ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সাধন সরকার

সমন্বিত উদ্যোগ চাই

প্রকাশিত: ০৯:১৫, ৩১ অক্টোবর ২০১৯

 সমন্বিত উদ্যোগ চাই

প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। নিরাপদ সড়কের দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলনের পরও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরেনি! সড়কে ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলছেই। মহাসড়কে ধীরগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়নি। আবার সড়কে ঠিকঠাক সাইন-সংকেতও কাজ করছে না। পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যেও শৃঙ্খলা ফেরেনি! কেননা বেশিরভাগ মালিকরা এখনও চালকদের ‘যত টিপ তত টাকার’ ওপর বেতন দিয়ে থাকেন! এতে করে দ্রুত টিপ দিতে সড়কে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন চালকরা। প্রতিদিন সম্ভাবনাময় ও স্বপ্নের অনেক জীবন সড়ক দুর্ঘটনার বলি হচ্ছে। সারাদেশের সড়ক দুর্ঘটনার অর্ধেক ঘটে রাজধানীতে। রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করে চালকদের বেপরোয়া যানবাহন চালানো। এ ছাড়া রয়েছে চালকদের নিয়ম-কানুন মানাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনীহা, গাফিলতি ও অন্যায় করে চালকদের পার পেয়ে যাওয়ার সংস্কৃতি। সরকারের কঠোর পদক্ষেপ, আইনের প্রয়োগ, মালিকপক্ষের দায় ও জবাবদিহিসহ চালকদের মধ্যে আরও বেশি সতর্কতা ও ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করা গেলে সড়ক নিরাপদ থাকবে বলে মনে করি। তাই সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, সংস্থা ও সংগঠনকে আরও আন্তরিক হতে হবে। মালিক ও চালকদের অতি লোভ পরিহার করতে হবে। মালিকপক্ষ থেকে চালকদেরকে স্বাভাবিক বিশ্রাম দিতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধে শুধু আইন করলেই হবে না, আইনের পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের পাশাপাশি লাগাতার চেষ্টা ও উদ্যোগ সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামাতে পারে। যা হোক, সড়ক দুর্ঘটনার লাগাম টেনে ধরতে কিছু বিষয়ে নজর দিতে হবে-১. চালকদের বেপরোয়া মনোভাব ও গতি রুখতে সচেতনতা ও প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিতে হবে। ২. চালকদের যথাযথ প্রশিক্ষণের পরই কেবল ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করতে হবে। ৩. সড়কে পুলিশ ও মোবাইল কোর্টকে আরও সক্রিয় করতে হবে। ৪. মহাসড়কে ছোট যান চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। ৫. বিভিন্ন দুর্ঘটনাপ্রবণ মোড় ও ট্রাফিক পয়েন্ট সংস্কার করতে হবে। ৬. গাড়ির গতির ওপর ভিত্তি করে আলাদা লেন করার পাশাপাশি ফুটপাথ দখলমুক্ত রাখতে হবে। ৭. বিভিন্ন কোম্পানি না রেখে একটি রুট একটি কোম্পানির হাতে ছেড়ে দেওয়ার পাশাপাশি তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। ৮. এ খাতে সব ধরনের চাঁদা বাণিজ্য বন্ধসহ চালকদের চুক্তিভিত্তিক গাড়ি চালানো বন্ধ করতে হবে। ৯. বেসরকারী খাতের দৌরাত্ম্য কমাতে রাজধানীসহ সারাদেশে আরও বেশি সরকারী আধুনিক গণপরিবহন চালু করতে হবে। ১০. দুর্ঘটনা কমাতে সড়কের ওপর চাপ কমিয়ে রেল ও নদীপথকে কাজে লাগাতে হবে এবং। ১১. সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পথচারী, চালক-মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে ইত্যাদি। সূত্রাপুর, ঢাকা থেকে
×