ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পার্বতীপুরের বেলাইচন্ডীতে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু

সৈয়দপুরে আঞ্চলিক এয়ারলাইন্স হাব গড়তে তোড়জোড়

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ২৬ অক্টোবর ২০১৯

  সৈয়দপুরে আঞ্চলিক এয়ারলাইন্স হাব গড়তে তোড়জোড়

আজাদ সুলায়মান ॥ বদলে যাচ্ছে উত্তরাঞ্চলের সৈয়দপুরের চেহারা। বর্তমান বিমানবন্দরকে দেশের পঞ্চম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে উন্নীত করা হচ্ছে। সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে ব্যাপক তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সৈয়দপুরেই আঞ্চলিক এয়ারলাইন্সের হাব গড়ার পরিকল্পনায় অবকাঠামোগত কাজের প্রাথমিক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বর্তমান বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করতে প্রয়োজন আরও ৯ শতাধিক একর জমির। এজন্য সৈয়দপুর ও দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বেলাইচন্ডীতে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। বিমানবন্দরে রানওয়ে সম্প্রসারণের জন্য ৯১২ একর জমি অধিগ্রহণের আওতায় দিনাজপুর ও নীলফামারীর বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এ জমি অধিগ্রহণ করা হবে। বর্তমান বিমানবন্দরের দুই পাশে সম্প্রসারণ করা হবে আন্তর্জাতিক প্রকল্প। ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে তৈরি করা হচ্ছে এ বিমানবন্দর। ভারতের সঙ্গে এ সংক্রান্ত ৩৬০ মিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে। অর্থাৎ গত এক বছর ধরে এ প্রকল্প নিয়ে অনেক অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছে সিভিল এভিয়েশন। প্রকল্পের প্রারম্ভিক ভিত্তি ডিপিপি চূড়ান্ত করা হয়েছে। সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট মাহবুব আলী বলেন, আমাদের টার্গেট আগামী এক বছরের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে অবশ্যই শুভ উদ্বোধন করা হবে। কাজ শেষ করতে হয়ত বছর তিনেকের মতো লাগতে পারে। অর্থাৎ বর্তমান সরকারের মেয়াদ থাকতেই কাজ শেষ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। বর্তমান সরকার উন্নয়নের মহাসড়কে সৈয়দপুরকে যুক্ত করে গোটা উত্তরাঞ্চলে আধুনিকতার ছোয়ায় নবরূপ দিতে বদ্ধপরিকর। বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মহিবুল হক জানিয়েছেন, এ ধরনের প্রকল্পের প্রধান ও প্রথম কাজ হচ্ছে জমি অধিগ্রহণ। সে কাজটি যাতে এলাকাবাসীর স্বতস্ফূর্ত, সর্বসম্মতি, নিয়মনীতি, স্বচ্ছতা ও দ্রুততার সঙ্গে করা যায় সেজন্য নীলফামারীতে জরুরী বৈঠক ডাকা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে নীলফামারী গেছে বিমান প্রতিমন্ত্রীসহ সিভিল এভিয়েশনের উর্র্ধতন কর্তাদের একটি দল। তারা দিনাজপুর ও নীলফামারীর সব সংসদ সদস্যদের উপস্থিতিতে দ্রুততম সময়ে ভূমি অধিগ্রহণসহ একটি মহাসড়ক ডাইভার্ট করার মতো জটিল ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন। মূলত এ বিমানবন্দর সম্প্রসারণ করতে হলে একটি মহাসড়ককে অন্যদিকে চালিত করতে হবে। মন্ত্রণালয় চাইছে স্থানীয় এমপিরাই এ মহাসড়ক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিক। মহাসড়কটির বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের স্বতঃস্ফূর্ততা সমঝোতা ও সম্মতি হওয়ায় এখন আর কোন প্রতিবন্ধকতা রইল না। এ অবস্থায় আগামী ছয় মাসের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ হয়ে গেলে দরপত্র আহ্বান ও অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষ করতে এক বছর লেগে যাবে। অর্থাৎ যে কোন মূল্যে আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই সৈয়দপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের শুভ উদ্বোধন করা হবে। এটি সম্পন্ন হলে সৈয়দপুরসহ গোটা উত্তরাঞ্চলে ঘটবে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন। এ সম্পর্কে সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান জানান, ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে সৈয়দপুরের তাৎপর্য