ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

টিসিকে বিদায় করে দিল মোহনবাগান

প্রকাশিত: ১২:৩০, ২৪ অক্টোবর ২০১৯

টিসিকে বিদায় করে দিল মোহনবাগান

স্পোর্টস রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে ॥ টানা দুই হারে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবলের গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস ক্লাবের। বুধবার বিকেলে চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে টিসি স্পোর্টসকে ২-০ গোলে হারিয়েছে ভারতের কলকাতার মোহনবাগান এ্যাথলেটিক ক্লাব। এটি টুর্নামেন্টে প্রথম জয় ১৩০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির। এই জয়ে সেমিফাইনালে খেলার সম্ভাবনা জিইয়ে রাখলো কোচ জোশে এ্যান্টোনিও ভিচুনার দল। নিজেদের প্রথম ম্যাচে লাওসের ক্লাব ইয়ং এলিফ্যান্টের বিরুদ্ধে এগিয়ে যেয়েও ২-১ গোলে হারে মোহনবাগান। আর টিসি স্পোর্টস টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে ৪-১ গোলে হেরে বিধ্বস্ত হয়। আসরে টিকে থাকতে তাই গতকালের ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না কোন দলেরই। এতে সফল হয়েছে মোহনবাগান। অনেকটা একতরফা খেলে মহামূল্যবান জয় তুলে নিয়েছে কলকাতার অন্যতম সেরা ও জনপ্রিয় ক্লাবটি। অন্যদিকে টিসি স্পোর্টসের খেলা পাড়া-মহল্লার দলের মতো বলে মন্তব্য করেছেন দর্শকরা। দু’টি ম্যাচে তাদের খেলা দেখে মনে হয়েছে টুর্নামেন্টের লোভনীয় প্রাইজমানি নেয়ার জন্যই শুধু তারা খেলতে এসেছে। টানা দুই হারে গ্রুপপর্বেই বিদায় নিশ্চিত হওয়া দলটি শুক্রবার নিজেদের শেষ ম্যাচে খেলবে ইয়ং এলিফ্যান্টের বিরুদ্ধে। ম্যাচের শুরু থেকেই বর্তমান চ্যাম্পিয়ন টিসি স্পোর্টসের দুর্গে আক্রমণ শানাতে থাকে জয়ের জন্য ক্ষুধার্ত থাকা মোহনবাগান। অন্যদিকে তেমন ভাল সুযোগ সৃষ্টি করতে না পারা মালদ্বীপের ক্লাব টিসি মাঝে মধ্যে পাল্টা আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করে। ম্যাচের প্রথম মিনিটেই গোলের সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে মোহনবাগান। ডি বক্সের মধ্যে টিসি গোলরক্ষক ইব্রাহিমকে একা পেয়েও তাকে পরাস্ত করতে পারেননি স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড সালভাদর পেরেজ মার্টিনেজ। তৃতীয় মিনিটে সংঘবদ্ধ আক্রমণে গোল করে এগিয়ে যায় কলকাতার পরাশক্তিরা। ডি বক্সের মাথা থেকে সালভাদর পাস দেন লালরামচুলোভাকে। এই ডিফেন্ডারের কাছ থেকে বল পেয়ে সহজেই প্লেসিং শটে গোল করেন আরেক ডিফেন্ডার ড্যানিয়েল নিকোলাস সাইপ্রাস (১-০)। ২০ মিনিটে ডি বক্সের মাথা থেকে মিডফিল্ডার শিল্টন সিডনির নেয়া দূরপাল্লার শট সাইডপোস্টে লেগে ফিরে আসলে গোলবঞ্চিত হয় মোহনবাগান। পাঁচ মিনিট পর বামপ্রান্ত দিয়ে এগিয়ে যেয়ে ফরোয়ার্ড সুহাইর বক্সের মধ্যে মাপা ক্রস দেন। আর দুর্দান্ত হেড করেন আরেক ফরোয়ার্ড সালভাদর। কিন্তু ভিচুনার শিষ্যদের এই প্রচেষ্টা দক্ষতার সঙ্গে রুখে দেন টিসি গোলরক্ষক ইব্রাহিম নাদিম। এক গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় মোহনবাগান। বিরতির পরও আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে ভারতীয় ক্লাবটি। কিন্তু একের পর এক সহজ সুযোগ নষ্ট করছিল তারা। অবশেষে ম্যাচের ৬৩ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে জয় নিশ্চিত করে মোহনবাগান। ডি বক্সে জটলার মধ্য থেকে জোরালো শটে গোলটি করেন ফরোয়ার্ড সালভাদর পেরেজ (২-০)। ম্যাচের ৬৭ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে ফ্রিকিক পায় মোহনবাগান। আগের ম্যাচে পেনাল্টি মিস করা মিডফিল্ডার জোসেবা বেইটার নেয়া শট বারপোস্টের অনেক ওপর দিয়ে বাইরে যায়। দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে যেন ঘুম ভাঙ্গে টিসির। গোল পরিশোধের লক্ষ্যে খেলতে থাকে আক্রমণাত্মক। কিন্তু কয়েকটি সহজ সুযোগ নষ্ট করায় গোল পায়নি কোচ আফিউ মোহাম্মদ হামিদের দল। ম্যাচের ৮২ মিনিটে ব্যবধান কমানোর সবচেয়ে সহজ সুযোগ হাতছাড়া করে দ্বীপদেশের ক্লাবটি। ডি বক্সের মধ্যে থেকে ফরোয়ার্ড বিমল ঘারটিমাগারের নেয়া জোরালো শট অসাধারণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন মোহনবাগান গোলরক্ষক দেবজিত মজুমদার। শেষ পর্যন্ত করুণ হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় চ্যাম্পিয়ন টিসিকে।
×