ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পাবনায় সেতু আছে সড়ক নেই ॥ জনদুর্ভোগ

প্রকাশিত: ০৮:১৯, ২৬ অক্টোবর ২০১৯

পাবনায় সেতু আছে সড়ক  নেই ॥ জনদুর্ভোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা, ২৫ অক্টোবর ॥ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে সুজানগর উপজেলার হাটখালি ইউনিয়নের সাগতা গ্রামে ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রিজ নির্মাণ করা হলেও ২ বছরেও সংযোগ সড়ক না করায় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী জানিয়েছে, দেশের ২য় বৃহত্তম বিল গাজনার পানি প্রবাহের জন্য সাগতা গ্রামের মধ্য দিয়ে সংযোগ সড়ক ছাড়াই ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। সড়কবিহীন এ ব্রিজটি নির্মাণের কারণে বর্তমানে জনসাধারণকে নানা বিড়ম্বনার মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। তবে সংযোগ সড়ক ছাড়া এ ব্রিজ পাড় হয়ে কামালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে যাতায়াতকারী ছাত্রছাত্রীদের সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সংযোগ সড়ক নির্মাণে বার বার জানানো হলেও তার কোন প্রতিকার হচ্ছে না। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হাকিম শেখ জানান, ৩৩ লাখ টাকার ব্রিজটি নির্মাণ করা হলেও জনসাধারণের কোন উপকারে আসছে না। সংযোগ সড়ক ছাড়া স্থানীয় কৃষকদের ফসল পারাপারের নানাবিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সংযোগ সড়ক নির্মাণে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রেজাউল করিমকে বার বার জানানো হলেও তিনি কোন প্রতিকার করছেন না। এ বিষয়ে প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, ব্রিজটি তার সময়ে নির্মিত হয়নি তাই তিনি কিছু বলতে পারছেন না। এ বিষয়ে এলাকাবাসী জানিয়েছে, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রেজাউল করিমের সময়ই ব্রিজটি নির্মিত হলেও তিনি এখন তা অস্বীকার করে দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছেন। সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন চলাচলের এ জনদুর্ভোগ নিরসনে ব্রিজটিতে সংযোগ সড়ক নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী। বাউফল নিজস্ব সংবাদদাতা বাউফল থেকে জানান, বাউফল উপজেলার কনকদিয়া বাজার থেকে কালিশুরি কুমারখালী পর্যন্ত কানেকটিং সড়কে দুইটি আরসিসির সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় সেতু দুইটি জনগণের কোন উপকারে আসছে না। জানা গেছে, বরগুনা ও পটুয়াখালী গ্রামীণ সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে কনকদিয়া, সূর্যমনি ও কালিশুরির ইউনিয়নের কুমারখালী সংযোগ সড়কে সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে ৩টি সেতু নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। এমএম বিল্ডার্স নামের একটি ঠিকাদারি ওই ৩টি সেতুর নির্মাণ কাজ পায়। এর মধ্যে ঠিকাদার দুইটি সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করলেও অপর সেতুটির নির্মাণ কাজ এখন পর্যন্ত শেষ করেননি। কেবল সেতুটির পাইল পর্যন্ত করা হয়েছে। অপরদিকে যে সেতু দুইটির নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়েছে, তার দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। ফলে সেতু দ্ইুটি জনগণের কোন উপকারে আসছে না। কনকদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী রুমানা বলেন, ‘সেতু দুইটির এ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মিত না হওয়ায় জনগণ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। ওই সড়কে কোন যানবাহন চলাচল করছে না’। কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহিন হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, সূর্যমনি, কনকদিয়া ও কালিশুরি ইউনিয়নের প্রায় ৪০-৫০ হাজার মানুষের এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। এর মধ্যে দুইটি সেতুর এ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ না করায় যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এলাকার মানুষ। অপর সেতুটির নির্মাণ কাজ প্রায় দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। দ্রুত দুইটি সেতুর সংযোগ সড়কসহ আরেকটি সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা না হলে আন্তঃইউনিয়ন যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়বে। এই অঞ্চলের জনসাধারণ মানুষসহ শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগের শিকার হবেন। এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা খবির সিকদার বলেন, ‘মাটি না পাওয়া’ সংযোগ সড়ক করতে বিলম্ব হচ্ছে। আর অন্য সেতুটি নির্মাণে স্থানীয়রা বাধা দেয়ায় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে’। বাউফল উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার মোঃ জহিরুল ইসলাম বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে দুটি সেতুর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অন্য সেতুটি নির্মাণ কাজ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় তা বন্ধ রয়েছে। তবে দ্রুত সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। বর্ষার কারণে মাটি না পাওয়ায় অন্য দ্ইুটি সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা যায়নি।
×