ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

‘কলেজছাত্রী লিজার আত্মহননের ঘটনায় পুলিশের তথ্যে গরমিল’

প্রকাশিত: ০৮:২২, ২৬ অক্টোবর ২০১৯

 ‘কলেজছাত্রী লিজার আত্মহননের ঘটনায় পুলিশের তথ্যে গরমিল’

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহীতে থানা থেকে শরীরে আগুন দিয়ে কলেজছাত্রী লিজা রহমানের আত্মহননের ঘটনায় পুলিশ ও ভিকটিম সার্পোট সেন্টারের দেয়া তথ্য-উপাত্তে গরমিল পেয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের গঠিত তদন্ত কমিটি। তদন্ত কার্যক্রমে অংশ হিসেবে রাজশাহীতে এসে শুক্রবার সকালে স্থানীয় রেস্টহাউসে সাংবাদিকদের এ তথ্য দিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান মানবাধিকার কমিশনের অভিযোগ ও তদন্ত শাখার পরিচালক আল মাহমুদ ফাইজুল কবির। তিনি জানান, আগামী রবিবার কমিশনে প্রতিবেদন জমা দেবে তদন্ত কমিটি। কমিটি পুলিশ ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার, লিজার পরিবার, স্বামী শাখাওয়াতের পরিবার ও দুইজনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘিরে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। শাহমখদুম থানা পুলিশ ও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার কর্তৃক তদন্ত কমিশনকে দেয়া তথ্য, ভিডিও ফুটেজ, এজাহার ও সাধারণ ডায়েরির তথ্য এবং স্বাক্ষীর দেয়া তথ্যে গরমিল রয়েছে জানিয়ে আল মাহমুদ ফাইজুল কবির বলেন, সাধারণ ডায়েরিতে লিজার শ্বশুর-শাশুড়ির নাম থাকলেও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার তথ্য দিয়েছিল লিজা তার শ্বশুর-শাশুড়ির নাম জানতেই বাইরে গিয়েছিল এবং বাইরে গিয়ে শরীরে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। এখানে তথ্যের গরমিল রয়েছে। তদন্ত প্রধান জানান, লিজা রহমান মৃত্যুর আগে তার ভাইকে একটি ভিডিও সাক্ষাতকার দিয়েছিল। যেখানে দাবি করা হয়েছে পুলিশ মামলা নিতে নারাজ ছিল। মামলা না নেয়ায় সে আত্মহত্যা করেছে। এর আগে কলেজছাত্রী লিজা রহমানের আত্মহননের ঘটনায় পুলিশের কোন গাফিলতি খুঁজে পায়নি পুলিশের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি। তবে ঘটনাটি থানায় রেকর্ড না রাখায় শাহমখদুম থানার ওসিকে কৈফিয়ত তলবের সুপারিশ করা হয় তদন্ত প্রতিবেদনে। আরএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম এ্যান্ড অপারেশন) সালমা বেগমের নেতৃত্বে গঠিত দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি বিষয়টি তদন্ত করেন। তদন্ত শেষে গত ৩ অক্টোবর পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবিরের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেন। প্রসঙ্গত, গত ২৮ সেপ্টেম্বর নগরীর শাহ মখদুম থানায় স্বামী সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করতে যান রাজশাহী সরকারী মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী লিজা রহমান। তবে হঠাৎ থানা থেকে বের হয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। গায়ে আগুনের পর আশেপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। আগুনে লিজার শ্বাসনালীসহ শরীরের প্রায় ৬৪ অংশ পুড়ে যায়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। ২ অক্টোবর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান লিজা।
×