অনেক। ভারতের সেভেন সিস্টার্স ছাড়াও নেপাল, ভুটান, সিকিম, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মধ্যকার বিমান চলাচল হাব গড়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা থেকেই সৈয়দপুরে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। সিভিল এভিয়েশনের তথ্যমতে, শত সমস্যার মাঝে বর্তমানে প্রতিদিন ঢাকা থেকে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের অন্তত ১৫ ফ্লাইট এখানে চলাচল করে। সব ফ্লাইট ভরা থাকে। টিকেট নিয়ে হয় কাড়াকাড়ি। উত্তরাঞ্চলের বাণিজ্যিক রাজধানীর দিকেই ক্রমবিকাশ ঘটছে সৈয়দপুরে। বর্তমানে ১৩৬ একর জমির ওপর গড়ে উঠেছে সৈয়দপুর অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর। চারদিকে রয়েছে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু প্রতিষ্ঠান। বিদ্যমান বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করতে প্রাথমিক পর্যায়ে আরও ৯১২ একর জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে নীলফামারীতে ৫৪৯ একর ও দিনাজপুরে ৩৬৩ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন এ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইকাও) মান অনুযায়ী ন্যূনতম হলেও এজন্য হাজার একর জমি প্রয়োজন। এটা মাথায় রেখেই ন্যূনতম হিসেবে আপাতত এই জমি অধিগ্রহণের বন্দ্যোবস্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে- বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে কোন উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ভূমি সংগ্রহ করাটা বড় চ্যালেঞ্জের। কেউ জমি ছাড়তে চায় না। এ বাস্তবতায় সরকার ভূমির প্রকৃত দামের চেয়ে তিনগুণ দাম দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় মানুষ এখন কিছুটা নমনীয়। এরপরও ভূমি অধিগ্রহণ সব সময়েই জটিল, সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল কাজ। এসব জটিল ইস্যু কত সহজে সম্পন্ন করা যায় সেজন্য বৃহস্পতিবার নীলফামারী ও দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যতীত জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, স্থানীয় সাংসদ ও সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সচিব মহিবুল হক, বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান ও প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামীসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তি। মূলত এ বৈঠকেই এ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের ত্বরান্বিত করার চূড়ান্ত কৌশল বের করার পাশাপাশি দ্রুততম সময়ে কাজ শেষ করার বিষয়ে আলোচনা হয়। এ প্রকল্পে কমপক্ষে ১৫ হাজার কোটি টাকা নির্মাণ ব্যয় হতে পারে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানায়, এ বিমানবন্দরের জমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে যাতে স্থানীয় জনমনে কোন ধরনের ক্ষোভ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা না দেয় সেজন্য মন্ত্রণালয় অত্যন্ত সর্তক ও সংযত রয়েছে। উন্নয়ন করতে গিয়ে যাতে আড়িয়াল বিলের মতো পরিস্থিতি না হয় সেদিকে সর্বাগ্রে স্থানীয় মানুষের মতামতকেই সর্বোচ্চ সম্মান ও মূল্যায়ন করার কৌশল নেয়া হয়েছে। সৈয়দপুরে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৈরি হলে এখানকার জীবনযাত্রার মান কতটা বদলে যাবে তা ফোকাস করার মূল দায়িত্ব স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের। জনগণ যাতে উন্নয়নের স্বার্থে তাদের জমি স্বতঃস্ফূর্তভাবে দিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়ায় সেভাবেই অধিগ্রহণের কাজ সম্পন্ন করা হবে। প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামী এ বিষয়ে বলেন, সাধারণত একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে যেসব ফেসিলিটিজ ও অবকাঠামো আবশ্যক তার সবই থাকবে এখানে। চূড়ান্ত নক্সায় সাড়ে ১০ হাজার ফুট দীর্ঘ একটি রানওয়ে রাখা হয়েছে। রয়েছে ট্যাক্সিওয়ে, এপ্রন, যাত্রী টার্মিনাল, কার্গো ভবন, কন্ট্রোল টাওয়ার,পাওয়ার হাউস, পাম্প স্টেশন, ফায়ার স্টেশন, প্রশাসনিক ভবন, রাডার স্টেশন, পার্কিং জোন ও এপ্রোচ রোড। প্রাথমিকভাবে এখানে তৈরি করা হবে ৪টি বোর্ডিং ব্রিজ, পরে সেটা আরও বাড়ানোর সুযোগ থাকবে। বেল্টও থাকবে সমপরিমাণ। