ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সবার দৃষ্টি আজ ব্রুনো ও নাথানিয়েলের দিকে

প্রকাশিত: ১২:৩৪, ২৪ অক্টোবর ২০১৯

সবার দৃষ্টি আজ ব্রুনো ও নাথানিয়েলের দিকে

জাহিদুল আলম জয়, চট্টগ্রাম থেকে ॥ শঙ্কার কালো মেঘ দূর করে জমজমাট হয়ে উঠেছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবল। দেশের ফুটবলের অন্যতম সেরা শক্তি ঢাকা আবাহনী লিমিটেড শেষ মুহূর্তে না খেললেও সেই ঘাটতি দুর্দান্তভাবে পূরণ করেছে ভারতীয় ক্লাব গোকুলাম কেরালা। আয়োজকরা দাবি করছেন, বরং ধানমন্ডির জায়ান্টদের চেয়ে গোকুলামই বেশি ভাল। ভারতের ডুরাল্ড কাপ চ্যাম্পিয়নদের আসা নিয়ে যখন শঙ্কা বিরাজ করছিল তখন চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও টুর্নামেন্ট কমিটির প্রধান সমন্বয়ক তরফদার রুহুল আমিন বলেছিলেন, ‘এমনও তো হতে পারে, ঢাকা আবাহনীর বদলে যারা আসছে তারা আরও বেশি ভাল। সেটা হলে টুর্নামেন্ট আরও জমে উঠবে।’ মঙ্গলবার রাতে গোকুলাম কেরালার প্রথম ম্যাচের পর তরফদারসহ আয়োজক কমিটির সবার মুখে চওড়া হাসি। বাংলাদেশের সেরা দল বসুন্ধরা কিংসকে যেভাবে উড়িয়ে দিয়েছে ভারতের ডুরাল্ড কাপের চ্যাম্পিয়নরা তাতে মুগ্ধতা বনে গেছেন সবাই। ভারতীয় ক্লাবটির শারীরিক সক্ষমতা ও গতির কাছে রীতিমতো নাস্তানাবুদ হয়েছেন বাংলার রাজাদের বিপলু, রবিউল, ইয়াসিন, ইব্রাহিমরা। সবচেয়ে বড় দিক ছিল, বসুন্ধরার খেলোয়াড়দের ঠিকমতো গোলমুখে শটই নিতে দেননি কোচ ফার্নান্ডো সান্টিয়াগোর ছাত্ররা। পরশু আরেক ম্যাচে মালয়েশিয়ান ক্লাব টেরেঙ্গানু এফসি চোখ ধাঁধানো পারফর্মেন্স প্রদর্শন করে ৫-৩ গোলে হারিয়েছে ভারতের আই লীগের চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই সিটি এফসিকে। আট গোলের ম্যাচটি দেখে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেছেন দর্শকরা। তবে এক পর্যায়ে ২-১ গোলে পিছিয়ে পড়ার পরও পাঁচ গোল করা টেরেঙ্গানুকে বেশি ভোট দিচ্ছেন সবাই। দলটির গোছানো ফুটবল সবার দৃষ্টি কেড়েছে। বিশেষ করে ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত জাপানী ফুটবলার ব্রুনো সুজুকি সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন। দলের পাঁচ গোলের চারটিই করেন ২৯ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। বাকি গোলটিও হয় তার পাস থেকে। ‘বি’ গ্রুপের শুরুর ম্যাচ দু’টি দেখার পর আয়োজকদের সব দুশ্চিন্তা উবে গেছে। ভিআইপি গ্যালারিতে ম্যাচ দু’টি দেখার সময় সারাক্ষণই হাততালিতে ব্যস্ত ছিলেন তারা। আয়োজক কমিটির একজন কর্মকতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘শেষ মুহূর্তে আমাদের অনেক ধকল সইতে হয়েছে। গোকুলাম কেরালা না আসলে সবাই আমাদের সমালোচনায় ব্যস্ত থাকতো। এখন দেখেন, ঢাকা আবাহনী না খেলায় কোন প্রভাব পড়েনি টুর্নামেন্টে। বরং তাদের বিকল্প হিসেবে গোকুলাম কেরালা অনেক ভাল দল। সে প্রমাণ তারা প্রথম ম্যাচেই রেখেছে।’ নিজেদের প্রথম ম্যাচে দৃষ্টিনন্দন পারফর্মেন্স প্রদর্শন করা গোকুলাম কেরালা ও টেরেঙ্গানু এফসি আজ ‘বি’ গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে। ম্যাচটিতে যারা জিতবে তাদের সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যেতে পারে। এমন আবহের ম্যাচে সব দৃষ্টি থাকছে টেরেঙ্গানুর ফরোয়ার্ড ব্রুনো সুজুকি ও গোকুলামের মিডফিল্ডার নাথানিয়েল জুডো গার্সিয়ার দিকে। কিংসদের ৩-১ গোলে হারানো ম্যাচের পুরো সময়ই আলো ছড়ান গোকুলামের ত্রিনিদাদ এ্যান্ড টোবাগোর মিডফিল্ডার নাথানিয়েল। ম্যাচে তিনি এক গোল করা ছাড়াও হেনরি কিসেকে দিয়ে করান বাকি দুই গোল। অর্থাৎ দলের প্রতিটি গোলেই অবদান রাখেন। তেমনি চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে টেরেঙ্গানুর পাঁচ গোলের চারটি ব্রুনো নিজে তো করেনই; অপরটিও করান সতীর্থকে দিয়ে। নিজ নিজ দলের হয়ে প্রথম ম্যাচে সবাইকে ছাড়িয়ে যাওয়া এই দুই সুপারস্টার আজ চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছেন। ম্যাচটি ব্রুনো ও নাথানিয়েল দু’জনের জন্যই চ্যালেঞ্জের। দুই শক্তিধর প্রতিপক্ষের লড়াইয়ে কে দলের ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেন সেদিকে দৃষ্টি ফুটবলপ্রেমীদের। চেন্নাইয়ের জালে মুড়িমুড়কির মতো গোল করা ব্রুনো বলেন, ‘আই লীগের চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে জয় চাট্টিখানি কথা নয়। সতীর্থরা আমাকে বলের যোগান দিতে পেরেছে বলেই গোলগুলো করতে পেরেছি।’ টুর্নামেন্টের কত গোল করতে চান এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সামনে কোন লক্ষ্য রাখতে চাই না আমি। যত বেশি সম্ভব গোল করে দলকে সহায়তা করতে চাই।’ কলিনড্রেস, ইব্রাহিমদের থমকে দেয়া নাথানিয়েল টেরেঙ্গানুর বিরুদ্ধেও মাঝমাঠের দখল নিতে চান।
×