ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জয় পেয়েছে চেলসিও

চ্যাম্পিয়ন্স লীগে লিভারপুলের জয়

প্রকাশিত: ১২:৩৫, ২৫ অক্টোবর ২০১৯

চ্যাম্পিয়ন্স লীগে লিভারপুলের জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগে জয়ের স্বাদ পেয়েছে লিভারপুল, নেপোলি এবং চেলসি। বুধবার টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছে কেআরসি জেঙ্ককে। ‘ই’ গ্রুপের আরেক ম্যাচে ইতালিয়ান ক্লাব নেপোলি ৩-২ ব্যবধানে হারিয়েছে আরবি সালজবার্গকে। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে ‘এইচ’ গ্রুপের দল চেলসি এদিন ১-০ গোলে পরাজিত করেছে হল্যান্ডের ক্লাব আয়াক্সকে। তবে তিন জায়ান্টের জয়ের দিনে ড্র করেছে ভ্যালেন্সিয়া। লিলের মাঠে এদিন ১-১ গোলে ড্র করে তারা। ইনজুরির কারণে গত মৌসুমের প্রায় পুরোটা সময়ই মাঠের বাইরে ছিলেন অক্সালেড-চেম্বারলেইন। এবারের মৌসুমেও তার উপস্থিতি ছিল অনিয়মিত। রক্ষণভাগে ট্রেন্ট আলেক্সান্দার-আর্নল্ড ও জোয়েল মাটিপের স্থানে বুধবার মূল একাদশে জায়গা করে নেন অক্সালেড-চেম্বারলেইন, ডিয়ান লোভরেন ও নেবি কেইটা। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে অনুপস্থিত থাকার পর দলে ফিরেন মোহাম্মদ সালাহও। জেঙ্কের বিপক্ষে লিভারপুলের প্রথম সুযোগটিই দারুণভাবে কাজে লাগান অক্সালেড-চেম্বারলেইন। দুই মিনিটের মধ্যে ২৫ গজ দূর থেকে ডান পায়ের জোরালো শটে জেঙ্ক গোলরক্ষক গিটান কাউচকেকে পরাস্ত করেন তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের গ্রুপপর্বে ঘরের মাঠে বেলজিয়ান চ্যাম্পিয়নদের রেকর্ড বেশ ভাল। যে কারণে এক গোলে পিছিয়ে থেকেও আক্রমণাত্মক খেলাই খেলতে থাকে জেঙ্ক। ২০১১-১২ এবং ২০০২-০৩ মৌসুমে তারা শেষ পাঁচটি হোম ম্যাচেই ড্র করেছিল। লিভারপুলের দক্ষ রক্ষণভাগের বিপরীতে অবশ্য জেঙ্ক পেরে ওঠেনি। অধিনায়ক এমবোয়ানা এ্যালি সামাত্তা অবশ্য দ্রুতই ম্যাচে ফিরে আসার দারুণ এক সুযোগ নষ্ট করেন। এরপর পল ওনুচু ও জাপান জাতীয় দলের স্ট্রাইকার জুনিয়া ইতো জেঙ্ককে হতাশ করেন। ৩০ মিনিটে ইতোর ক্রস থেকে সামাত্তার হেডে সমতায় ফিরেছিল জেঙ্ক। কিন্তু ভিএআর প্রযুক্তি ইতোর অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল করে দেয়। ফলে ১ গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় ইংলিশ ক্লাবটি। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য আরও আক্রমণাত্মক খেলে জার্গেন ক্লপের দল। ৫৭ মিনিটে রবার্তো ফিরমিনোর সহায়তায় অক্সালেড-চেম্বারলেইন ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে লিভারপুলের এটা ২০০তম গোল। তবে এরপর আরও দুইবার গোল উৎসব করেছে অলরেডরা। ৭৭ মিনিটে সালাহ মানেকে দিয়ে তৃতীয় গোলটি করানোর ১০ মিনিট পর একটি গোল করেন মিসরীয় ফরোয়ার্ড। আগামী মাসে এ্যানফিল্ডে আবারও একে অপরের মুখোমুখি হবে এই দুই দল। তবে এই ম্যাচ জয়ের পর দারুণ খুশি লিভারপুলের কোচ। বিশেষ করে চেম্বারলেইনের পারফর্মেন্সে। ম্যাচ শেষে জার্গেন ক্লপ বলেন, ‘অবশ্যই এটা তারজন্য অসাধারণ মুহূর্ত। দলে এর আগেও অক্সের পারফর্মেন্স এমনই ছিল। গোলগুলো অসাধারণ হয়েছে, তবে সবমিলিয়ে পুরো দলই আরও ভাল করতে পারত। তারপরও আমি সন্তুষ্ট।’ দলের আরেক অনিয়মিত খেলোয়াড় এ্যাডাম লালনাও প্রিমিয়ার লীগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে গোল করে দলকে মূল্যবান এক পয়েন্ট উপহার দিয়েছিলেন। সে প্রসঙ্গ টেনে ক্লপ বলেন, ‘এই গোলগুলো সত্যিকার অর্থেই গুরুত্বপূর্ণ। গত রবিবার এ্যাডাম গোল করেছে, আর এখন ওক্স। তাদের দলে ফিরে পাওয়াটাও স্বস্তির।’ ২৬ বছর বয়সী অক্সালেড-চেম্বারলেইন বলেছেন, ‘এই টুর্নামেন্টে খেলতে পারাটা বিশেষ কিছু। গত বছর খেলোয়াড়রা যা করেছে তা ছিল অনন্য। বেঞ্চে বসে সেটা উপভোগ করার আনন্দও অনেক বেশি। ঐ ম্যাচের পর এই প্রথমবারের মতো আমি মূল একাদশে ফিরেছি। ম্যাচে ফিরেই দুই গোল পাওয়াটা বোনাস।’ এদিকে মিচি বাতশুইর শেষ মুহূর্তের গোলে চেলসি ১-০ গোলে পরাজিত করেছে আয়াক্সকে। সেই সঙ্গে ব্লুজরা প্রমাণ করেছে তাদের তরুণ দলটি ইউরোপিয়ান আসরে যে কোন চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। এই জয়ে তিন ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে ওঠার পাশাপাশি নকআউট পর্বের পথও অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলছে ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের দল। আমাস্টারডামের ইয়োহান ক্রুইফ এ্যারিনাতে ম্যাচের ৮৬ মিনিটে গোল করে বদলি খেলোয়াড় বাতশুই চেলসিকে মূল্যবান তিন পয়েন্ট উপহার দেন। গতবারের সেমিফাইনালিস্ট আয়াক্সও সমান ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘এইচ’ গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। লিলির সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে অবশ্য পয়েন্ট হারিয়েছে ভ্যালেন্সিয়া। তৃতীয় স্থানে থাকা ভ্যালেন্সিয়ার সংগ্রহে আছে ৪ পয়েন্ট। জেঙ্কের বিপক্ষে জয়ের পর আনন্দে উদ্বেলিত ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ড। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই অনুভূতি সত্যিই অনেক বড়। আমরা যেভাবে খেলেছি তা মনে রাখার মতো। সবসময়ই আমি তাদের কাছ থেকে এটাই আশাকরি। এখনও অনেক কিছু করার বাকি আছে। তবে এই ম্যাচ থেকে সামনে এগিয়ে যাবার পথ তৈরি হলো।’
×