ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভিসির অপসারণ দাবিতে জাবিতে ধর্মঘট

প্রকাশিত: ০৯:৩৬, ২৯ অক্টোবর ২০১৯

 ভিসির অপসারণ  দাবিতে জাবিতে  ধর্মঘট

জাবি সংবাদদাতা ॥ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বদ্যালয়ের (জাবি) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে ধর্মঘট কর্মসূচী পালন করছে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ধর্মঘটের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রশাসনিক কার্যক্রমসহ ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ছিল। সোমবার সকাল ৮টা থেকে নতুন ও পুরাতন উভয় প্রশাসনিক ভবন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন একাডেমিক ভবনের প্রধান ফটক আটকে রেখে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ সময় অবরোধের কারণে উপাচার্যসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কেউই অফিসে প্রবেশ করতে পারেননি। অধিকাংশ বিভাগেই অনুষ্ঠিত হয়নি পূর্বনির্ধারিত ক্লাস ও পরীক্ষা। ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ভবন ও কলা ও মানবিক অনুষদ ভবনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভবনে প্রবেশ করার প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়েছে আন্দোলনকারীরা। তবে উপাচার্যপন্থী একাধিক শিক্ষক ধর্মঘট উপেক্ষা করে ক্লাস পরীক্ষা নেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন উপাচার্যপন্থী শিক্ষকেরা। আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করে বলেন, ‘আন্দোলন ঠেকাতে উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা পরীক্ষা দিয়ে রেখেছে। ভিসিকে বাঁচাতে মানবন্ধনে যাওয়ার সময় ক্লাস-পরীক্ষার কথা মনে থাকে না তাদের।’ এ সময় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের উপাচার্যপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা ক্লাস-পরীক্ষা ও গবেষণা করতে চাই। কেউ আসতে চাইলে কাউকে বাধা দেয়ার অধিকার কারও নেই।’ সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদার বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে সর্বাত্মক ধর্মঘট চলছে। এতদিন পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচীতে যাইনি। এখন বাধ্য হয়েছি। আমরা কাউকে জোর করছি না, বরং শিক্ষার্থীরা আমাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছে।’ এদিকে চলমান আন্দোলন প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ বিঘ্নিত হচ্ছে জানিয়ে আন্দোলনকারীদের আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা নিরসনের আহ্বান জানিয়েছে উপাচার্যপন্থী শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সম্মিলিত সংগঠন ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং উন্নয়নের পক্ষে জাহাঙ্গীরনগর’। এ বিষয়ে আন্দোলনককারী শিক্ষক পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু বলেন, ‘ছাত্রলীগের দুইজন নেতা মিডিয়ার সামনে সরাসরি স্বীকার করেছে উপাচার্য তাদের ২৫ লাখ করে টাকা দিয়েছে। উপাচার্য যদি নির্দোষই হতেন তবে তদন্ত করে ওই দুই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেন। এই উপাচার্য তার পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়ে ফেলেছেন। এই দুর্নীতিবাজ উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
×