ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সম্পত্তি হাতিয়ে ছেলে লাপাত্তা ॥ বাবা-মায়ের ঠাঁই গোয়ালঘরে

প্রকাশিত: ০৮:২০, ২৬ অক্টোবর ২০১৯

 সম্পত্তি হাতিয়ে ছেলে লাপাত্তা ॥ বাবা-মায়ের ঠাঁই গোয়ালঘরে

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা, পটুয়াখালী ॥ পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কাউখালী গ্রামে পাঁচ ছেলে-মেয়ের বাবা ৭০ বছরের শুকুর দেওয়ান ও মা ৬৫ বছরের শহুরা বেগমের শেষ পর্যন্ত ঠাঁই মিলেছে পার্শ্ববর্তী বাড়ির গোয়ালঘরে। সেখানে আশপাশের লোকজন দয়াপরবশ হয়ে মাঝে মধ্যে কিছু খাবার দিয়ে যান, তা দিয়েই কাটছে তাদের দিন। ছেলে-মেয়েদের কারও ঘরেই এ বৃদ্ধ বয়সে জায়গা মেলেনি তাদের। বরং একমাত্র ছেলে জায়গা জমি বিক্রি করে লাপাত্তা হয়ে গেছে। সম্পত্তি না থাকায় মেয়েরাও কেউ এগিয়ে আসছে না। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে কাটছে তাদের এ মানবেতর জীবন। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে বিষয়টি তুলতেই তারা তৎপর হয়ে উঠছেন। আশ্বাস দিয়েছেন প্রতিকারের। গোয়ালঘরে ঠাঁই নেয়া শুকুর দেওয়ান জানান, পেশায় তিনি ছিলেন কৃষক। নিজের বাড়ি ছিল। জায়গা জমি ছিল। এমনকি গরু ছাগলের খামারও ছিল। তাদের জীবন সুখ শান্তিতেই কাটছিল। তার মর্জিনা, রোকেয়া, খোদেজা ও সালমা নামের চার মেয়ে রয়েছে। মেয়েদের উপযুক্ত বয়সে ভাল বর দেখে বিয়ে দিয়েছেন। তারা এখন সবাই পরের ঘরে। একমাত্র ছেলে হোসেন দেওয়ান (৩০) ও ছেলের বউসহ তাদের চারজনের সংসারও বেশ ভালভাবে কেটে যাচ্ছিল। বেশ কয়েক মাস আগে তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ছেলে চিকিৎসার কথা বলে পার্শ্ববর্তী গলাচিপা উপজেলা সদরে নিয়ে আসেন। সেখানে তাকে ভুল বুঝিয়ে সমস্ত জমিজমা ছেলে তার নিজের নামে দলিল করে নেয়। পরবর্তী সময়ে ছেলে হোসেন দেওয়ান গোপনে বাড়িঘরসহ সেসব সম্পত্তি চাচা তাজু দেওয়ানের কাছে বিক্রি করে এলাকা ছেড়ে লাপাত্তা হয়ে যায়। শহুরা বেগম জানান, বাড়িঘরসহ জমিজমার মালিক হয়েই দেবর তাজু দেওয়ান তাদের দুইজন অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এরপর থেকে তারা গোয়ালঘরে ঠাঁই নিয়েছেন। শুকুর দেওয়ান ও শহুরা বেগম বলেন, আশপাশের লোকজন আমাদের দয়া করে খাবার দিয়ে যায়। তা দিয়েই আমাদের দিন কাটছে। শুকুর দেওয়ান বলেন, আমাগো জমিজমা পোলায় (ছেলে) আমারে ভুল বুঝাইয়া আমার ভাই তাজুর কাছে বেইছা দিছে। এ্যাহন পোলায় দ্যাশ ছাইররা চইল্লা গ্যাছে। তাজু আমারে বাড়ি দিয়া নামাইয়া দিছে। আমি কোন দিশাবিশা না পাইয়া গরুর ঘরে উঠছি। আশপাশের কিছু ভাল মানুষ আছে তারা আমাগোরে খাওন দিয়া যায়।
×