ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসে র‌্যালি আলোচনা সভা

প্রকাশিত: ০৯:২৯, ২৩ অক্টোবর ২০১৯

জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসে র‌্যালি আলোচনা সভা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনার অঙ্গীকারের মধ্যে নানা আয়োজনে পালিত হলো জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০১৯। দিবসটি উপলক্ষে সরকারী উদ্যোগে দেশব্যাপী নেয়া হয় নানা কর্মসূচী। সকালে মানিক মিয়া এভিনিউ এলাকায় দিবসটি উপলক্ষে র‌্যালি বের করা হয়। এরপর রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। র‌্যালিতে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়, বিআরটিএ, হাইওয়ে পুলিশ, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন অংশ নেয়। এতে বক্তারা, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ট্রাফিক আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। পাশাপাশি দ্রুত সময়ে সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কঠোর আইন ছাড়া পরিবহন সেক্টরে অরাজগতা নিরসন হবে না। সেইসঙ্গে নিয়মিত নজরদারি বাড়াতে হবে। নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এই সেক্টরের মাফিয়া চক্রকে। অন্যথায় কোন অবস্থাতেই সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে না। সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সমিতিকে তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে বলে মন্তব্য করে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, মালিক-শ্রমিকরা দুর্ঘটনা রোধে দায়িত্ব না নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে না। তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর করার দাবি জানিয়ে বলেন, আইনটি অনেক আগেই কার্যকর করা সম্ভব ছিল। শুধুমাত্র মালিক-শ্রমিক নেতাদের কারণে তা হচ্ছে না। যারা এখন পরিবহন সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ধর্মঘট করেন তাদের উদ্দেশ্য একটাই আইনের শাস্তি কমানো। ‘জীবনের আগে জীবিকা নয়, সড়ক দুর্ঘটনা আর নয়’ প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে র‌্যালিটি মানিক মিয়া সড়ক প্রদক্ষিণ করে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় গিয়ে শেষ হয়। ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সড়কে আমাদের সবাইকে সচেতনভাবে চলতে হবে। সবাইকে বুঝতে হবে সড়ক কোন আনন্দের জায়গা নয়। ৬০ কিলোমিটার গতিবেগে একটি গাড়ি চালানো একসঙ্গে ২০টি বন্দুক চালানোর সমান ভয়াবহ।’ সড়ককে নিরাপদ করতে সকলের করণীয় প্রসঙ্গে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের এই নেতা বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেরও যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। পাশাপাশি আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। তবেই আমাদের সড়ক নিরাপদ হবে। এ সময় হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান বলেন, মানুষের যাতায়াতের জন্য সরকার সড়ক-মহাসড়ক করেছে। কিন্তু তাতে দেখা যাচ্ছে, সড়কের পাশেও মানুষ বাজার বসাচ্ছে। তখন কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটছে। এখন মানুষ সচেতন হচ্ছে, দুর্ঘটনাও কিন্তু কমে আসছে। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে মালিক-শ্রমিক এবং যাত্রী সবাইকে সচেতন হতে হবে। সবার মধ্যে সচেতনতা এলে দুর্ঘটনাও কমে আসবে। ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, জীবন আমার, সেই জীবনের দায়িত্বও আমার। আমার জীবনে দায়িত্ব যদি আমি না নিই তাহলে আমাকে অন্য কেউ বাঁচাতে আসবে না। এ সময় উপস্থিত ছিলেনÑ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলামসহ অন্যরা। বিকেল চারটায় রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনালসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সড়ক নিরাপত্তা সংক্রান্ত ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়। এর পাশাপাশি পরিবহন মালিক, চালক, যাত্রী ও পথচারীদের সচেতন করার লক্ষ্যে বিতরণ করা হয় লিফলেট, পোস্টার ও স্টিকার। এছাড়া গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিটিভিসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা ও বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচারের উদ্যোগ নেয়া হয়। দেশের সব জেলা ও উপজেলায় এ দিবসে শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও সড়ক নিরাপত্তা সংক্রান্ত ভিডিও চিত্র প্রদর্শনের কর্মসূচী পালিত হয়েছে। র‌্যালিতে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। তারা প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও ফেস্টুনে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সচেতনতামূল বিভিন্ন স্লোগান প্রদর্শন করেন। এতে লেখা ছিল, গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বলবেন না/ ট্রাফিক আইন মেনে চলুন/ হ্যালমেট ছাড়া মোটরসাইকেল চালাবেন না/ ঘুম ঘুম চোখে গাড়ি চালাবেন না/ বৈধ হালনাগাদ কাগজপত্র ছাড়া গাড়ি চালাবেন না/ বাড়তি গতিতে গাড়ি চালাবেন না/ ইচ্ছেমতো রাস্তা পারাপার হবেন না/ ওভারট্রেকিং করবেন না।
×