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ভূমি অধিগ্রহণর পরও আর কিছু জটিলতা নিরসন করতে হবে। যেমন বিমানবন্দর সম্প্রসারণ করতে হলে মহাসড়কের একটা অংশ অন্যদিকে ডাইভার্ট করতে হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল বিমানবন্দরের ভেতরে রেখে তার ওপর দিয়ে রাস্তা যাবে, নাকি সরাসরি তা অন্যদিক বিকল্পে করতে হবে তা নির্ধারণ করতে হবে। এলাকাবাসীর মতে, সৈয়দপুর বিমানবন্দর সম্প্রসারণের প্রথম কাজ হিসেবে ৯১২ একর জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু এরইমধ্যে অধিক লাভের আশায় এক শ্রেণীর মানুষ রাতারাতি ঘরবাড়ি, খামার, বনায়ন করছেন। নতুন ঘরবাড়ি তৈরির হিড়িক পড়েছে। এখন চলছে অবস্থান সম্পর্কিত ফিল্ডবুক তৈরির কাজ। এ অবস্থায় ঘোষণা দেয়া হয়েছে, অধিগ্রহণের আওতায় থাকা জমিগুলো যে অবস্থায় রয়েছে সে অবস্থাতেই থাকবে। কিন্তু কে শোনে কার কথা? জমির মালিকরা অধিক লাভের আশায় বেসুমার ঘরবাড়ি তৈরি করছেন। গড়ে উঠছে পশুপাখির খামার, পুকুর ও বনায়ন। দেশের পঞ্চম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জন্য সৈয়দপুর ও দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বেলাইচ-ীতে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। বর্তমান বিমানবন্দর সম্প্রসারণের জন্য ৯১২ একর জমি অধিগ্রহণের আওতায় এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে সৈয়দপুর উপজেলার ৫৩৪ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি, সরকারী জমি ৬০ একর, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৯ একর, সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৬ একর, সৈয়দপুর সেনানিবাসের প্রায় ১৪ একর ও খাস জমি ১৩ একর। এছাড়াও বেলাইচ-ী ইউনিয়নের ৩১৭ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণের আওতায় পড়েছে। জমি কোথায় কী স্থাপনা রয়েছে, এর অবস্থান নির্ণয়ে ফিল্ডবুক তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শাহিনুর আলমের তত্ত্বাবধানে চলছে সার্ভে কার্যক্রম। ইতোমধ্যে আওতাভুক্ত জমি যে অবস্থায় আছে, তা নিয়ে সন্নিবেশিত এলাকায় গতমাসে মাইকিং করা হয়েছে, যাতে এসব জমিতে নতুন করে স্থাপনা নির্মাণ, পুকুর খনন, গাছপালা রোপণ করা না হয়। এরপরও আওতাভুক্ত বাড়াইশালপাড়া, পশ্চিমপাড়া, পার্বতীপুরের বেলাইচ-ীতে গড়ে উঠছে শত শত বাড়িঘর, বনায়নও হচ্ছে। কেউ কেউ পশুর খামার, দইয়ের কারখানা ইত্যাদি তৈরি করছেন। অবকাঠামোগুলো দেখে মনে হয় এসব গত একমাসে তৈরি। মূলত অধিগ্রহণের জমিতে পাকা ঘরবাড়ি অন্যান্য স্থাপনা থাকলে ক্ষতিগ্রস্তরা পাবেন দ্বিগুণ অর্থ এই আশায় ওইসব করা হচ্ছে। পুকুর গাছপালার জন্য ক্ষতিগ্রস্তরা আলাদা টাকা পাবেন। এ সুযোগটাই নিতে চাচ্ছেন এলাকাবাসী। ফিল্ডবুক তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন সৈয়দপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) পরিমল সরকার। তিনি জানান, আমরা মাইকিং প্রচার করেছি। আওতাভুক্ত জমি যে অবস্থায় রয়েছে সেভাবেই থাকবে। এর ওপর আমরা আর্থিক মূল্যায়ন করব। কোনক্রমে নতুন তৈরি বাড়িঘর স্থাপনা তালিকাভুক্ত হবে না। এ নিয়ে আমরা জমির মালিকদের নিরুৎসাহিত করছি। ফিল্ডবুক তৈরির সময় আমরা পর্যবেক্ষণ করছি কেউ নতুন ঘরবাড়ি বানাচ্ছেন কিনা। নতুন বাড়িঘরে আমরা চিহ্ন এঁকে দিচ্ছি। বিল্ডবুক তৈরির পর একটি প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সৈয়দপুরের এস এম গোলাম কিবরিয়া জানান, নতুন গড়ে ওঠা ঘরবাড়ি স্থাপনা, পুকুর গাছপালা কোনক্রমে অধিগ্রহণের আওতাভুক্ত হবে না। নতুন বাড়িঘর তৈরি করে ভূমি অধিগ্রহণের নামে আর্থিক সুবিধা নেয়ার যে পায়তারা চলছে সে বিষয়ে সচিব মহিবুল হক বলেন, আমাদের কানে এ ধরনের কিছু অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি স্থানীয় জেলা প্রশাসন দেখছে। তারাই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে। প্রয়োজন হলে আমরাও দেখব। সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।
×