ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হুকুমের সরকার চায় কিছু কিছু দূতাবাস ॥ জয়

প্রকাশিত: ১০:৪৬, ২৬ অক্টোবর ২০১৯

  হুকুমের সরকার চায় কিছু কিছু  দূতাবাস ॥  জয়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশে অবস্থিত কিছু কিছু দূতাবাস তাদের হুকুম মতো বাংলাদেশ চলবে, এমন সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। যখনই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, ভালোর দিকে যাচ্ছে, তখনই কিছু কিছু শ্রেণী, কিছু কিছু দূতাবাস ষড়যন্ত্র করে। ‘ইয়াং বাংলা উইথ সজীব ওয়াজেদ’ অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের উত্তরে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, বাংলাদেশের ‘ফ্রিডম অব স্পিচ’ নিয়ে বেশকিছু দূতাবাস দেখছি কথা বলেছে। এই সুনির্দিষ্ট কিছু দূতাবাস সব সময় আমাদের সবক দেয়ার চেষ্টা করে। উল্লেখ্য জয়ের এ সংক্রান্ত খবরের একটি অংশ ২২ অক্টোবর প্রকাশ পেলেও আরেকটি অংশ শুক্রবার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। যখনই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, ভালোর দিকে যাচ্ছে, তখনই কিছু কিছু শ্রেণী, কিছু কিছু দূতাবাস (ষড়যন্ত্র করে)। আমি দেশের কথা বলব না, শুধুমাত্র এ দেশে থাকা তাদের দূতাবাস এখানে বসে ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করে। বিশেষত মার্কিন দূতাবাস। আর তাদের উদ্দেশ্য কি? তারা কিন্তু একটি শক্তিশালী সরকার চায় না। তারা চায়, একটা ছোটখাটো সরকার থাকবে, যাদের তারা হুকুম করবে আর সেই সরকার দূতাবাসের হুকুমে চলবে। তিনি মার্কিন দূতাবাসে গিয়ে তার অভিজ্ঞতার কথা উপস্থিত তরুণদের জানাতে গিয়ে বলেন, যখনই মার্কিন দূতাবাসের কোন অনুষ্ঠানে আমি গিয়েছি, ওখানে জামায়াত এবং যুদ্ধাপরাধী থাকবেই। তারা (মার্কিন দূতাবাস) দাওয়াত করবেই। আর তারা এদের সঙ্গে মিলে সব সময় ষড়যন্ত্র করতে থাকে। আমরা কি চাই এমন একটা নতজানু সরকার, যারা দূতাবাসের হুকুম অনুসারে চলবে, এমন সরকার কি আমরা চাই? অনুষ্ঠানে তরুণদের দেশ গঠনে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা শোনেন সজীব ওয়াজেদ। সেখানে থাকা তরুণদের দেশ গঠনের পথে সৃষ্টি হওয়া বিভিন্ন বাঁধা এবং সেই বাঁধা উৎরে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে পরামর্শও গ্রহণ করেন তিনি। এর আগে চলতি বছর ২১ জুলাই নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে পেজে দেয়া এক পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে দেয়া প্রিয়া সাহার একটি বক্তব্য প্রসঙ্গে সজীব ওয়াজেদ বলেন, গত নির্বাচনের পর আমি একটু বিরতি নেই, তাই এই পেজেও কম পোস্ট করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার প্রেক্ষিতে আমার কিছু বলা উচিত বলে মনে হলো। আপনারা হয়ত দেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া সাহার ভয়ঙ্কর মিথ্যা দাবি। উনি বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে নাকি ৩ কোটি ৭০ লাখ ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ‘গায়েব’ বা ‘গুম’ হয়ে গেছেন। প্রায় ৪ কোটির কাছাকাছি যে সংখ্যাটি উনি বলছেন তা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যার ১০ গুণেরও বেশি, আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহতদের সংখ্যার কাছাকাছি। এত মানুষ গুম হলো সবার অজান্তে? ৩ কোটি ৭০ লাখ মানুষ গায়েব হলো কোন তথ্য প্রমাণ ছাড়াই? প্রিয়া সাহাকে আমেরিকায় পাঠানো হয় বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাসের মনোনয়নে। অনেক সমালোচনার পর তারা একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তাতে তারা বলেন, তারা অংশগ্রহণকারীদের কথাবার্তার ওপর কোন বিধিনিষেধ আরোপ করেন না। কিন্তু যখন তাদের একজন মনোনীত অংশগ্রহণকারী তাদেরই রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে কোন ভয়ঙ্কর মিথ্যা বক্তব্য দিলেন, তাদের উচিত ছিল তাৎক্ষণিকভাবে তার প্রতিবাদ জানানো, যা তারা করেননি। তারা জেনেশুনেই প্রিয়া সাহাকে বাছাই করে, কারণ তারা জানত উনি এই ধরনের ভয়ঙ্কর মিথ্যা মন্তব্য করবেন। এই ধরনের কাজের পেছনে একটাই কারণ চিন্তা করা যায় ঃ মানবিকতার দোহাই দিয়ে আমাদের এই অঞ্চলে সেনা অভিযানের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা। মনে রাখা ভাল, কয়েকদিন আগেই মার্কিন এক কংগ্রেসম্যান একটি বক্তব্যে বলেছিলেন, বাংলাদেশের মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য দখল করা উচিত। মার্কিন দূতাবাস যে আওয়ামী লীগ বিরোধী তা নতুন কিছু নয়। তাদের সকল অনুষ্ঠানেই জামায়াত নেতাকর্মীরা ও যুদ্ধাপরাধীরা নিয়মিত আমন্ত্রিত হতেন। প্রিয়া সাহার মিথ্যা বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে তাদের সরাসরি আধিপত্য বিস্তারের ষড়যন্ত্র পরিষ্কারভাবেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সৌভাগ্যবশত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার সরকার অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার নীতিতে বিশ্বাসী নন। তারা এই ধরনের ভয়ঙ্কর মিথ্যা দাবি বিশ্বাস করার মতোন বোকাও নন।
×