী সপ্তাহের পর মূল্য হ্রাস পেলে তা নতুন মোড় নিলে সর্বত্র আশার সঞ্চার করার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে বাজার সূত্র জানিয়েছে, পেঁয়াজের বাজার নিয়ে সিন্ডিকেটসহ যত অপবাদ দেয়াই হোক না কেন, মূলত বিষয়টি শতভাগ সত্যি নয়। কেননা, আমদানি পর্যায়েই মূল্য বৃদ্ধি ঘটেছে। ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়ার পর অন্য রফতানিকারক দেশ সুযোগ বুঝে মূল্য বাড়িয়েছে। আর আমদানির পর কয়েক হাত ঘুরে ক্রেতা পর্যায়ে পৌঁছানোর পর স্বাভাবিকভাবে মূল্য বেড়ে যায়। এ বিষয়টিকে অনেকে সিন্ডিকেটের কারসাজি বললেও তা সত্য নয় বলে দাবি করেছে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।
×