মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ রাজশাহীবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত রাজশাহী-আব্দুলপুর রেলপথ ডাবল লাইন হচ্ছে। ইতোমধ্যে রেলপথ মন্ত্রণালয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের ডিও লেটার প্রদানের পরিপ্রেক্ষিতে এ উদ্যোগ নিচ্ছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। আব্দুলপুর-রাজশাহী পর্যন্ত সিঙ্গেল ব্রডগেজ রেল লাইনটি ব্রডগেজ ডাবল লাইনে উন্নীত করার জন্য ফিজিবিলিটি স্টাডির (সম্ভাব্যতা যাচাই) অনুমোদনের চিঠি রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। এমন উদ্যোগে রাজশাহী আরও এক ধাপ উন্নয়নের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয় রাসিক মেয়রের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের কর্মকর্তারা এই তথ্য জানিয়েছেন। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সূত্র জানায়, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে আব্দুলপুর থেকে রাজশাহী পর্যন্ত সিঙ্গেল ব্রডগেজ রেললাইনটি ব্রডগেজ ডাবল লাইনে উন্নীতকরণসহ মোট ১১টি প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডির জন্য অনুমোদনের চিঠি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। এটি অনুমোদন হলে ফিজিবিলিটি স্টাডির কাজ শুরু হবে।
রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমরা রাজশাহী-ঢাকা বিরতিহীন ট্রেন চেয়েছিলাম, সেটা পেয়েছি। এখন রাজশাহী-কলকাতা ট্রেন সার্ভিস চাই। আশা করছি এটিও হয়ে যাবে। এছাড়া রাজশাহী-আব্দুলপুর রেললাইনটি ব্রডগেজ ডাবল লাইনে উন্নীতকরণ প্রয়োজন। ডাবল লাইন নির্মিত হলে রাজশাহীর সঙ্গে সরাসরি ভারত ছাড়াও চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বগুড়া, রংপুর ও লালমনিরহাট সাবলীল ট্রেন যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এতে করে যাত্রীসেবা বৃদ্ধির পাশাপাশি মালামাল পরিবহন বৃদ্ধি পাবে। এতে অর্থনীতির চাকা আরও বেগবান হবে।
এর আগে মেয়রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সভায় বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ, সিওসিএস শহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিঞা উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, গত ১১ জুলাই আব্দুলপুর থেকে রাজশাহী পর্যন্ত সিঙ্গেল ব্রডগেজ রেললাইনটি ডাবল লাইনে উন্নীত করার জন্য রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন এমপি বরাবর ডিও লেটার দেন রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন। ডিও লেটার প্রদানের সঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী।
এর আগে দীর্ঘদিন ধরে এ বিষয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে রাজশাহীবাসী। রাজশাহী থেকে ডুয়েল মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণ করে সারাদেশের সঙ্গে রেলযোগাযোগ স্থাপন ও যাত্রীসেবার মানোন্নয়নের দাবিতে সোচ্চার ছিল রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ। রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, সর্বশেষ দুই বছর আগেও রেলমন্ত্রী বরাবর নানা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি ও আবেদন করা হয়েছে। তবে বারবার রাজশাহীবাসীকে আশ্বাস দেয়া হলেও বছরের পর বছর ধরে বঞ্চিত করা হয়েছে। তকে এবার আলোর ঈঙ্গিত দেখা যাচ্ছে উল্লেখ করে জামাত খান বলেন, রাজশাহীতে পশ্চিমাঞ্চল রেলের সদর দফতর। বরেন্দ্র এলাকার আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট হতে পারে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান। পশ্চিমাঞ্চলের রেলপথের সংস্কার এবং নতুন কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বরেন্দ্র এলাকায় গড়ে উঠতে পারে অর্থনীতির দার ও খুলে যেতে পারে সম্ভাবনাময় শিল্পাঞ্চল। রাজশাহী থেকে সরাসরি মিটারগেজ রেল পথের মাধ্যমে চট্টগ্রামের সঙ্গে রেল যোগাযোগ চালু করলে রাজশাহীতে পোশাক শিল্পের দ্রুত বিকাশ করা সম্ভব। মিটার গেজ রেলপথের মাধ্যমে এখান থেকে কন্টেনারের মাধ্যমে পণ্য পরিবহনের ব্যবস্থা করা হলে পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা রাজশাহীতে কারখানা গড়ে তুলতে পারবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: