ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘সাকিবের প্রতি অবিচার করা হয়েছে’

প্রকাশিত: ১১:৫১, ৩১ অক্টোবর ২০১৯

 ‘সাকিবের প্রতি অবিচার করা হয়েছে’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জুয়াড়ির কাছ থেকে ক্রমাগত ‘নক’ পাওয়া সত্ত্বেও সেটি ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি কিংবা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) না জানানোয় সকল ধরনের ক্রিকেট থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন সাকিব আল হাসান। তবে তিনি দায় স্বীকার করে শাস্তি মেনে নেয়ায় এর মধ্যে এক বছর নিষেধাজ্ঞা স্থগিত থাকবে। টাইগার অলরাউন্ডার এ সময়ে ফের সামান্যতম ক্রিকেটীয় অপরাধে জড়ালে আগের শাস্তিই (দুই বছর) কার্যকর হবে। সাকিবের নিষেধাজ্ঞা কেবল ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’ নয়, বিশ্ব গণমাধ্যমেও ফলাও করে প্রচারিত হচ্ছে। কথা বলছেন দেশ-বিদেশের বর্তমান ও সাবেক তারকারা। সাকিবের এমন নিষেধাজ্ঞায় ব্যথিত রাহুল দ্রাবিড়। প্রতিক্রিয়ায় সাবেক ভারত অধিনায়কের টুইট, ‘অবিশ্বাস্য। সাকিবের শাস্তিটা বেশি কঠোর হয়ে গেল না? সে কি ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত ছিল? আমার মনে হয়, তার অপরাধ হলো আইসিসি এবং এন্টি করাপশন ইউনিটকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব সংক্রান্ত বিষয়ে জানায়নি। এ জন্য দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা বেশিই কঠিন হয়ে গেছে। আশাকরি আইসিসি সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে।’ বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার কোন অপরাধ করেননি; তবে মারাত্মক একটা ভুল করেছেন। তিনি জাতীয় অধিনায়ক, এমসিসি সদস্য হয়েও ম্যাচ ফিক্সিংয়ের তথ্য আইসিসিকে জানাননি। যে কারণে তাকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হতে হয়েছে। ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন সাকিব। তার এ শাস্তিকে ‘লঘু পাপে গুরুদ-’ বলে মনে করছেন রাহুল দ্রাবিড়। এখন ভারতীয় কিংবদন্তির কথা বিশ্ব ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা আইসিসির কানে গেলে বাংলাদেশের জন্য মঙ্গল। অন্যথায় মহাবিপাকে পড়বে দেশের ক্রিকেট। তাকে ছাড়াই কমপক্ষে ৩৬টি ম্যাচ খেলতে হবে টাইগারদের। আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় টি২০ বিশ্বকাপেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। যদিও আইন বলে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সুযোগ নেই। কারণ অপরাধ এবং শাস্তি দুটোই মেনে নেয়ায় আপীল করার সুযোগ হারিয়েছেন সাকিব এবং এটি তিনি বুঝেশুনেই করেছেন। আইসিসির দুর্নীতি দমন কমিশনে এ সংক্রান্ত আইন ভীষণ কঠিন। আপীল করে হেরে গেলে শাস্তির মাত্রা আরও বেড়ে যেত। বিশ্ব তারকার নিষেধাজ্ঞা রীতিমতো বিশ্বক্রিকেটে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে। সাকিবকে আইসিসি নিষিদ্ধ করার পর বিশ্বের খ্যাতনামা ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা নিজেদের মতামত প্রকাশ করেছেন। কেউ পক্ষে, আবার কেউ বিপক্ষে। সাকিবের এই শাস্তিতে সমর্থন দিয়ে সাবেক পাকিস্তান ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার রমিজ রাজার টুইট, ‘সব ক্রীড়াপ্রেমী ও ক্রীড়াবিদদের জন্য সাকিবের শাস্তি একটি শিক্ষা; আপনি যদি নিয়ম-নীতিকে পাশ কাটিয়ে খেলার চেয়েও বড় হতে চান তাহলে চরম পতনের জন্যও তৈরি থাকুন বেদনার।’ এ্যাশেজ জয়ী সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইকেল ভনও একমত, ‘সাকিব আল হাসান যে শাস্তিই পাক না কেন, কোন সমবেদনা নেই। এ যুগে খেলোয়াড়রা কি করতে পারবে আর কি পারবে না তা সবসময়ই বলা হয় এবং তাদের কি কি জানাতে হবে সেটাও বলা হয়। দুই বছর পর্যাপ্ত নয়। আরও বড় শাস্তি হওয়া উচিত ছিল।’ জনপ্রিয় ভারতীয় ধারাভাষ্যকার হার্ষা ভোগলে বলেন, ‘সাকিব অনেক বড় মাপের ক্রিকেটার। পাশাপাশি অধিনায়ক। তিন-তিনবার প্রস্তাব পেয়েও গোপন রেখেছে। এটা সত্যিই আশ্চর্যজনক।’ ভোগলে যোগ করেন, ‘অনেকেই বলছেন যে, শাস্তিটা কঠিন হয়ে গেছে। তবে আমি বলতে চাই যে, সাকিব আসলে সৌভাগ্যবান যে, তাকে দুই বছরের মধ্যে এক বছরে স্থগিত শাস্তি দেয়া হয়েছে।’
×