ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চৌগাছায় সদ্য খননকৃত ভৈরব নদ দখল করে মাছচাষ

প্রকাশিত: ০৯:৩৫, ২৩ অক্টোবর ২০১৯

চৌগাছায় সদ্য খননকৃত ভৈরব নদ দখল করে মাছচাষ

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ চৌগাছা উপজেলায় ভৈরব নদের ১২ কিলোমিটার অংশে খননকাজ শেষ হয়েছে। এরমধ্যে নদের প্রায় অর্ধ কিলোমিটার দখল করে মাছচাষ করা হচ্ছে। মাছচাষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবিসিডি কলেজের শিক্ষক ওহিদুল ইসলাম ইকবাল। তাকে সহায়তা করছেন তার অন্য চার ভাই। নদের চৌগাছা উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের তাহেরপুর বুড়ি বটতলা কালভার্ট থেকে লক্ষীপাশা কালভার্ট পর্যন্ত ৪৫০ মিটার এলাকায় প্রায় চার মাস ধরে রুই, কাতলা, সিলভার কার্প, তেলাপিয়া মাছ চাষ করা হচ্ছে। তিনি উপজেলার এবিসিডি কলেজের শরীর চর্চা শিক্ষক। তার বড় ভাই অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য সহিদুল ইসলাম আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে নদে মাছচাষের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ওহিদুল ইসলাম ইকবাল ও শহিদুল ইসলাম দু’ভাই। ওহিদুল ইসলাম ইকবাল বলেন, না, আমরা তো কোন মাছচাষ করছি না। আমাদের এদিকে কোন ঝামেলা নেই। আপনাকে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে। তাহেরপুর রিসোর্ট সেতু থেকে প্রায় ৯০০ মিটার দূরে নদের ওপর বুড়ি বটতলা কালভার্ট। সেখান থেকে ৪৫০ মিটার দক্ষিণে লক্ষীপাশা কালভার্ট। দুই কালভার্টের অংশে নদ খনন না করায় বাঁধের মতো হয়ে পুকুরের ন্যায় হয়ে আছে। নদের ওই অংশে মাছচাষ করা হচ্ছে। নদের পাশে সবজি ক্ষেত পরিচর্যা করছিলেন তাহেরপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তার। তিনি বলেন, নদে মাছ চাষ করছেন ইকবাল ও তার ভাইয়েরা। গ্রামের লোকজনও আছে তাদের সঙ্গে। এজন্য কাউকে নদের ওই অংশে নামতে দেয়া হয় না। যে মাছ ছাড়া হয়েছে তার ওজন প্রায় ৪০০-৫০০ গ্রাম হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, পাশের অংশের পানি দেখলেই বুঝতে পারবেন ওই অংশে মাছ চাষ হচ্ছে। পাশের অংশে পাট জাগ (পঁচাতে) দেয়ায় পানির রং কালচে হয়ে গেছে। কিন্তু মাছ চাষ করা অংশে কাউকে নামতেও দেয়া হয়নি পাট জাগ দিতেও দেয়া হয়নি। এ কারণে পানির রং পরিষ্কার। নদীর পানির মতোই রয়েছে। গ্রামের কয়েকজন পাট জাগ দিতে চাইলেও তাদের দিতে দেয়া হয়নি। জানা গেছে, উপজেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা কয়েকদিন আগে স্থানীয় এমপি মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব) নাসির উদ্দিনের উপস্থিতিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নদ দখল করে মাছ চাষকারীদের একটি তালিকা দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সংসদ সদস্যকে আশ্বস্ত করেছেন; তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন। কাউকে নদ দখল করে রাখতে দেয়া হবে না। তবে এখনও এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় পাশের অন্য খ-গুলোতেও মাছ চাষের পরিকল্পনা করছে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। হাকিমপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর (আরাজি সুলতানপুর-দেবীপুর) ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, এক পার্টি নদে মাছ ছেড়ে দিয়েছে। প্রায় চার মাস আগে নদ খননের পর গ্রামের ইকবাল প্রথম নদে মাছ ছাড়েন। এতে গ্রামের লোকজন গ্যাঞ্জাম শুরু করে। হাকিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদুল হাসান বলেন, শুনেছি ইকবাল ও শহিদুলের নেতৃত্বে আরাজি সুলতানপুুুর গ্রামের মানুষ নদে মাছচাষ করছেন। চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, নদের জায়গা দখল করে মাছচাষের কোন সুযোগ নেই। সরেজমিনে দেখে সেই রকম কিছু হয়ে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী বলেন, নদ দখল করে মাছ চাষের বিষয়টি আমি শুনেছি।
×