ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ময়মনসিংহে জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৯:৩১, ৩০ অক্টোবর ২০১৯

 ময়মনসিংহে জলাবদ্ধতা  দূরীকরণ প্রকল্পে   ব্যাপক অনিয়ম

স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ ॥ নগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্প বাস্তবায়নে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও আন্ডার গ্রাউন্ড পাইপলাইন স্থাপনে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে-টেন্ডারের সিডিউল মতো কাজ না করে চুক্তিবদ্ধ ঠিকাদারের প্রতিনিধি লিটন মিয়া সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের তোয়াক্কা না করে কাজ করছেন খেয়াল খুশিমতো। এমনকি নিম্নমানের কাজ বন্ধ রাখতে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও এলাকাবাসীর বাধাও মানছেন না ঠিকাদারের স্থানীয় এই প্রতিনিধি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ ও হতাশ স্থানীয় এলাকাবাসী কাজের অনিয়ম ও দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে দুদকের তদন্ত দাবি করেছেন। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-এডিবির অর্থায়নে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর মালগুদাম এলাকার রেললাইন থেকে ডেঙ্গু বেপারি রোড ও চামড়া গুদাম হয়ে চরপাড়া মোড় কালভার্ট পর্যন্ত সেহরা খালে আন্ডার গ্রাউন্ড পাইপলাইন স্থাপনের কাজের শুরুতেই এই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ নগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পের আওতায় শহরের সবচেয়ে বড় সেহরা খালে আন্ডার গ্রাউন্ড পাইপলাইন স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে চলতি মাসের গোড়াতে। চরপাড়া মোড়ের কালভার্ট থেকে উজানের চামড়া গুদাম ও ডেঙ্গু বেপারি রোড হয়ে মালগুদাম এলাকার রেললাইনের দিকে কাজ শুরু করা হয়। স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, মধ্যরাতের এই কাজে খালের ময়লাযুক্ত কাঁদাজলে বসানো হচ্ছে আন্ডার গ্রাউন্ড পাইপ। ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মিঞা এলাকাবাসী ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের অভিযোগ স্বীকার করে জানান, টেন্ডারের সিডিউল অনুযায়ী খালের পানি বাইপাসের মাধ্যমে নিষ্কাশনসহ পরিষ্কার করার পর নিচের শুকনা জমিতে বালি দিয়ে ওপরে পাইপ বসানোর শর্ত রয়েছে। এছাড়া আন্ডার গ্রাউন্ড পাইপের সংযোগস্থল আরসিসি ঢালাইয়ের মাধ্যমে করার কথা। অথচ সিটি কর্পোরেশনের কর্তব্যরত প্রকৌশলীর উপস্থিতিতে ইউডিসি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় প্রতিনিধির শ্রমিকরা মধ্যরাতের পর সেচ দিয়ে নামমাত্র পানি সরিয়ে নিচে বালি না দিয়েই কাঁদাজলের ভেতর পাইপ বসাচ্ছে। দুই পাইপের সংযোগস্থল আরসিসি ঢালাই না করে ওপরের অংশে কেবল বালি আর সিমেন্টে প্রলেপ দেয়া হচ্ছে। জলাবদ্ধতা দূরীকরণে নগরবাসীর বহুল প্রত্যাশিত এমন দায়সাড়া কাজে স্থানীয় এলাকাবাসী ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে নিয়ে প্রতিবাদ জানায় এবং কাজ বন্ধ করে দেয়। সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের নিযুক্ত প্রতিনিধি নি¤œমানের কাজ ঠিক করে দেয়াসহ পরবর্তীতে সিডিউল অনুযায়ী করার আশ্বাস দিলে এলাকাবাসী সহযোগিতার কথা জানায়। কিন্তু এক সপ্তাহ না ঘুরতেই ফের খেয়াল খুশিমতো কাজ করছে ঠিকাদারের প্রতিনিধি অভিযোগ স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসীর। নাম প্রকাশ করা হবে না শর্তে স্থানীয় দুই জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর জানান, মেয়রের সুনাম ক্ষুণ্ণ করতেই এলাকাবাসীর আপত্তি অগ্রাহ্য করে গায়ের জোরে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ঠিকাদারের স্থানীয় প্রতিনিধি। প্রকল্প বাস্তবায়নের পর নগরীর মালগুদাম রেললাইন থেকে ডেঙ্গু বেপারি রোড, পুরহিতপাড়া ও চামড়া গুদাম এলাকার জলাবদ্ধতা দূর হবে কীনা এ নিয়েও সন্দিহান স্থানীয়রা। এর কারণ হিসেবে নগরবাসী বলছেন, সেহরা খালের ভাটির অংশ খনন না করেই এই কাজ করা হচ্ছে এবং বিদ্যমান খালের পানি প্রবাহের চেয়ে স্থাপন করা পাইপের সক্ষমতা অনেক কম।
×