ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় দম্পতিকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন

প্রকাশিত: ০৯:৩৫, ৩০ অক্টোবর ২০১৯

 যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় দম্পতিকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ বাগমারা উপজেলার হামিরকুৎসা ইউনিয়নের কোনাবাড়িয়া গ্রামে স্ত্রীকে যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় স্বামী দিনমজুর জালাল উদ্দীন (৪২) ও স্ত্রী শাবানাকে (৩৩) অমানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। তাদের রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে জখম করেছে প্রভাবশালী সেকেন্দার ও জেকের আলীসহ তাদের লোকজন। খবর পেয়ে বাগমারা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বামী জালাল উদ্দীনকে অজ্ঞান ও স্ত্রী শাবানা বিবিকে ঝুলন্ত বস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ওই ঘটনায় আহত শাবানা বাদী হয়ে ৭ জনকে আসামি করে বাগমারা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা দায়েরের পর থেকেই দিনমজুর জালাল উদ্দীন তার পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে মঙ্গলবার তার স্ত্রী শাবানা বাগমারা প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেছেন। নির্যাতনের শিকার শাবানা জানান, গত ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় সেকেন্দার আলী সেকেন (৪৫) ও তার ভাই জেকের আলী (৪২) পর্যায়ক্রমে তার বাড়িতে প্রবেশ করে তাকে যৌন হয়রানির করে। স্বামী জালাল উদ্দীন বাড়িতে আসলে ঘটনাটি তিনি তাকে জানান। জালাল উদ্দীন অভিযুক্ত সেকেন্দার আলীর বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর যৌন হয়রানির বিষয়টি জানতে চাইলে বাড়ির লোকজন জালাল উদ্দীনকে রশি দিয়ে বেঁধে পিটিয়ে জখম করেন। এ সময় জালাল উদ্দীন চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। বিষয়টি জানতে পেরে স্ত্রী শাবানা স্বামী জালাল উদ্দীনকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে গেলে সেকেন্দার ও জেকের আলীর নির্দেশে তাদের লোকজন তাকেও শ্লীলতাহানি করে এবং রশি দিয়ে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেন। খবর পেয়ে এলাকার লোকজন তাদের উদ্ধারে এগিয়ে গেলেও তাদের হাতে থাকা বিভিন্ন ধরনের ধারালো অস্ত্রের কারণে পিছু হটে। এলাকার লোকজন বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে অবহিত করলে তার লোকজন ঘটনাস্থলে যায় এবং তাদের সেকেন ও জেকের লোকজন ধাওয়া দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন পরে বাগমারা থানার পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঝুলন্ত নারী শাবানা ও অজ্ঞান অবস্থায় তার স্বামী জালাল উদ্দীনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এদিকে চিকিৎসা শেষ না হতেই প্রভাবশালীরা চিকিৎসকের সঙ্গে যোগসাজশে তিন দিন পর একদিনের চিকিৎসার ছাড়পত্র দিয়ে হাসপাতাল থেকে বিদায় করে দেন। প্রভাবশালীদের কারণে এখনও বাড়িতে ফিরতে পারেনি নির্যাতিত পরিবারের সদস্যরা। বাচ্চা নিয়ে অন্যের বাড়িতে রয়েছে বলে জানা গেছে।
×