ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৩০ পৌরসভায় দশ কোটি ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

প্রকাশিত: ১০:২৭, ৩১ অক্টোবর ২০১৯

 ৩০ পৌরসভায় দশ কোটি ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সুপেয় পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশনের উন্নয়নসহ ৩০ পৌরসভায় সেবার সক্ষমতা বাড়াতে সরকারকে ১০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশী মুদ্রায় যা প্রায় ৮শ’ ৬০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ মিউনিসিপ্যাল ওয়াটার সাপ্লাই এ্যান্ড স্যানিটেশন প্রকল্পের আওতায় ৬ লাখ নাগরিক উপকৃত হবেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বুধবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে। ইআরডি সচিব মনোয়ার আহমেদ ও বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি মার্সি মিয়াং টেম্বন চুক্তিতে সই করেন। এছাড়া একই প্রকল্পে সমপরিমাণ ঋণ দিচ্ছে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি)। চুক্তি অনুযায়ী, পাঁচ বছরের রেয়াতকালসহ ৩০ বছরে এই ঋণ বাংলাদেশকে দুই শতাংশ সুদসহ পরিশোধ করতে হবে। অনুষ্ঠানে ইআরডি সচিব মনোয়ার আহমেদ বলেন, পার্শ্ববর্তী অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশনে ভাল করছে। আর এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। পৌরসভাগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়বে। প্রকল্পটি যাতে সময় মতো বাস্তবায়ন হয় সেজন্য মনিটরিং অব্যাহত রাখতে হবে। স্বচ্ছ ও যথাযথভাবে অর্থ ব্যবহার করতে হবে, যাতে জনগণ উপকৃত হতে পারেন। বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি মার্সি মিয়াং টেম্বন বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সংশ্লিষ্ট জনগণ সুপেয় পানি পাবে। ড্রেন উন্নয়ন ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থারও উন্নয়ন করা হবে। যথাসময়ে ও স্বচ্ছভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে হবে। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করায় মহিলাদের পানি সংগ্রহ সহজ হবে। এছাড়াও শিশুরা পানিবাহিত রোগ থেকে দূরে থাকতে পারবে। ফলে তাদের স্কুলে উপস্থিতি নিশ্চিত হবে। তাছাড়া এসডিজির ছয় নম্বর গোল বাস্তবায়নে সহায়তা করবে প্রকল্পটি। এক প্রশ্নের জবাবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান বলেন, দেশের ১৪৮টি পৌরসভার ওপর স্টাডি করা হয়েছে। সেখান থেকে ৫০টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশনের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব করা হলে উন্নয়ন সহযোগী এবং আমরা মিলে ৩০টি পৌরসভা নির্ধারণ করেছি। পাইপের মাধ্যমে পানি সরবরাহের পাশাপাশি টিউবওয়েল এবং প্রয়োজনে অন্যভাবে পানি সরবরাহ করা হবে বলেও জানান তিনি। প্রকল্পটি ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়। চুক্তি সই অনুষ্ঠানে জানানো হয়, নির্ধারিত ৩০টি পৌরসভায় সুপেয় পানি সরবরাহ, উন্নত স্যানিটেশন ব্যবস্থা স্থাপন এবং পৌরসভাগুলোতে সেবা দেয়ার সক্ষমতা বাড়ানো হবে। প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে, পৌরসভাগুলোর পাইপলাইনে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা স্থাপন ও উন্নয়ন করা, ৯০টি পাবলিক টয়লেট স্থাপন, বাড়িঘরে ৯ হাজার উন্নত ল্যাট্রিন নির্মাণ, বিদ্যমান পানির উৎসগুলো পুনরুজ্জীবিতকরণ, পানির মিটার স্থাপন, গারবেজ ট্রাক ক্রয়, পৌরসভার জন্য ভেকু সংগ্রহসহ অন্য যন্ত্রপাতিও সংগ্রহ করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট খরচ ধরা হয়েছে ২০ কোটি ৯৫ লাখ মার্কিন ডলার; যা স্থানীয় মুদ্রায় ১ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংকের ঋণের বাইরে এআইআইবি ঋণ দেবে ১০ কোটি ডলার এবং সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে বাকি ৯৫ লাখ ডলার ব্যয় করা হবে। জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলার তারাবো পৌরসভা, টাঙ্গাইলের মধুপুর, ধনবাড়ী, ভুয়াপুর পৌরসভা, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া, চট্টগামের বাঁশখালী, চান্দনাইশ পৌরসভা, কুমিল্লার হোমনা, দেবিদ্বার পৌরসভা, ফেনীর পরশুরাম, লক্ষ্মীপুরের রামগতি, নোয়াখালীর সেনবাগ, বগুড়ার কাহালু ও শিবগঞ্জ পৌরসভা। এছাড়াও জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি, আক্কেলপুর পৌরসভা, নাটোরের বনপাড়া, বড়াইগ্রাম পৌরসভা, চাঁপাইনবাগঞ্জের নাচোল পৌরসভা, রাজশাহীর কাটাখালী, তাহিরপুর, বাঘা পৌরসভা, সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ ও উল্লাপাড়া, যশোরের চৌগাছা, মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভা, মৌলভীবাজারের বড়লেখা ও কমলগঞ্জ এবং জামালপুরের ইসলামপুর পৌরসভায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
×