ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সেমিতে গোকুলাম চ্যালেঞ্জ চট্টগ্রাম আবাহনীর

প্রকাশিত: ১১:৫৫, ২৮ অক্টোবর ২০১৯

সেমিতে গোকুলাম চ্যালেঞ্জ চট্টগ্রাম আবাহনীর

জাহিদুল আলম জয়, চট্টগ্রাম থেকে ॥ দেশীয় ক্লাবগুলার পারফর্মেন্স সন্তোষজনক না হলেও শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবল জমজমাট ও উপভোগ্য হয়ে উঠেছে। বিদেশী ক্লাবগুলোর চোখ ধাঁধানো নৈপুণ্যে সবার চোখেমুখেই তৃপ্তির ঝিলিক। বিশেষ করে ঢাকা আবাহনীর বদলে খেলতে আসা ভারতের গোকুলাম কেরালা ও মালয়েশিয়ান ক্লাব টেরেঙ্গানু এফসির খেলা মুগ্ধ করেছে সবাইকে। এ দু’টি ক্লাব এখন ফাইনালে খেলতে মুখিয়ে আছে। তবে দল দু’টিকে টেক্কা দিচ্ছে স্বাগতিক বাংলাদেশের ক্লাব চট্টগ্রাম আবাহনী ও ভারতের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব মোহনবাগান এ্যাথলেটিক ক্লাব। গ্রুপপর্বের বাধা পেরিয়ে এই চার দল শেষ চারে উঠে এসেছে। এবার ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করার পালা। এই মিশনে আজ সন্ধ্যা ৭টায় প্রথম সেমিফাইনালে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম আবাহনীর মুখোমুখি হচ্ছে ‘বি’ গ্রুপের রানার্সআপ ভারতের গোকুলাম কেরালা। ম্যাচটি জিতে দু’দলই ফাইনালে খেলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। ভারতের ডুরাল্ড কাপ চ্যাম্পিয়ন গোকুলাম কেরালা অপরাজিত থেকে সেমির দ্বৈরথে উঠে এসেছে। তিন ম্যাচের দু’টিতে জয় ও একটিতে ড্র করে ৭ পয়েন্ট নিয়ে তারা গ্রুপ রানার্সআপ হয়। সমান পয়েন্ট নিয়ে তাদের গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হয় টেরেঙ্গানু এফসি। দু’দলের মুখোমুখি পরিসংখ্যান, গোলগড় সবকিছুই সমান হলে বেশি গোল করার সুবাদে এক নম্বর হয় মালয়েশিয়ান ক্লাব। গ্রুপপর্বে গোকুলাম বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসকে ৩-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে মিশন শুরু করে। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে টেরেঙ্গানুর সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে। সর্বশেষ ম্যাচে চেন্নাই সিটিকে হারায় ২-০ গোলে। কোচ ফার্নান্ডো সান্টিয়াগোর শিষ্যরা ধারাবাহিকভাবে চোখ ধাঁধানো পারফর্মেন্স প্রদর্শন করে চলেছে। বিশেষ করে উগান্ডার ফরোয়ার্ড হেনরি কিসেকা ও ত্রিনিদাদ এ্যান্ড টোবাগোর মিডফিল্ডার নাথানিয়েল গার্সিয়া রীতিমতো অপ্রতিরোধ্য। তিনটি ম্যাচেই এ দু’জনকে সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে প্রতিপক্ষের। টুর্নামেন্টে খেলারই কথা ছিল না ভারতের ডুরাল্ড কাপ চ্যাম্পিয়নদের। আচমকা আরেক ক্লাবের বদলি হিসেবে খেলে এখন তারাই আসরের হট ফেবারিট। তবে দলটির কোচ ফার্নান্ডো সান্টিয়াগো আপাতত সেমিফাইনাল নিয়েই ভাবছেন। তিনি স্বীকার করেছেন স্বাগতিক চট্টগ্রাম আবাহনীকে হারিয়ে ফাইনালে খেলতে হলে তাদের সেরাটাই দিতে হবে। গোকুলাম কোচ বলেন, ‘এটা টুর্নামেন্টের সবচেয়ে কঠিন ম্যাচ হতে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম আবাহনী ভাল দল। তার ওপর তারা স্বাগতিক। অনেক দর্শকের সমর্থনও আছে দলটির। এই দলের বিরুদ্ধে জিততে হলে আমাদের সেরাটাই দিতে হবে। তবে আমরা আশাবাদী ভাল করতে। আশা করছি ম্যাচটি জিতে ফাইনালে খেলতে পারব’। অন্যদিকে গোকুলামের মতো ধারাবাহিক পারফর্মেন্স প্রদর্শন করতে পারেনি চট্টগ্রাম আবাহনী। এমনিতেই তারা অনেকটা ভাড়াটে দলে পরিণত হয়েছে। সেরা একাদশের প্রায় অর্ধেক খেলোয়াড়ই অন্য ক্লাব থেকে ধার করে এনেছে বন্দরনগরীর জায়ান্টরা। জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়াকেও তারা সাইফ স্পোর্টিং থেকে অতিথি হিসেবে এনে অধিনায়কের আর্মব্যান্ড পরিয়ে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, কোচ মারুফুল হককেও আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ থেকে এনে ডাগআউটে দাঁড় করিয়েছে। এরপরও দলটির দৃষ্টি শুধু ট্রফিতেই। গ্রুপপর্বে প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টসকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দেয়া আবাহনী দ্বিতীয় ম্যাচে লাওসের ইয়ং এলিফ্যান্টকে হারায় ৪-২ গোলে। তবে শেষ গ্রুপ ম্যাচে কলকাতা মোহনবাগানের কাছে হারতে হয়েছে ১-০ গোলে। এরপরও কোচ মারুফুল হকের দল গোলগড়ে গ্রুপের সেরা হয়েছে। এখন পর্যন্ত চট্টগ্রাম আবাহনীর সেরা পারফরমার অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। দলের প্রথম দুই ম্যাচেই ম্যাচসেরা হন তিনি। এছাড়া দুই বিদেশী নাইজিরিয়ান মিডফিল্ডার চিনেদি ম্যাথুউ ও মন্টেনিগ্রোর স্ট্রাইকার লুকা রটকোভিচ ধারাবাহিকভাবে ভাল করছেন। এবার তাদের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ জিততে চান দলটির সবাই। রবিবার বিকেলে বন্দর মাঠে অনুশীলন শেষে চট্টগ্রাম আবাহনী কোচ মারুফুল হক বলেন, ‘এই পর্যায়ে সব ম্যাচই কঠিন। গোকুলাম অনেক ভাল দল। আমাদের সেরাটাই দিতে হবে। ছেলেরা প্রস্তুত। আমরা জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছি না।’ অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়াও জানিয়েছেন, গোকুলামকে হারাতে প্রস্তুত তার দল।
×