ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিজের নিতম্ব বড় করে অনুতপ্ত সোফি এলিস

প্রকাশিত: ০২:২১, ২৫ অক্টোবর ২০১৯

নিজের নিতম্ব বড় করে অনুতপ্ত সোফি এলিস

অনলাইন ডেস্ক ॥ সোফি এলিস যখন নিজের নিতম্ব বড় করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তখন তার বয়স ছিলো ২০ বছর। তিনি একজন নরওয়েজিয়ান ব্লগার ও টিভি ব্যক্তিত্ব যিনি খুব চিকন আর খাটো হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তার মতে তিনি আসলে শরীরের এই অংশটায় পরিবর্তন এনে একটু উঁচু করতে চেয়েছিলেন। আর এটা করতে সার্জারি সম্পর্কে জানাটাও খুব একটা কঠিন ছিল না। ইন্সটগ্রামে এমন অনেক প্রমোশনাল তথ্য ছিল যেখানে সার্জারি কোথায় করবে, সার্জন কে হতে পারেন এবং এর প্রক্রিয়া সব কিছুই ছিল। তিনি তুরস্কে একটি জায়গা পেয়েও গেলেন। কিন্তু মূল্য সম্পর্কে কিছু জানাননি যদিও বলেছেন দর কষাকষির সুযোগ আছে। "সত্যি বলতে ধারনার চেয়েও সস্তা ছিল। এর আরও মূল্য হওয়া উচিত ছিল," তিনি রেডিও ওয়ানকে বলছিলেন। "তারা একটি বিলাসী স্বপ্ন দেখিয়েছে। প্যাকেজে সার্জারি পরবর্তী পরিচর্যা, একজন প্রাইভেট ড্রাইভার , বাসায় মেডিক্যাল সহকারী ও এবং যে হাসপাতাল সেটি খুবই পরিচ্ছন্ন। আমার কাছেই এটাকেই সবচেয়ে ভালো মনে হল"। কিন্তু নিতম্ব ইমপ্ল্যান্ট বা সার্জারি করে নিতম্বের আকার বড় করার পাঁচ বছর পর এসে তিনি এখন এ থেকে মুক্তি চান। বাড়তি অংশ সরিয়ে ফেলতে চাইছেন তিনি। সমস্যা শুরু হলো যখন তিনি বাড়ি ফিরেন। দুটি টিভি শো ও পডকাস্ট উপস্থাপন করে অত্যন্ত পরিচিত মুখ তিনি এবং ইন্সটগ্রামে তার ফলোয়ার প্রায় পাঁচ লাখ। তিনি বলছেন সার্জারি নিয়ে কমেন্ট আসতেই থাকে। মানুষের ধারনা এটা খুবই অস্বাভাবিক ও শরীরের অন্য অংশের সাথে এটি ম্যাচ করেনি। "এখন মনে হচ্ছে আমার যা থাকার কথা সত্যিকার অর্থে তা নেই। সবকিছু খুব দ্রুততার সাথে হয়েছে। আমি বলতে পারি যে খুব চিন্তা ভাবনা করে এটি হয়নি"। ২৪ বছর বয়সী এই তরুণী সিলিকন ইমপ্ল্যান্ট বেছে নিয়েছিলেন অর্থাৎ শরীরের অন্য অংশ থেকে ফ্যাট নিয়ে নিতম্বে স্থাপন করা হয়েছিল। সোফি বলছেন তিনি আগে খুব একটা চিন্তিত ছিলেননা এমনকি কসমেটিক সার্জারির জন্য বিদেশে যাওয়ার আগে সতর্কতা সত্ত্বেও। নিতম্ব বাড়ানোর সার্জারি নিয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক নেতিবাচক আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে ব্রাজিলিয়ান বাট লিফট বা বিবিএল পদ্ধতিতে নিতম্ব বাড়াতে তুরস্কে যাওয়া দুজন ব্রিটিশ নারীর মৃত্যুর পর। ব্রিটিশ প্লাস্টিক সার্জনদের একটি এসোসিয়েশন বলছে রোগী মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। সোফি বলছেন সার্জারির পর তার খুব ব্যথা হতো। এমন হবে তার ধারণায় ছিল কিন্তু এখন তিনি সত্যিই সমালোচনার মুখে পড়েছেন। তিনি বলছেন তিনি এখন বুঝতে পারছেন যে তার দারুণ সুন্দর একটা শরীর আছে এবং সংযোজিত বিষয়গুলো সরিয়ে ফেলতে চান তিনি। ওয়েবসাইট ঘেঁটে একজন ভালো সার্জনেরও খোঁজ পেয়েছেন তিনি। কিন্তু এখানে একটি জটিলতা আছে। "আমি সব সিলিকন পুরোপুরি সরিয়ে ফেলতে পারবো না। বরং কিছু ছোট সিলিকন প্রতিস্থাপন করতে হবে"। এবং নতুন করে আলোচনায় তিনি জানতে পারছেন যে আগে যেই সিলিকন তিনি ব্যবহার করেছেন নিতম্বের আকার বাড়াতে সেটি আসলে ব্যবহার হয় স্তনের আকার বাড়াতে। সোফি বলছেন তিনি একজন ভালো সার্জনের মাধ্যমে নতুন করে শুরু করবেন। "আমি দুঃখিত নই তবে আমি যেটা করেছিলাম সেটি আমার সাথে মানায়নি"। তবে তার বড় দুখ হলো তিনি এ বিষয়ে যথেষ্ট জানার চেষ্টা করেননি। "এটা নিয়ে খোলামেলা বলাটা গুরুত্বপূর্ণ যাতে করে আর কেউ একই ফাঁদে না পড়ে যাতে আমি পড়েছিলাম"। "আমি চাইনা কেউ এটি করুন। আর আমি যদি এক বা দুজন বোনকে সহায়তা করতে পারি সেটিই বড় কিছু। আমার পরামর্শ হবে ভালো করে জানুন। তাড়াহুড়া করে কিছু করবেননা"। "কোন কিছু সস্তা হলেও হয়তো সেটি যথেষ্ট ভালো নাও হতে পারে"। ব্রিটিশ প্লাস্টিক সার্জনদের একটি এসোসিয়েশন প্রেসিডেন্ট সাইমন হুইদে বলছেন ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সস্তায় কসমেটিক সার্জারির জন্য প্রলুব্ধ হচ্ছেন এবং এর প্রবণতা বাড়ছে। "ফলে বিদেশে এ ধরণের সার্জারি বিপজ্জনক হতে পারে। কারণ শুধু শারীরিক নয় মানসিক বিষয়ও এতে জড়িত"। তাই তারা এই 'কসমেটিক সার্জারি ট্যুরিজম' সম্পর্কে সবাইকে সচেতনও করছেন। সূত্র : বিবিসি বাংলা
×